জিএসপি সুবিধা ফিরিয়ে দিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রীর আহ্বান
জিল্লুর রহমান,
ঢাকা, লিগ্যাল ডেস্ক : বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বাংলাদেশকে জিএসপি সুবিধা ফিরিয়ে দেয়ার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি আজ বৃহস্পতিবার প্যানপ্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলের বল রুমে তিন দিনব্যাপী ‘২৬তম ইউএসট্রেড শো-২০১৯’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ আহবান জানান।
আমেরিকান চেম্বার অফ কমার্স ইন বাংলাদেশ (অ্যামচেম) এবং ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস যৌথভাবে ইউএস ট্রেড শো’র আয়োজন করেছে।
আমেরিকান চেম্বার অফ কমার্স ইন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট মো. নূরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, বাংলাদেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি বৃদ্ধি পাচ্ছে উল্লেখ করে টিপু মুন্শী বলেন, ‘বাংলাদেশের তৈরী পোশাক রপ্তানিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে কোন জিএসপি সুবিধা আগেও পাওয়া যেত না। তবে টোবাকো, সিরামিক, প্লাষ্টিকের মতো কিছু পণ্য রপ্তানির উপর জিএসপি সুবিধা প্রদান করা হতো। ‘রানা প্লাজা’ দুর্ঘটনার পর এসব পণ্যের জিএসপি সুবিধাও স্থগিত করা হয়।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পণ্যের ক্রেতা গোষ্ঠির পরামর্শ অনুযায়ি বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের কারখানাগুলোর পরিবেশ উন্নত করার পাশাপাশি বিল্ডিং ও ফায়ার সেফটি নিশ্চিত করাসহ শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। জিএসপি স্থগিত রাখার এখন আর কোন কারণ নেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচিৎ হবে জিএসপি সুবিধা বাংলাদেশ দেশকে ফিরিয়ে দেয়া।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন,‘জিএসপি সুবিধা স্থগিত থাকায় বাংলাদেশের তেমন কোন আর্থিক ক্ষতি না হলেও ইমেজের ক্ষতি হয়েছে। তিনি বলেন,বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশকে দেয়া জিএসপি সুবিধা স্থগিতের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা উচিৎ। এ বিষয়ে বাংলাদেশে নবনিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারেন।
বাংলাদেশ সুনামের সাথে এবং সফল ভাবে বিশ^বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে টিপু মুন্শী বলেন, বাংলাদেশের তৈরী পোশাকের একক দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে বড় বাজার। উভয় দেশের বাণিজ্য ব্যালেন্স বাংলাদেশের পক্ষে। গত ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে বাংলাদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৫হাজার ৯শ’ ৮৩ দশমিক ৩১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে, একই সময়ে আমদানি করেছে ১ হাজার ৭শ’৩ দশমিক ৬৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এখন বিনিয়োগের জন্য উপযুক্ত স্থান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোনে বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। বিদেশী বিনিয়োগকারীদের বিশেষ সুযোগ সুবিদা প্রদান করা হচ্ছে। মার্কিন বিনিয়োগারীগণ এ সুযোগ গ্রহণ করতে পারেন।
উল্লেখ্য, এবারের মেলায় দেশটির ৪৬টি প্রতিষ্ঠানের ৭৪টি স্টল রয়েছে। মেলায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উন্নত মানের পণ্য ও সেবার প্রদর্শনীর পাশাপাশি বিভিন্ন পণ্য বিক্রয় হবে।
সোনারগাঁও হোটেলের বল রুমে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত এ মেলা দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকবে। মেলায় প্রবেশ ফি ৩০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে স্কুল শিক্ষর্থীরা ড্রেস পরে এবং নিজের আইডি কার্ড প্রদর্শন করে ফি ছাড়া মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন।