কোনও বিশ্ববিদ্যালয় সার্টিফিকেট বিক্রির দোকান হতে পারে না: মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান

দেশের অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় মানসম্মত শিক্ষাদানে সক্ষম নয়। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধার অভাব রয়েছে। মনে রাখতে হবে, কোনও বিশ্ববিদ্যালয় সার্টিফিকেট বিক্রির দোকান হতে পারে না।’

রবিবার (৩ মার্চ) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত সিটি ইউনিভার্সিটির তৃতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান এসব কথা বলেন।

অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেন, ‘অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা রয়েছে। অনেকের ভালো গ্রন্থাগারসহ যোগ্য শিক্ষকের অভাব রয়েছে। ফলে শিক্ষার মান কাঙ্খিত স্তরে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। এজন্য আরও আন্তরিকভাবে চেষ্টা করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়কে হতে হবে জ্ঞান সৃষ্টি ও জ্ঞান ধারণের একটি মূল্যবান প্রতিষ্ঠান। নিজেদের স্বার্থেই এসব বিশ্ববিদ্যালয়কে তাদের সব সমস্যার সমাধান করে আদর্শ বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হতে হবে।’

নতুন গ্র্যাজুয়েটদের শুভেচ্ছা জানিয়ে অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেন, ‘একজন আলোকিত মানুষ হয় অসম্প্রদায়িক সত্যানুসন্ধানী, সহনশীল, মানবিক মূল্যবোধের অধিকারী। এর জন্য তাকে জানতে হয় নিজের মাতৃভাষা, ইতিহাস ও ঐতিহ্য, বিশ্বসভ্যতা, দর্শন, মানবজাতির ইতিহাসসহ আরও বিভিন্ন বিষয়। আমি আশা করি, তোমাদের বিশ্ববিদ্যালয় এসব জিনিস তোমাদের শিখিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘শিক্ষা ও জ্ঞান একটি চলমান প্রক্রিয়া। এটি মনে করার কোনও কারণ নেই যে, আজকের এই সমাবর্তনের মধ্যদিয়ে গ্র্যাজুয়েটদের শিক্ষা জীবনের সমাপ্তি ঘটছে। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা জীবন শেষ হতে পারে; কিন্তু বাস্তব জীবনে আসল শিক্ষা শুরু এখন থেকেই।’

গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘তোমাদের স্বপ্ন আর জাতির স্বপ্ন হবে এক। গণতান্ত্রিক ও সন্ত্রাসহীন রাষ্ট্র গড়তে হবে। বর্তমান সরকার শিক্ষাকে অধিক গুরুত্ব দিচ্ছে। সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পূরক হয়ে একে-অপরের সঙ্গে কাজ করতে হবে।’

সিটি ইউনিভার্সিটির সমাবর্তন অনুষ্ঠানে মোট ৩ হাজার ৫২৫ জনকে ডিগ্রি দেওয়া হয়। এর মধ্যে স্নাতক পর্যায়ের তিন হাজার ৬১ জন ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের ৪৭১ জন। সম্মলিত মেধা তালিকায় সেরা তিন জনকে চ্যান্সেলর পদক দেওয়া হয়।

স্বর্ণ পদকপ্রাপ্তরা হচ্ছেন— ইংরেজি বিভাগের ছাত্রী শিরীন শিলা, বিবিএ বিভাগের আমবারিন খান ও টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্রী মোরশেদা খাতুন।

সিটি ইউনিভার্সিটির সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন– উপাচার্য অধ্যাপক শাহ-ই-আলম, ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আলহাজ মকবুল হোসেন। এ ছাড়া, ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য, সিন্ডিকেট সদস্য, একাডেমি কাউন্সিলর, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *