শিক্ষার্থীরা বইয়ের বোঝার বদলে আইপ্যাড নিয়ে স্কুলে যাবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

 

সিলেট প্রতিনিধি,

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন আশা প্রকাশ করে বলেছেন, ভবিষ্যতে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা বইয়ের বোঝার বদলে একটি করে আইপ্যাড নিয়ে স্কুলে যাবে। আজ শনিবার সিলেটে একাধিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী একথা বলেন।

এসব অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সম্পদ হচ্ছে মানব সম্পদ। আমরা খুব ভাগ্যবান যে, ৪৯ ভাগ জনগণ ২৫ বছরের নিচে যারা কর্মক্ষম। এই বিপুল সংখ্যক জনগণকে উন্নত প্রশিক্ষণ ও গুণগত শিক্ষার মাধ্যমে সত্যিকারের সম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে আমরা প্রযুক্তির ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মকে প্রতিযোগিতাময় বিশ্বে নিজেদের টিকে থাকতে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে আধুনিক প্রযুক্তি ঘরে পৌঁছে দিচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার। স্কুলের শিক্ষার্থীদের বইয়ের বোঝা কমানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর বদলে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর হাতে একটি করে আইপ্যাড তুলে দেওয়া হবে। এর মাধ্যমে সারাবিশ্বের যত ভাল জিনিস আছে তা তারা সহজে পেয়ে যাবে।

১.৭ বিলিয়ন ডলারের ডিজিটাল ল্যাব প্রকল্প, যার ৯৫ভাগ নিজস্ব অর্থায়নে হবে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আশা করছি, সব ছেলেমেয়ে প্রযুক্তি বিদ্যায় পারদর্শী হয়ে নিজেরা চাকুরি তৈরি করবে, চাকুরির জন্য কারো দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে না। সারা পৃথিবী হবে তাদের কর্মক্ষেত্র। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটি কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিয়েছেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের ৩ লাখ ৫৬ হাজার ক্লাসরুমে স্মার্ট বোর্ড চালু করা হবে। এখনও সব জায়গায় ডিজিটাল ল্যাব হয়নি। প্রত্যেক স্কুলে ডিজিটাল ল্যাব দেওয়া হবে যাতে ছেলেমেয়েরা প্রযুক্তিতে পারদর্শী হয়। পুঁথিগত শিক্ষা নয়, আনন্দ-খেলার মাঝে বিশ্বের জ্ঞান অর্জন করতে হবে। যাতে তাদের মনে অনুসন্ধিৎসু চিন্তা-ভাবনা সৃষ্টি হয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সরকার ডিজিটাল ল্যাব, আইপ্যাড ও বিদ্যালয়ের ভবন তৈরি করে দেবে। এগুলো উপকরণ। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদেরকে এর যথোপযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। তবেই একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের কর্ণধার হতে পারবে।
ড. মোমেন আরও বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হলে প্রকল্পের কাজ যথাসময়ে শেষ করতে হবে। এতে খরচ কমবে এবং সময় বাঁচবে। অন্যথায়, খরচ বাড়বে এবং মানুষের হয়রানি হবে। দেশের উন্নয়ন বেগবান করতে এসব বিষয়ে খেয়াল রাখা সাংবাদিকদের দায়িত্ব বলেও মনে করেন তিনি।

মন্ত্রী বেলা আড়াইটায় সিলেট প্রেসক্লাবে বার্ষিক পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এর আগে দুপুরে তিনি সিলেট কিশোরী মোহন উচ্চ বিদ্যালয়, সকালে দেশসেরা সিলেট সরকারি কিন্ডারগার্টেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সভা এবং সিলেট পুলিশ লাইন উচ্চ বিদ্যালয়ে ই-লার্নিং বিষয়ক মেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকরামুল কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রস্তাবিত সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মুর্শেদ আহমদ চৌধুরী, সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহিউদ্দিন সেলিম। এছাড়া অনুষ্ঠানে সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

কিশোরী মোহন স্কুলের অনুষ্ঠানে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফয়জুল আনোয়ার ও স্কুলের প্রধান শিক্ষক গৌরা ঘোষ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর সিলেট অঞ্চলের পরিচালক অধ্যাপক মো. হারুনুর রশীদের সভাপতিত্বে পুলিশ লাইন স্কুলের অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মো. মাহামুদ-উল হক, সিলেটের পুলিশ কমিশনার গোলাম কিবরিয়া, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচারক অধ্যাপক ড. সামসুন নাহার, ইথিক্স অ্যাডভান্সড টেকনোলজি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ মুবিন খান।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *