বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধের সিদ্ধান্ত : তথ্যমন্ত্রী

আহসান হাবিব

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিদেশি চ্যানেলে বাংলাদেশি পণ্যের বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধের সিদ্ধান্তে কঠোর থাকবে সরকার। তিনি বলেন, ‘সরকার কোন চ্যানেল বন্ধ করেনি। কেবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালনা আইন লঙ্ঘন করে বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রচার করায় দুটি প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে মাত্র।’

তথ্যমন্ত্রী আজ মঙ্গলবার দুপুরে মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শন সমিতির নেতৃবৃন্দের সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘টেলিভিশন শিল্পকে বাঁচাতে বিদেশি চ্যানেলে দেশীয় পণ্যের বিজ্ঞাপন বন্ধে সরকার আইন প্রয়োগ শুরু করেছে। সরকার কোনো চ্যানেল বন্ধ করেনি।

সরকার প্রচলিত আইন প্রয়োগ করেছে মাত্র।’
‘ক্যাবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালনা আইন, ২০০৬’ এর উপধারা-১৯(১৩) এর বিধান অনুযায়ী, বাংলাদেশে বিদেশি কোনো চ্যানেলে কোনো ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করা যায় না। শুধু দেশীয় বিজ্ঞাপন নয় কোনো ধরনের বিজ্ঞাপন দেখানো যায় না। এটা হচ্ছে বাংলাদেশের আইন।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ১ এপ্রিল যে দুটি চ্যানেলকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এই দুটি চ্যানেল বিদেশি বিজ্ঞাপন নিয়ম বহির্ভূতভাবে প্রচার করছিলেন। সরকার যা করেছে তা টেলিভিশনের মালিক, সাংবাদিক, কলা-কৌশলীদের স্বার্থের জন্যই করেছে। কারণ, বিদেশে বিজ্ঞাপন প্রচার করার কারণে বছরে ৫০০ থেকে ১০০০ কোটি টাকা বিদেশে চলে যাচ্ছে, অনেক সাংবাদিক, কলাকৌশলী বেতন পাচ্ছেন না, যা করা হচ্ছে তাদের স্বার্থের জন্যই।

তিনি বলেন, একই ধরনের আইন ভারতে আছে, যুক্তরাজ্যে আছে, কন্টিনেন্টাল ইউরোপে আছে, অন্য দেশে আছে। সেসব দেশে এই আইন মানা হয়।
হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশে এই আইনটি মানা হচ্ছিল না। আইনটি প্রয়োগ করা হয়নি। এটি না করার কারণে যেটি হয়েছে- বাংলাদেশের চ্যানেলগুলো যে বিজ্ঞাপন পেত সেই বিজ্ঞাপনের বড় একটা অংশ চলে গেছে ভারতে।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা নোটিশ দিয়ে সাতদিনের মধ্যে তাদের কারণ দর্শাতে বলেছি। সাতদিনের মধ্যে জবাব দিক, এরপর জবাব অনুযায়ী ব্যবস্থা।’ চলচ্চিত্র সমাজের দর্পন উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, চলচ্চিত্র হচ্ছে শিল্প।

বহু বছর ধরে ভারতীয় উপমহাদেশের চলচ্চিত্র চলে আসছে। চলচ্চিত্র মানুষকে বিনোদন দেয়। সংস্কৃতির অগ্রাসীয় থাবায় এবং আমাদের দেশে আগের মত সিনেমা নির্মিত না হওয়ায় দেশের সিনেমা হল গুলো বন্ধ হবার পথে।

তিনি বলেন, প্রথম কথা হচ্ছে চলচ্চিত্র শিল্পকে বাঁচাতে হবে। আর চলচ্চিত্রকে বাঁচাতে হলে সিনেমা হলগুলোও রাখতে হবে। তা না হলে সিনেমা নির্মিত হলে তা চলবে কোথায়। আর চলচ্চিত্র নির্মিত না হলে নতুন নতুন শিল্পীও তৈরি হবে না। তাই আমাদের সিনেমা হলগুলোকে বাঁচাতে হবে।

বৈঠকে তথ্য সচিব আব্দুল মালেক, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শন সমিতির সভাপতি ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ, সংগঠনের উপদেষ্টা সুদীপ্ত কুমার দাস, সহ-সভাপতি আমির হামজা, চট্টগ্রাম বিভাগের সভাপতি আবুল হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *