সময় এসেছে ফেসবুক বন্ধ করার: ফেসবুক সহ-প্রতিষ্ঠাতা ক্রিস হিউজ
আন্তর্জাতিক,
লিগ্যাল ভয়েস : এবার ফেসবুক বিলুপ্তির দাবি জানিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটির সহ-প্রতিষ্ঠাতা ক্রিস হিউজ। গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্যা নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত একটি মতামতে তিনি এই দাবি জানান। ওই নিবন্ধে হিউস লিখেছেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থার এখন উচিৎ ফেইসবুক ভেঙে দেওয়া।
২০০৪ সালে হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময় হিউজসহ কয়েকজন বন্ধুর যৌথ উদ্যোগে জাকারবার্গ যে নেটওয়ার্ক তৈরি করেছিলেন, সেটি প্রতিষ্ঠিত হয়েই পরিণত হয়েছে আজকের ফেসবুক-এ। ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠার পর ২০০৬ সালে বাণিজ্যিকভাবে যাত্রা শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। দীর্ঘ ১৩ বছর পর পুরো বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষ এখন ফেসবুকের গ্রাহকের তালকায়। প্রতিষ্ঠানটির সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে শত বিলিয়ন ডলারের কোঠায়। এর মধ্য দিয়েই বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের একজন হিসেবেও আবির্ভূত হয়েছেন ৩৪ বছর বয়সী জাকারবার্গ।
তবে এই যশ আর খ্যাতির সঙ্গে সঙ্গে এসেছে বিভিন্ন বিতর্কও। গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি, ভুয়া তথ্য প্রচার, নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার ইত্যাদি বিতর্কে বারবার পড়তে হয়েছে প্রতিষ্ঠানটিকে। এমন সময়ই ফেসবুকের বিভিন্ন স্বার্থসিদ্ধির জন্য আনা শিথিলতার কথা উল্লেখ করে কথা বলেছেন ক্রিস হিউজ। নিউ ইয়র্ক টাইমসের ওই নিবন্ধে তিনি বলেন, ‘মার্ক ভালো, সদয় মানুষ। কিন্তু আমার ক্ষোভ সেখানে যে লাভের লোভে সে নিরাপত্তার বিষয়টিকে বিসর্জন দিয়েছে, ক্লিকের লোভে বিসর্জন দিয়েছে সহনশীলতাকে।’
প্রায় গত এক দশক ধরে ফেইসবুকের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখেননি হিউজ। এই সময়েই প্রতিষ্ঠানটি আধিপত্য বিস্তার করেছে ইন্টারনেটের দুনিয়ায়, যা তিনি কখনোই ভেবে উঠতে পারেননি। বিশ্ব সংস্কৃতি, নির্বাচন, এমনকি ক্ষমতার লড়াইয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি কতটা প্রভাব বিস্থার করতে পারে সে সম্পর্কেও তার তেমন ধারণা ছিল না। তবে প্রতিষ্ঠানটির এই অগ্রগতি এখন ভাবছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘জাকারবার্গ একটি দানব তৈরি করেছে, যা অন্য উদ্যোক্তাদের পথে বসাচ্ছে, গ্রাহকের পছন্দও নিয়ন্ত্রণ করছে। আমাদের সরকারের এটা নিশ্চিত করা উচিৎ যে অদৃশ্য এই মাধ্যমের প্রভাবে আমরা যেন হেরে না যাই।’
তিনি আরও জানান, ‘আমি আরও হতাশ যে মার্ক তার আশপাশে এমন লোকদের রেখেছে, যারা তার বিশ্বাসকে আরও শক্তিশালীই করছে। তার কোনো পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে না।’ এ সময় ফেসবুকের এমন বিরূপ আচরণের বিরোধিতা করে তিনি সরকারকে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানান। এমনকি প্রতিষ্ঠানটি বন্ধের দাবিও তোলেন তিনি।
দ্যা নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত হিউজের সেই দাবির প্রতিক্রিয়ায় প্রতিষ্ঠানটির ভাইস প্রেসিডেন্ট নিক ক্লেগ আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সিএনএনকে বলেন, ‘আমরা স্বীকার করছি যে সাফল্যের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের আরও দায়িত্বশীল হওয়া উচিৎ। তবে জোর করে সফল একটি প্রতিষ্ঠান বন্ধের দাবি তুলে দায়িত্বশীলতা আনা সম্ভব নয়।’