অপ্রয়োজনীয়’ সিজারিয়ানে বছরে ব্যয় ৪ হাজার ৮১ কোটি টাকা
লিগ্যাল ডেস্ক : দেশে সিজারিয়ানের (অস্ত্রোপচার) মাধ্যমে সন্তান প্রসবের হার ২০০৪ সালের তুলনায় ২০১৬ সালে প্রায় আট গুণ বেড়েছে।
আর ২০১৭ সালে সিজারিয়ানের মাধ্যমে সন্তান প্রসবে ব্যয় হয়েছে ৪ হাজার ৮১ কোটি টাকা। অর্থাৎ প্রতি সিজারিয়ানে গড়ে ব্যয় হয়েছে ৫১ হাজার ৪৬৯ টাকা। গতকাল প্রকাশিত আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, ২০০৪ সালে দেশে সিজারিয়ান প্রসবের হার ছিল ৪ শতাংশ। ২০১৬ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩১ শতাংশে। ২০১৭ সালে দেশে যে পরিমাণ সিজারিয়ান প্রসব হয়েছে তার ৭৭ শতাংশ বা ৮৬ হাজারই ছিল অপ্রয়োজনীয়। অন্যদিকে দরিদ্র পরিবারের ২ লাখ ৯২ হাজার ৪৬০ জন নারীর সিজারিয়ান প্রসবের প্রয়োজন হলেও তারা তা করতে পারেননি।
সেভ দ্য চিলড্রেনের ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর এবং নবজাতক ও মাতৃস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. ইশতিয়াক মান্নান বলেন, দেশে সিজারিয়ান প্রসবের এ পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। সচ্ছল মায়েরা ব্যথার ভয়ে বা চিকিৎসকদের দ্বারা ভুলভাবে প্রভাবিত হয়ে সিজারিয়ানের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন। অথচ দরিদ্র যেসব নারীর প্রকৃতভাবে সিজারিয়ান প্রয়োজন, তাদের সে সুযোগ নেই। বিষয়টি একেবারে বিস্ময়কর।
সিজারিয়ান প্রসবের ৮০ শতাংশ হয় দেশের বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে। ডা. ইশতিয়াক মান্নানের মতে, চিকিৎসা খাতের দুর্বল নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ও কিছু নীতিবহির্ভূত চিকিৎসক এজন্য দায়ী।
তিনি বলেন, অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান সন্তান ও মাকে ঝুঁকির মুখে ফেলে। এতে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, অঙ্গহানিসহ মায়ের বিভিন্ন ধরনের ঝুঁকি থাকে। অন্যদিকে স্বাভাবিক প্রসবের মাধ্যমে জন্ম নেয়া শিশুর শরীরে ভালো ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করে, যা তার রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধি করে। এছাড়া স্বাভাবিক প্রসবের ফলে মা দ্রুতই শিশুর সঙ্গে শারীরিক যোগাযোগ করতে ও বুকের দুধ খাওয়াতে পারেন।
অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান প্রসব বন্ধ করতে দক্ষ মিডওয়াইফারি তৈরি করতে হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। দেশে এখন মিডওয়াইফারির সংখ্যা মাত্র আড়াই হাজার।