নবীন সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে ইনোভেটিভ চিন্তা-ভাবনা থাকতে হবে : প্রধানমন্ত্রী
গোলাম রব্বানী,
লিগ্যাল ভয়েস : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নবীন সরকারি কর্মচারিদের কেবল চাকরির জন্য চাকরি নয়, সেবার মানসিকতায় দেশপ্রেম, কর্তব্যনিষ্ঠা এবং উদ্ভাবনী চিন্তার প্রসার ঘটিয়ে কর্মক্ষেত্রে আত্মনিয়োগের আহবান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের কাজটাকে কেবল চাকরি হিসেবে নিলে হবে না। দেশের জন্য দেশের মানুষের জন্য দেশপ্রেম এবং কর্তব্যনিষ্ঠা নিয়ে কাজ করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী রাজধানীর শাহবাগের বিসিএস প্রশাসন একাডেমি মিলনায়তনে ১১০, ১১১ ও ১১২ তম আইন ও প্রশাসন কোর্সের সমাপনী ও সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিজের ভেতরে ইনোভেটিভ চিন্তা-ভাবনা থাকতে হবে। নিজের ভেতরে একটা আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে। কোন কাজ পারবো, কি পারবো না এই দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভূগলে চলবে না। হ্যাঁ, আমি পারবো, সেই বিশ্বাসটা সব সময় নিজের ওপর রাখতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা চাইতেন বাঙালিরা রক্ত দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছে তাই পৃথিবীতে সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি হিসেবে একদিন নিজের পায়ে দাঁড়াবে এবং আমরা তা করতে পারবো। এই কথাটা সবসময় মনে রাখতে হবে, এই আত্মবিশ্বাসটা থাকতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘কর্মক্ষেত্রে সবথেকে বড় কথা আত্মবিশ্বাস। যে কোন একটা কাজ করতে গেলে কিভাবে করবো, কিভাবে হবে, কয় টাকা আসবে, কোথা থেকে টাকা পাব-একদম দুশ্চিন্তা না করে কোন কাজটা করে উন্নতি করা সম্ভব সেটা নিজেকেই খুঁজে বের করতে হবে।’
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এইচ এম আশিকুর রহমান, জন প্রশাসন সচিব ফয়েজ আহমেদ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
প্রতিষ্ঠানের রেক্টর কাজী রওশন আরা আখতার স্বাগত বক্তৃতা করেন।
১১০, ১১১ ও ১১২ তম কোর্সের রেক্টর পদক জয়ী তিন শিক্ষার্থী মাহবুব উল্লাহ মজুমদার, রঞ্জন চন্দ্র দে এবং মাবরুল আহমেদ অনিক অনুষ্ঠানে নিজস্ব অনুভূতি ব্যক্ত করে বক্তৃতা করেন।
প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে ১১০, ১১১ এবং ১১২ তম আইন ও প্রশাসন কোর্সের শিক্ষার্থীদের মঝে সনদ বিতরণ করেন এবং তাঁদের সঙ্গে পৃথক ফটো সেশনে অংশগ্রহণ করেন। পরে তিনি শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও উপভোগ করেন।
শেখ হাসিনা সরকারি কর্মচারিদের জনসেবার মানসিকতা নিয়ে কাজ করে যাবার উদাত্ত আহবান জানিয়ে বলেন, ‘আমি এইটুকু অনুরোধ করবো-যে যেখানে যাবে কেবল চাকরির স্বার্থে চাকরি করা নয়, জনসেবা করা, দেশ সেবা করা, দেশকে ভালবাসা, মানুষকে ভালবাসা-এই কথাটা মনে রাখতে হবে। সেই চিন্তা থেকেই আপনারা পারবেন দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে। এই কথাটা আমি বিশ্বাস করি।’
প্রধানমন্ত্রী তাঁর উন্নয়নের সুফল এসময় তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য সরকারি কর্মচারিদের নিবেদিত প্রাণ হয়ে কাজ করে যাবার পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, ‘প্রতিটি গ্রামের মানুষ শহরের সুযোগ-সুবিধা পাবে। এটাই হচ্ছে আমার গ্রাম আমার শহর।’
বাংলাদেশ বর্তমানে উন্নয়নশীল দেশের সে স্বীকৃতি অর্জন করেছে তা ধরে রাখায় তিনি উন্নয়ন প্রকল্পগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশকে সন্ত্রাস, মাদক এবং জঙ্গিবাদ মুক্ত রাখতে এ সময় সকলের প্রতি আহবান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আগের সরকারের ৬১ হাজার কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে এবার আমার ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছি এবং ১৯ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের জায়গায় ২ লাখ ২ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছি। এই উন্নয়ন প্রকল্পগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।’