উড়োজাহাজ পরিচালনা নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নয়নে সরকারী প্রকল্প
শাহাদত হোসেন,
লিগ্যাল ভয়েস : দেশের সব বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ পরিচালনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নয়নে প্রকল্প নিতে যাচ্ছে সরকার। ‘আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোর সিকিউরিটি ব্যবস্থার উন্নয়ন’ শীর্ষক ওই প্রকল্পের আওতায় দেশের সব বিমানবন্দরে নিরাপদে উড়োজাহাজ পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় আধুনিক যন্ত্রপাতি ক্রয় করা হবে। উন্নয়ন করা হবে বিমানবন্দরের কমিউনিকেশন ও নেভিগেশন সার্ভিল্যান্স (সিএনএস) ব্যবস্থারও।
অভিযোগ আছে, দেশের বিমানবন্দরগুলোয় এয়ার ট্রাফিকের সংখ্যা বাড়লেও যাত্রী নিরাপত্তার জন্য যেসব যন্ত্রপাতি রয়েছে, সেগুলোর অধিকাংশই পুরনো। এসব যন্ত্রপাতি ঠিকমতো সচল অবস্থায় পাওয়া যায় না প্রায় সময়ই। এতে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রীদের নিরাপদ সেবার ঘাটতি হতে পারে বলে মনে করছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।
এ অবস্থায় দেশের সব বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ পরিচালনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়নে প্রকল্পটি হাতে নিচ্ছে সরকার। প্রকল্পের আওতায় দেশের সব বিমানবন্দরে নিরাপদে উড়োজাহাজ পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় আধুনিক যন্ত্রপাতি ক্রয় করা হবে।
সিএনএস ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হবে তিনটি আন্তর্জাতিক ও ছয়টি অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরে।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নয়নে গৃহীত প্রকল্পটির আওতায় আরো কয়েকটি ছোট ছোট প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। এর মধ্যে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, যশোর বিমানবন্দর, সৈয়দপুর বিমানবন্দর ও সিভিল এভিয়েশন ট্রেনিং সেন্টারে ৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ার কথা রয়েছে। এ প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নয়নের মাধ্যমে এয়ার ট্রাফিক সেবার কার্যকারিতা বৃদ্ধিসহ দেশে নিরাপদ উড়োজাহাজ পরিবহন পরিচালনা, সিভিল এভিয়েশন ট্রেনিং সেন্টারে (সিএটিসি) এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারদের (এটিসি) জন্য প্রশিক্ষণ, উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা রোধে শাহজালাল বিমানবন্দরের উদ্ধারকাজ ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং বাংলাদেশে উড়োজাহাজ খাতের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা।
এ প্রসঙ্গে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তা ও উড়োজাহাজের নিরাপদ পরিচালনা নিশ্চিতে গৃহীত প্রকল্পটি বাস্তবায়নে জাপানের সহায়তা নেয়া হবে। এরই মধ্যে প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। শিগগিরই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এটি অনুমোদন পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ইতিমধ্যে নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে উড়োজাহাজ চলাচলের লক্ষ্যে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ফ্লাইট ইনফরমেশন রিজিয়ন (এফআইআর) কাভারেজের জন্য গভীর সমুদ্র পর্যন্ত সার্ভিল্যান্স এলাকা বিস্তৃত করতে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে প্রকল্প এলাকা হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে।
বর্তমানে যশোর ও সৈয়দপুরে দুটি কনভেনশনাল ভেরি হাই ফ্রিকোয়েন্সি অমনি ডিরেকশনাল রেডিও রেঞ্জ (সিভিওআর) রয়েছে। দুটি যন্ত্রই প্রায় ২৫ বছরের পুরনো। এজন্য যন্ত্র দুটিকে ডপলার ভেরি হাই ফ্রিকোয়েন্সি অমনি রেঞ্জ (ডিভিওআর) দিয়ে প্রতিস্থাপন এবং ডিএমই (ডিসটেন্স মেজরিং ইকুইপমেন্ট) স্থাপন করা প্রয়োজন বলে মনে করছে মন্ত্রণালয়। সিভিওআর যন্ত্র দুটিকে ডিভিওআর দিয়ে প্রতিস্থাপন ও ডিএমই স্থাপনের জন্য প্রকল্প এলাকাও এরই মধ্যে নির্বাচন করা হয়েছে। এছাড়া প্রকল্পের আওতায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এটিসি প্রতিস্থাপনেরও কথা রয়েছে।