অধ্যক্ষ সিরাজের নির্দেশেই নুসরাতকে হত্যা: পিবিআই
ভূঁইয়া আসাদুজ্জামান,
লিগ্যাল ভয়েস : ফেনীর সোনাগাজীতে মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলার নির্দেশেই পুড়িয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। নুসরাত হত্যায় এখন পর্যন্ত ১৫ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। এর মধ্যে সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার।
মাদ্রাসা অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলার বিরুদ্ধে মামলা করার কারণেই নুসরাতকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল বলে পিবিআইয়ের ভাষ্য।
বনজ কুমার মজুমদার বলেন, ‘নুসরাত হত্যাকাণ্ডে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে নুরউদ্দিন। জবানবন্দিতে সে বলেছে, অপারেশনে বোরকা পরা চারজনের মধ্যে দুইজন ছেলে আর বাকি দুইজন মেয়ে ছিল। তারা সবাই ওই মাদরাসার শিক্ষার্থী।’‘এদের মধ্যে শাহদাত হোসেন শামীম প্রধান পরিকল্পনাকারী ছিল। এই ঘটনায় শম্পা অথবা চম্পাকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেই বাইরে এসে বলছিল নুসরাতকে পুড়িয়ে মারা হচ্ছে।’
পিবিআই প্রধান বলেন, ‘গত ২৭ মার্চ নুসরাত জাহান রাফিকে নিজ কক্ষে নিয়ে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজদ্দৌলাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। এরপর নুর উদ্দিনসহ কয়েকজন অধ্যক্ষের সাথে জেলে দেখা করেন। আর সেখান থেকেই নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যা করার নিদের্শ নিয়ে আসে।
সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত এবছর আলিম পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিলেন। ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে ‘শ্লীলতাহানির’অভিযোগ এনে গত মার্চে সোনাগাজী থানায় একটি মামলা করে নুসরাতের পরিবার।
সেই মামলা তুলে না নেওয়ায় অধ্যক্ষের অনুসারীরা গত শনিবার পরীক্ষার কেন্দ্র থেকে কৌশলে ডেকে নিয়ে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। শনিবার রাতেই ঢামেক হাসপাতালের ভর্তি করা হয়। অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় সোমবার তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। গত বুধবার রাতে তার মৃত্যু হয়।
শরীরে ৮০ ভাগ পুড়ে যাওয়া নুসরাতকে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিলেও শারীরিক অবস্থার কারণে তা সম্ভব হয়নি। নুসরাতের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী এ ঘটনায় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।