নিজের দোষ ধামাচাপা দিতে ‘বিটিআরসিকে’ দায় গ্রামীণ-রবির
আসাদুজ্জামান,
লিগ্যাল ভয়েস ডেস্ক : সরকারি তহবিলে পাওনা টাকা দেয়নি, আর এর ফলে গ্রামীণ ফোন আর রবির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। কমিয়ে দেওয়া হয়েছে ব্যান্ডউইথ। টেলিফোন অপারেটর দুটি তার গ্রাহকদের এই খবরটি জানিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছে। তবে সেখানে যে ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে, তাতে মনে হয়, এই দায় বিটিআরসির, তাদের কিছুই নয়।
বারবার তাগাদা দেয়া সত্ত্বেও নিরীক্ষা (অডিট) আপত্তির বিপুল পরিমান অর্থ বিটিআরসিকে পরিশোধ করতে গড়িমসি করছে গ্রামীণফোন ও রবি। গ্রামীণফোনের কাছে বিটিআরসির পাওনা প্রায় ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা। আর রবির কাছে পাওনা প্রায় ৮৬৭ কোটি টাকা।
দীর্ঘদিন ধরে বিটিআরসি তাদের পাওনা পরিশোধের জন্য অপারেটর দুইটিকে চাপ দিয়ে আসছে। কিন্তু অপারেটর দুটো তাদের লোকসানের কথা বলে পাওনা পরিশোধ করতে টালবাহানা করছে।
এরই প্রেক্ষিতে ৪ জুলাই বিটিআরসি পাঁচটি ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেটে গেটওয়ে (আইআইজি)কে গ্রামীণফোন ও রবির ইন্টারনেট ব্র্যান্ডইউথ সীমিত করার নির্দেশনা দেয়া হয়। বিটিআরসির নির্দেশনা মতে কাজও শুরু করেছে আইআইজি। ফলে ধীর হয়েছে এই অপারেটরের ইন্টারনেটের গতি।
অপারেটরদের কাছ থেকে ইন্টারনেটের গতি কমানোর কারণ ক্ষুদে বার্তার মাধ্যমে জানার পর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অপারেটর দুইটির গ্রাহকরা। আর গ্রাহকদের এই ক্ষোভ বুঝতে পেরে অপারেটর দুটি ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েছে গ্রাহকদের মোবাইল ফোনে।
গ্রামীণফোনের পক্ষ থেকে পাঠানো বার্তায় বলা হয়েছে,‘গ্রামীণফোনের ব্যান্ডউইথ কমাতে সরবরাহকারীদের নির্দেশ দিয়েছে বিটিআরসি। এতে ইন্টারনেট সেবা কিছুটা বিঘ্নিত হতে পারে। এ সমস্যার জন্য আমরা দুঃখিত। সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনা করতে বিটিআরসি-কে অনুরোধ করেছি।’
রবি তার বার্তায় বলেছে, ‘বিআরসি ব্যান্ডইউথ কমাতে সরবরাহকারীদের নির্দেশ দিয়েছে। এতে আমাদের ইন্টারনেট সেবা কিছুটা বিঘ্নিত হতে পারে। সেজন্য আমরা দুঃখিত। সমস্যাটি দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।’
রাষ্ট্রের অর্থ ফাঁকি দিয়ে বিটিআরটিকে দায় দেওয়ার এই বিষয়টি দৃষ্টি এড়ায়নি গ্রাহকদের। মনির জামান নামের গ্রামীণফোনের এক গ্রাহক বলেন, ‘পত্রিকায় পড়েছি গ্রামীণফোনের কাছে পাওনা টাকা না পেয়ে তারা তাদের ব্র্যান্ড উইথ কমিয়ে দিয়েছে। অথচ গ্রামীণফোন ক্ষুদে বার্তায় ব্যান্ডউইথ কমানোর মূল কারণ আড়াল করে বিটিআরসিকে দুষছে।’
নাজমুল শাকিব নামের রবির এক গ্রাহক বলেন, ‘অপারেটরের দেনার দায় কেন সাধারণ গ্রাহকরা বইবে? আমাদের ইন্টারনেটের গতি কেন কমানো হলো। এতে করে তো অপারেটরদের কিছু হলো না। যা ক্ষতি হবার গ্রাহকদের হচ্ছে।’
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বিটিআরসির সিনিয়র সহকারী পরিচালক লিগ্যাল ভয়েসকে বলেন, ‘বিটিআরসি তার পাওনা আদায়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’