ঐতিহাসিক মুজিবনগরকে আন্তর্জাতিকমানের পর্যটন নগরী হিসাবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে: জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী
স্টাফ রিপোর্টার
ঐতিহাসিক মুজিবনগরকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসভিত্তিক আন্তর্জাতিকমানের পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে মেহেরপুরের মুজিবনগরে একটি অত্যাধুনিক কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে।
এরই মধ্যে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে মুজিবনগর সফর করেছেন।
গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে ঢাকাস্থ মেহেরপুর জেলা সমিতি আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানান জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ও বিস্তারিত ইতিহাস জানানোর সব ব্যবস্থা মুজিবনগর কমপ্লেক্সে থাকবে। সেখানে বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের একটি দুর্লভ প্রতিকৃতি থাকবে। একটি দৃষ্টিনন্দন লেক থাকছে এ কমপ্লেক্সে। আর লেকের চারপাশে মুক্তিযুদ্ধ ও মুজিবনগরের ইতিহাস লিপিবদ্ধ থাকবে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত দর্শনার্থীরা লেকের চারপাশে হাঁটার সময় ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায় সম্পর্কে জানতে পারবেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক চলচ্চিত্রগুলো প্রদর্শনের লক্ষ্যে একটি সিনেপ্লেক্সও নির্মাণ করা হবে। লেকে দর্শনার্থীদের জন্য বোটিংয়ের ব্যবস্থাও থাকবে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত দর্শনার্থীরা যাতে কয়েকদিনের জন্য এ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসভিত্তিক পর্যটন নগরীতে সময় কাটাতে পারেন, সেজন্য অবকাশযাপনের জন্য আবাসিক হোটেলও থাকবে। এছাড়া মুজিবনগরে একটি শিশুপার্ক ও রেস্টরুম নির্মাণে আরো প্রায় ৩৭ একর জায়গা অধিগ্রহণ করা হবে। সবশেষে দর্শনার্থীদের জন্য একটি ‘ওথ স্পেস’ থাকবে, যেখানে মুজিবনগর পরিদর্শন শেষে সবাই দেশের স্বাধীনতা রক্ষা এবং দেশ ও জাতির উন্নয়নে শপথ নেবেন।
ফরহাদ হোসেন বলেন, জাতির পিতা ও বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধুর নামে এ একটি জায়গা রয়েছে, যা তার আদর্শ ধারণ করে আজো দাঁড়িয়ে আছে সগর্বে। এখন ঐতিহাসিক মুজিবনগরে প্রতিদিন প্রায় এক হাজার দর্শনার্থী আসেন। নতুন প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হলে প্রতিদিন পাঁচ-সাত হাজার দর্শনার্থী দেশ-বিদেশ থেকে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া মেহেরপুরের আরেকটি ঐতিহাসিক স্থান হলো—আমঝুপির নীলকুঠি। ব্রিটিশদের এ নীলকুঠিতে বহু পর্যটক প্রতিদিন আসে। এটিরও প্রবেশপথে বঙ্গবন্ধুর একটি প্রতিকৃতি নির্মাণ ও নীলকুঠিকেও পর্যটকদের জন্য আরো আকর্ষণীয় করে গড়ে তোলা হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঐতিহাসিক মুজিবনগরসহ অবহেলিত মেহেরপুরের উন্নয়নে বর্তমান সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। মেহেরপুরের সরকারি হাসপাতালকে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গড়ে তোলারও চিন্তা করছে সরকার। এছাড়া মুজিবনগরের সঙ্গে ঢাকার সরাসরি রেল যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে সমীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে। এ প্রকল্পে প্রায় ১ হাজার ৫০ কোটি টাকা ব্যয় হবে।
অনুষ্ঠানে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর পাশাপাশি মেহেরপুর-২ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন এবং পিপিপি কর্তৃপক্ষের সিইও (ভারপ্রাপ্ত সচিব) মুহাম্মদ আলকামা সিদ্দিকীকেও সংবর্ধনা দেয়া হয়।
অ্যাডভোকেট শাহাবুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংবর্ধনা কমিটির আহ্বায়ক তৌফিকা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দাতো একরামুল হক, সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডা. এসএমএ খালেক প্রমুখ।