নিম্নমানের ৫২ পণ্য জব্দের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন

সাইয়্যদ মো: রবিন,

লিগ্যাল ভয়েস : বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্স অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) পরীক্ষায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ভেজাল ও নিম্নমানের ৫২টি পণ্য জব্দ এবং বাজার থেকে প্রত্যাহারের নির্দেশনা চেয়ে রিট আবেদন করা হয়েছে।

পাশাপাশি পণ্যের গুণগত মান উন্নত না হওয়া পর্যন্ত উৎপাদন বন্ধেরও নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিটে।
ভোক্তা অধিকার সংস্থা কনসাস কনজুমার্স সোসাইটির (সিসিএস) পক্ষে সংগঠনের আইন উপদেষ্টা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান বৃহস্পতিবার সকালে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় জনস্বার্থে এই রিট দায়ের করেন।

আজ হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে রিট আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে বলেও জানান আইনজীবী।

একই সাথে এই সব প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট পণ্যসমূহ কেন জব্দ করা হবে না বা বাজার থেকে কেন প্রত্যাহার করা হবে না এবং তাদের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারির নির্দেশনাও চাওয়া হয়েছে রিটে।

রিটে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্স অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) মহাপরিচালক (ডিজি), বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালককে বিবাদী করা হয়েছে।

এর আগে ৬ মে বিএসটিআই কর্তৃক বাজারে এসব পণ্যে ভেজাল ধরা পড়ার পরও জব্দ না করা, সেগুলো বাজার থেকে প্রত্যাহারের ব্যবস্থা না নেয়া ও প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় দুই মন্ত্রণালয়ের সচিব ও তিন প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে আইনি নোটিশ পাঠান ভোক্তা অধিকার সংস্থা কনসাস কনজুমার্স সোসাইটি (সিসিএস)। নোটিশের পরও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় এ রিট আবেদন করা হয়।
গত ৩ মে ও ৪ মে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে উল্লেখ করা হয়েছে, বিএসটিআই সম্প্রতি ২৭ ধরনের ৪০৬টি খাদ্য পণ্যের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেছে। এর মধ্যে ৩১৩টি পণ্যের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে।

এর মধ্যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৫২টি পণ্য নিম্নমানের ও ভেজাল রয়েছে। বৃহস্পতিবার (২ মে) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই রিপোর্ট প্রকাশ করে প্রতিষ্ঠানটি।

ভেজাল পণ্যগুলো হলো- সিটি ওয়েলের সরিষার তেল, গ্রীণ ব্লিচিং এর সরিষার তেল, শমনমের সরিষার তেল, বাংলাদেশ এডিবল ওয়েলের সরিষার তেল, কাশেম ফুডের চিপস, আরা ফুডের ড্রিংকিং ওয়াটার, আল সাফির ড্রিংকিং ওয়াটার, মিজান ড্রিংকিং ওয়াটার, মর্ণ ডিউয়ের ড্রিংকিং ওয়াটার, ডানকান ন্যাচারাল মিনারেল ওয়াটার, আরার ডিউ ড্রিংকিং ওয়াটার, দিঘী ড্রিংকিং ওয়াটার, প্রাণের লাচ্ছা সেমাই, ডুডলি নুডলস, শান্ত ফুডের সফট ড্রিংক পাউডার, জাহাঙ্গীর ফুড সফট ড্রিংক পাউডার, ড্যানিশের হলুদের গুড়া, প্রাণের হলুদ গুড়া, ফ্রেশের হলুদ গুড়া, এসিআইর ধনিয়ার গুড়া, প্রাণের কারি পাউডার, ড্যানিশের কারী পাউডার, বনলতার ঘি, পিওর হাটহাজারী মরিচ গুড়া, মিস্টিমেলা লাচ্ছা সেমাই, মধুবনের লাচ্ছা সেমাই, মিঠাইর লাচ্ছা সেমাই, ওয়েল ফুডের লাচ্ছা সেমাই, এসিআইর আয়োডিন যুক্ত লবন, মোল্লা সল্টের আয়োডিন যুক্ত লবন, মধুমতির আয়োডিন যুক্ত লবন, কিং’য়ের ময়দা, রুপসার দই, মক্কার চানাচুর, মেহেদীর বিস্কুট, বাঘাবাড়ীর স্পেশাল ঘি, নিশিতা ফুডস এর সুজি, মঞ্জিলের হলুদ গুড়া, সান ফুডের হলুদ গুড়া, গ্রীন লেনের মধু, কিরনের লাচ্ছা সেমাই, ডলফিনের মরিচের গুড়া, ডলফিনের হলুদের গুড়া, সূর্যের মরিচের গুড়া, জেদ্দার লাচ্ছা সেমাই, অমৃতের লাচ্ছা সেমাই, দাদা সুপারের আয়োডিন যুক্ত লবন, মদীনার আয়োডিন যু্ক্ত লবন, নুরের আয়োডিন যুক্ত লবন।

রিটের বিষয়ে আইনজীবী ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান জানান, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্স অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) পরীক্ষায় প্রমাণিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৫২টি ভেজাল ও নিম্নমানের পণ্য জব্দ করতে নির্দেশনা চেয়ে রিট দায়ের করা হয়েছে। এসব পণ্য বাজার থেকে প্রত্যাহার ও উৎপাদন বন্ধের নির্দেশনাও চাওয়া হয়েছে রিটে।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *