জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ চেয়ারম্যানের লাগামহীন অনিয়ম ও দুর্নীতি
সিনিয়র রিপোর্টার,
লিগ্যাল ভয়েস ডেস্ক : জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো: রাশিদুল ইসলামের লাগাতার অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাটে সংস্থাটি বর্তমানে বেহাল দশায় পড়েছে। ফ্ল্যাট বা প্লট বরাদ্দের নামে এখানে চলছে কোটি কোটি টাকার রমরমা বাণিজ্য। নামে-বেনামে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিয়ে লুটে নিচ্ছেন বিশাল অংকের অর্থ।
জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদফতরের (এনএসআই) করা তদন্তে তার দুর্নীতির প্রমাণ মেলে। গোয়েন্দা অধিদফতর গত ২৬মে সরকারের কাছে এ রিপোর্ট পেশ করে। সরকারের সম্পত্তি ভুয়া নামজারির মাধ্যমে অবৈধভাবে বিক্রি, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ফ্ল্যাট বরাদ্দে কয়েক কোটি টাকা ঘুষ গ্রহণ, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্পের বরাদ্দকৃত অর্থলুট, গ্রহিতাদের কাছ থেকে ব্ল্যাকমেইলিং এর মাধ্যমে ঘুষ দাবি ও গ্রহণ, রাজধানীর লালমাটিয়া প্রকল্পে অবৈধভাবে নিজ নামে ফ্ল্যাট বরাদ্দ, মোহাম্মদপুরে বড় অংকের ঘুষের বিনিময়ে কাজ প্রদান, রাজশাহীর তেরখাদিয়া প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে অনিয়ম, নিম্নপদে বদলি বাণিজ্যে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ, চেয়ারম্যানের পদ দখলে নিতে প্রভাবশালী মহলকে বড় অংকের ঘুষ প্রদান, সদস্য (ভূমি ও সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা) থাকাকালীন ঊর্ধ্বতনদের সন্তুষ্ট করতে বিভিন্ন সময়ে নিয়ম বহির্ভূতভাবে মোটা অংকের অর্থসহ ফ্ল্যাট/প্লট উৎকোচ দেয়া সহ তার অনেক অপকীর্তি তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসে।
তিনি এইসব অপকর্ম সূচারুরূপে সম্পাদনের জন্য গড়ে তুলেছেন একটি বিশাল সিন্ডিকেট। তার আস্থাভাজন কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিশেষ করে পরিচালক (ভূমি ও সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা) মুকেশ চন্দ্র বিশ্বাসসহ অন্যান্যদের নিয়ে গঠিত সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তিনি অবৈধ ও নিয়ম বহির্ভূত কাজগুলো হাসিল করেন। লুটপাটের অর্থ ভাগাভাগিতে মনোমালিন্য হওয়ায় অনেক কর্মকর্তাকে তাৎক্ষণিক বদলি করেছেন তিনি। তার মানসিক অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ‘জাগৃক’র অনেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অন্যত্র বদলি হয়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব, জনপ্রশাসন সচিবসহ রাঘব-বোয়ালদের ফ্ল্যাট অথবা প্লটসহ বিভিন্ন সুবিধাদি দিয়ে বর্তমান পদকে দীর্ঘস্থায়ী করতে চেষ্টা চালিয়েছেন তিনি। তার অপকর্মের বিরুদ্ধে কেউ রুখে দাঁড়াতে পারে না। যে বা যারাই তার বিপক্ষে যায় তাদেরকে হুমকি-ধামকি, শাস্তিমূলক বদলি, বহিষ্কারসহ নানাভাবে হয়রানির স্বীকার হতে হয়।
সরকারের প্রভাবশালী মহল ও প্রশাসনের বড়কর্তাদের ম্যানেজ করে চলেন তিনি। তাই অনিয়ম, দুর্নীতিতে কাউকে তোয়াক্কা করেন না।
রাশিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আসলে তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়। তদন্তে তার দুর্নীতির এসব সার্বিক চিত্র উঠে আসে।
জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদফতরের পরিচালক মেজবাহ উদ্দিন(পিপিএম) কর্তৃক ২৬/০৫/২০১৯ইং তারিখে স্বাক্ষরিত একটি তদন্ত প্রতিবেদন স্মারক নং ১৩-২০০৮(রাজ-১)-২০/৩৭৬(৪), যা সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন (জননিরাপত্তা বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা), সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার (গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা), সচিব আবু সালেহ শেখ মো: জহিরুল হক (আইন ও বিচার বিভাগ, আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা) ও মুখ্য সচিব মো: নজিবুর রহমান (প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, পুরাতন সংসদ ভবন, তেজগাঁও, ঢাকা) বরাবর পাঠানো হয়।
তদন্ত প্রতিবেদনে যা আছে :
মো: রাশিদুল ইসলাম জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হিসেবে ০৮/০৭/২০১৮ইং তারিখে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এ দায়িত্ব গ্রহণের পূর্বে সদস্য (ভূমি ও সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা) হিসেবে দায়িত্বরত (যোগদান-০৫/০৯/২০১৭ইং) ছিলেন। সদস্য (ভূমি ও সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা) থাকা অবস্থায় এ প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতিতে তার হাতেখড়ি হয় এবং বিগত চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান এর শেষদিকে তিনি এ প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতির মহিরুহে পরিণত হন। নিজের অবস্থান সুসংগত করার জন্য বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে ফ্ল্যাট/প্লট বরাদ্দ প্রদান, অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানকে ফ্ল্যাট/প্লট/কাজ প্রদান, বদলী বাণিজ্য, অনিয়ম দুর্নীতি সুচারুভাবে সম্পন্ন করার জন্য এ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ নিজস্ব বাহিনী তৈরিকরণ এবং তার অবৈধ কাজে বাধা প্রদান করতে পারে এমন ব্যক্তিদের জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ থেকে অপসারণ ও হয়রানিসহ বিভিন্ন ধরণের দুর্নীতি ও অনিয়ম করে যাচ্ছেন।
মো: রশিদুল ইসলামের দুর্নীতি, অনিয়ম ও অবৈধ প্রভাব বিস্তারের বিস্তারিত বিবরণ উপস্থাপন করা হলো-
গোয়েন্দা তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, (ক) জনৈক মিজানুর রহমানের কাছ থেকে তিনি ৫০(পঞ্চাশ) লাখ টাকা অগ্রিম গ্রহণসহ মোট দুই (০২) কোটি টাকা উৎকোচ গ্রহণ করেন এবং এখতিয়ার বহির্ভূত ও সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মিরপুরস্থ ১০-বি/১-৯ নং প্লটটি বিনামূল্যে ব্যক্তি মালিকানায় (হস্তান্তর অনুমতিসহ) বরাদ্দ প্রদান করেন, যা বর্তমানে ‘হাইপেরিয়ান বিল্ডার্স এর হস্তগত। কিন্তু গেজেটভুক্ত পরিত্যক্ত সম্পত্তি নিম্নক্রোক্তভাবে ব্যবহারের বিধান রয়েছে (তথ্যসূত্র: পরিত্যক্ত সম্পত্তি আইন ১৯৭২, পৃষ্ঠা-৪৩, লেখক- মো: আবু বকর সিদ্দিক):- (১) মাসিক ভাড়ার ভিত্তিতে, (২) হার পারসেজ পদ্ধতি (ভাড়া কেটে রাখা), (৩) সরাসরি নিলাম বিক্রয়ের মাধ্যমে।
উল্লেখ্য, ১৯৬৮ সালে মিরপুস্থ ১০-বি/১-৯ নং প্লটটি নাজির আক্তার (পাকিস্তানি নাগরিক) এর নামে বরাদ্দ প্রদান করা হয়। ১৯৭৭ সালে নাজির আক্তার ও ১৯৮০ সালে তার স্বামী ক্যাপ্টেন ই এ ভূঁইয়া মৃত্যুবরণ করেন এবং একমাত্র পুত্র সন্তান আহমেদ নেওয়াজ ভূঁইয়া তাদের জীবদ্দশায় নিরুদ্দেশ হন। যার প্রেক্ষিতে বেওয়ারিশ সম্পত্তি হিসেবে প্লটটি ২৩/০৯/১৯৮৬ইং তারিখে এসআরও ৩৬৪/৮৬ মূলে পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে ক’ শ্রেণিতে তালিকাভুক্ত হয় (১৯৭২ সালে মহামান্য রাষ্ট্রপতির ১৬ নং আদেশানুযায়ী)।
গেজেট মোতাবেক বর্ণিত সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা, রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের পক্ষে ‘পরিত্যক্ত সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা বোর্ড’ (এপিএমবি)-এর উপর ন্যস্ত হয়।
কিন্তু জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সহায়তায়, বিভিন্ন ব্যক্তি মূল বরাদ্দ প্রাপকের নিরুদ্দেশ পুত্র সন্তান আহমেদ নেওয়াজ ভূঁইয়া সেজে জাল আমমোক্তারনামা সৃজন করে তাদের নামে লিজ দলিল তৈরি, নামজারি, বিক্রয় অনুমতি নিয়েছে। এ প্লটের মালিকানার বর্তমান দাবিদার হলো: -(১) মূল বরাদ্দ গ্রহিতার নিরুদ্দেশ পুত্র আহমেদ নেওয়াজ ভূঁইয়া সেজে নিজ নামে আমমোক্তার নেওয়া শফিউদ্দিন ভূঁইয়া (অর্থের বিনিময়ে তার নামে লিজ দলিল, নামজারি, বিক্রয় অনুমতি করিয়ে নেন)। তার মৃত্যুর পর তার স্ত্রী রহিমা বেগম গং ওয়ারিশসূত্রে মালিক নিয়েজিত হয়ে ভূমি খেকো ‘হাইপেরিয়ান বিল্ডার্স’- এর মালিক সামসুল হকের অনুকুলে আমমোক্তারনামা প্রদান করেন। (২) জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো: রশিদুল ইসলামের সহযোগিতায় জনৈক মিজানুর রহমান একইভাবে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ভূয়া আরেকজন আহমেদ নেওয়াজ সাজিয়ে পূর্বের রহিমা বেগম গং এর নামজারি বাতিল করে, নিজের নামে নামজারি ও হস্তান্তর অনুমতি গ্রহণ করে একই কোম্পানি ‘হাইপেরিয়ান বিল্ডার্স’-এর নিকট চুক্তিবদ্ধ হন। এই প্লটের অন্যান্য দাবিদারগণ হলেন (৩) দবিরদ্দিন, (৪) রফিকুল ইসলাম, (৫) সামসুর রহমান, (৬) ফজলুল হক এবং সর্বশেষ (৭) মূল বরাদ্দ গ্রহিতার কথিত ওয়ারিশ (পুত্র) আহমেদ নেওয়াজ ভূঁইয়া।
(খ) সাবেক চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামানের অবসর গ্রহণের তিন (০৩) মাস পূর্বে, দাপ্তরিক প্রয়োজনে বিদেশ সফরকালীন বিপুল অর্থ খরচ করে রাশিদুল ইসলাম জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হিসেবে তার পদায়ন নিশ্চিত করেন। এছাড়া ফাইল হতে ক্লায়েন্টদের মোবাইল/কন্ট্রাক্ট নম্বর সংগ্রহ করে বিভিন্ন ত্রুটির অজুহাতে তার নির্ধারিত লোকদের দিয়ে যোগাযোগ করিয়ে ঘুষ দাবি ও গ্রহণ করেন।
(গ) তিনি ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে ‘বিজয় রাকিন’ নামে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্পের (মোট ১৮৫০টি ফ্ল্যাটের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৮৫০টি) নামজারির দায়িত্ব এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে নির্বাহী প্রকৌশলীদের কাছ থেকে সদস্য (ভূমি ও সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা) হিসেবে নিজের (চেয়ারম্যান রাশিদুল ইসলাম) কাছে আনা সংক্রান্ত ফাইল অনুমোদন করেন। কিন্তু সদস্য (ভূমি ও সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা) পদে অতিরিক্ত সচিব মো: মকবুল হোসেন দায়িত্বপ্রাপ্ত হলে তার অসৎ পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। পরবর্তিতে তিনি (চেয়ারম্যান) মিরপুর বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী গিয়াস উদ্দিনকে ডেকে গোপন চুক্তির মাধ্যমে নামজারির ক্ষমতা পুনরায় নির্বাহী প্রকৌশলীদের নিকট ন্যস্ত করেন। ৮০২টি ফ্ল্যাটের নামজারির জন্য প্রতিটিতে ২,২০,০০০ (দুই লক্ষ বিশ হাজার) টাকা করে (কম-বেশি) ফ্ল্যাট মালিকদের কাছ থেকে মোট ১৬ কোটি টাকা আদায় করেন। বর্ণিত টাকার ভাগাভাগি নিয়ে মনোমালিন্য হওয়ার প্রেক্ষিতে, নির্বাহী প্রকৌশলী গিয়াস উদ্দিনকে রাজশাহীতে বদলি করেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে আরো বলা হয়,
(ঘ) মিরপুর ডিভিশন-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী জনাব মুনিফ আহমেদ কর্তৃক জয়নগর আবাসিক প্লট নির্মাণ প্রকল্প ও গ্রেনেড হামলায় ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য ১০০টি ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্পের পিডি’র (প্রজেক্ট ডিরেক্টর) লিখিত অনুমতি এবং চেয়ারম্যান, সদস্য (ভূমি ও সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা), সদস্য (প্রকৌশল) সহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে মৌখিকভাবে অবহিত করে, কোন প্রকার বিল ম্যানেজম্যান্ট (এমবি) ছাড়াই প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘পিবিএল’কে ১৯(ঊনিশ) কোটি টাকা অগ্রিম প্রদান করেন, যা সবসময়ই হয়ে আসছে। কিন্তু চেয়ারম্যান ব্যক্তিগত আক্রোশে তাকে (মুনিফ আহমেদ) ক্ষতিগ্রস্থ করার জন্য বর্ণিত টাকা হতে ০৮(আট) কোটি টাকা আত্মসাৎ করার মিথ্যা অভিযোগ এনে মুনিফ আহমেদকে নি¤œপদে উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী হিসেবে প্লানিং শাখা, ঢাকায় বদলি করেন। এছাড়া চেয়ারম্যান কর্তৃক তার ড্রাইভার খায়ের মোড়ল এবং পরে ড্রাইভার নাছিরকে দিয়ে বর্ণিত নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে মোবাইল ও সশরীরে যোগাযোগ করে বড় এক টাকা (এক কোটি) ঘুষ দাবি করেন। এ বিষয়ে অপরাগতা প্রকাশ করায়, তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে এজেন্ডা বহির্ভূতভাবে চেয়ারম্যান কর্তৃক বোর্ড সভায় বিষয়টি উপস্থাপন করে তাকে সাময়িক বহিষ্কার করেন।”
প্রতিবেদনে বলা হয়, চেয়ারম্যান রাশিদুল ইসলাম বর্ণিত কর্মকর্তার (মুনিফ আহমেদ) বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এ সশরীরে উপস্থিত হয়ে অভিযোগ দাখিল করেন। কিন্তু অধিকতর তদন্তের স্বার্থে দুদক কর্তৃক চাহিত তথ্য-উপাত্ত (নিজে ফেঁসে যাওয়ার ভয়ে) চেয়ারম্যান এখন পর্যন্ত সরবরাহ করেন নি মর্মে জানা যায়। এছাড়া বদলির আদেশের বিরুদ্ধে মুনিফ কর্তৃক মহামান্য হাইকোর্টে রীট পিটিশন নং-১৪০৬৭/১৮ দায়ের করে বদলি আদেশ স্থগিত করলে, চেয়ারম্যান তার ‘মামা’ হিসেবে পরিচিত বিচারপতিকে দিয়ে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার (ভ্যাকেট) করেন।”
(ঙ) রাজশাহীস্থ তেরখাদিয়া প্রকল্পের প্লট বরাদ্দের ক্ষেত্রে ৫০টি প্লটের মধ্যে ৪৪টি প্লট লটারির মাধ্যমে এবং বাকি ০৬টি প্লট চেয়ারম্যান নিজে অসৎ উদ্দেশ্যে একক সিদ্ধান্তে বরাদ্দ প্রদান করেন।
(চ) জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য প্লট/ফ্ল্যাট বরাদ্দের ক্ষেত্রে নির্ধারিত কোটা রয়েছে। সেক্ষেত্রে নির্ধারিত সময়ে আবেদনপত্র দাখিল করতে হয়। কিন্তু চেয়ারম্যান রাশিদুল ইসলাম নির্ধারিত সময়ে আবেদন না করে, বোর্ড সদস্য হিসেবে অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে মোহাম্মদপুর লালমাটিয়া প্রকল্পে ১৮০০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট অবৈধভাবে এবং আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য নিজের নামে বরাদ্দ নিয়েছেন।
(ছ) তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর নিম্নপদে বদলী বাণিজ্যের মাধ্যমে প্রায় ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তিনি অল্প সময়ে গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের ১১ জন পিয়নকে বিভিন্ন সেকশনে বদলি করান, এক্ষেত্রে ড্রাইবার খায়ের মোড়ল ও তার স্ত্রীর সহযোগীতায় তিনি বর্ণিত টাকা পান এবং ড্রাইভারকে দুই লাখ টাকা বকশিশ প্রদান করেন বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, (জ) তিনি বিশেষ সুবিধা গ্রহণের মাধ্যমে ফ্রন্ট লোডিং-এর (গুচ্ছ কাজের মধ্যে কিছু লাভজনক এবং সামান্য লাভজনক কাজ) মাধ্যমে ‘বি আলম’ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে মোহাম্মপুর ‘এফ’ ব্লকের আবাসিক প্রকল্পের ০৪টি ভবনের গুচ্ছ কাজ প্রদান করেন। ‘বি আলম’ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লাভজনক কাজগুলো করে বিল উঠিয়ে লোকসান/সীমিত লাভ হয় এরূপ কাজ অসমাপ্ত রেখে চলে গেছে এবং তাদের মাধ্যমে বাকী কাজ আদায় করে নিতে, চেয়ারম্যান রাশিদুল ইসলাম বিশেষ সুবিধা প্রাপ্ত হওয়ায় এ বিষয়ে তার কোন উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি।
(ঝ) তার মানসিক অত্যাচারে (প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা) সাবেক (১) সদস্য (প্রশাসন) মো: আইউব হোসেন, (২) পরিচালক (প্রশাসন) মো: গোলাম মোস্তফা, (৩) সচিব মো: আব্দুস সাত্তার, (৪) উপ পরিচালক মো: নাসির উদ্দিন মাহমুদ অন্যত্র বদলি হয়ে চলে যেতে বাধ্য হন। তিনি প্রায় ২১/২২ জন কর্মকর্তাকে হয়রানিমূলক বদলি করেন। সর্বশেষ অতিরিক্ত সচিব ও সদস্য (ভূমি ও সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা) মো: মকবুল হোসেনকে ২০/০১/২০১৯ইং তারিখে বদলি করান এবং ২১/০১/২০১৯ইং তারিখে অবমুক্তকরণ পূর্বক ঐদিন তার ব্যবহৃত গাড়িটি অফিসে রেখে দিয়ে তাকে অপমান পূর্বক কর্মস্থল ত্যাগ করতে বাধ্য করেন।
(ঞ) পরিচালক (ভূমি ও সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা) মুকেশ চন্দ্র বিশ্বাস চেয়ারম্যানের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাজন এবং তার সকল অপকর্মের পরামর্শদাতা। মুকেশের স্থায়ী ঠিকানা গোপালগঞ্জ। তার কাছে সেবা- প্রত্যাশীরা আগমণ করলে তিনি সেবা প্রদান না করে হুমকি-ধামকি, ভয়-ভীতি দেখিয়ে তাদেরকে দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেট সদস্যদের দিকে ঠেলে দেন। এছাড়াও চেয়ারম্যানের বিশ^স্ত হিসেবে, পরিচালক (ভূমি ও সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা), সদস্য (প্রশাসন) এবং পরিচালক (প্রশাসন) সহ একাধিক পদে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা থাকার পরেও তিনি এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে এসব বিষয়ে খবরদারি করেছেন।
(ট) চেয়ারম্যান হিসেবে চাকরি দীর্ঘস্থায়ী করতে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারী ও নিজের কয়েকজন পরিচিতদের নিয়ে একটি সিন্ডিকেট তৈরি করেছেন। এছাড়াও সচিব হিসেবে পদোন্নতি নিশ্চিত করতে তিনি সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদেরকে ফ্ল্যাট/প্লট প্রদান করেছেন।
জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারী ও চেয়ারম্যান নিজস্ব বাহিনী সমেত একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। এছাড়া, তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ যেন প্রতিষ্ঠিত হতে না পারে এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয়, এ জন্য তার একাধিক পৃষ্ঠপোষক রয়েছে বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে। রশিদুল ইসলামের দুর্নীতির চিহ্নিত সহযোগী ও পৃষ্ঠপোষক, যাদের নাম তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে এদের মধ্যে রয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিচারপতি, জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের পরিচালক, চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা, গাড়িচালক ও চেয়ারম্যানের নিজের এলাকার একজন ঠিকাদারসহ আরো কয়েকজন।
তদন্ত প্রতিবেদনে যেসব মন্তব্য করা হয়েছে
তদন্ত প্রতিবেদনে এই মর্মে মন্তব্য করা হয় যে, (ক) ২৩/০৯/১৯৮৬ইং তারিখে জারিকৃত এসআরও ৩৬৪/৮৬ মূলে পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে ‘ক’ শ্রেণিতে তালিকাভূক্ত মিরপুরস্থ ১০-বি/১-৯ নং প্লটটি এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে ও শুধুমাত্র আর্থিক (জনৈক মিজানুর রহমানের কাছ থেকে ৫০ (পঞ্চাশ) লাখ টাকা অগ্রিম গ্রহণসহ মোট ০২ (দুই) কোটি টাকা উৎকোচ গ্রহণ) কারণে চেয়ারম্যান মো: রাশিদুল ইসলাম গোপনে ফাইল তলব ও তড়িঘড়ি করে তা বিনামূল্যে বায়াদলিলের মাধ্যমে ভূমিখেকো ‘হাইপেরিয়ান বিল্ডার্স’ কে প্রদান করে। এছাড়া, শুধুমাত্র ব্যক্তিগত লাভের আশায় সরকারি প্লট/ফ্ল্যাট অবৈধ প্রভাব প্রয়োগ করে পছন্দের লোককে প্রদান করেন, যা সরকারি সম্পত্তির তছরুপ এবং অসদাচারণের শামিল মর্মে প্রতীয়মান।
(খ) জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ প্রায় ৬ হাজার একর সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণ করে আসছে। এগুলোর বরাদ্দ, লীজ প্রদান, নামজারি, হস্তান্তর অনুমতি প্রদান, প্লট/ফ্ল্যাট রবাদ্দসহ নানাবিধ কাজে জাগৃক-এর কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বহিরাগত দালালদের সমন্বয়ে সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে এবং বর্তমানে সিন্ডিকেটটিকে প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান নেতৃত্ব দিচ্ছেন মর্মে প্রতীয়মান।
(গ) জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের মতো প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে অনিয়ম, দুর্নীতি, অবৈধ অর্থ লেনদেনের পরিবেশ এমন প্রকট আকার ধারণ করেছে যে, যত সৎ ও দক্ষ কর্মকর্তা পদায়ন দেওয়া হোক না কেন, হয় তাকে দুর্নীতিতে সহায়তা করতে হবে, নতুবা অপমান-লাঞ্ছনা, দুর্নাম নিয়ে বিতাড়িত হবে মর্মে প্রতীয়মান।
(ঘ) জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের ভূ-সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা ডিজিটাল না হওয়ায় সেবা প্রত্যাশীরা এক প্রকারের অন্ধকারে থেকে যান। তাছাড়া ভূ-সম্পত্তির বড় অংশ মালিকানাসহ নানা বিষয়ে ডিসপুটেড থাকা অথবা কৃত্রিমভাবে ডিসপুটেড তৈরি করে অসাধু সিন্ডিকেটের সদস্যরা লাভবান হচ্ছে।
(ঙ) জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের সিবিএ’র সদস্যরা অনেকেই দুর্নীতি ও অনিয়মের সাথে জড়িত এবং চেয়ারম্যান রাশিদুল ইসলামের ইন্ধনে তা কল্পনাতীত পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে মর্মে পরিলক্ষিত হয়।
(চ) চেয়ারম্যানের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচালক (ভূমি ও সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা) মুকেশ চন্দ্র বিশ্বাস কর্তৃক এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে পরিচালক (ভূমি ও সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা), সদস্য (প্রশাসন), পরিচালক (প্রশাসন) সহ একাধিক পদের কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনে প্রভাব বিস্তার করায় প্রাতিষ্ঠানিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে।
তদন্ত প্রতিবেদনে করা সুপারিশসমূহ:
তদন্ত প্রতিবেদনে এই মর্মে সুপারিশ করা হয় যে, (ক) জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো: রাশিদুল ইসলামকে সরকারি সম্পদ তছরুপকরণ, এখতিয়ার বহির্ভূত ক্ষমতা প্রয়োগ, বদলী বাণিজ্য, সুশৃঙ্খল কর্মপরিবেশ নষ্টকরণ এবং ‘জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষে’র ভাবমুর্তি ক্ষুণœ করণের জন্য তাকে অসদাচারণের দায়ে অভিযুক্ত করণসহ তার বিরুদ্ধে ফৌজদারী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা যেতে পারে।
(খ) জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো: রাশিদুল ইসলামের অনিয়ম ও দুর্নীতিতে সহযোগীতা প্রদান ও তাকে সহযোগীতার মাধ্যমে লালন করা অভিযোগে অনুচ্ছেদ-৩ এ বর্ণিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণসহ তদন্ত কমিটির মাধ্যমে ‘জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষে’র অন্যান্য দুর্নীতিবাজদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।
(গ) জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের রক্ষণাবেক্ষণাধীন ৬ হাজার একর সম্পত্তির বরাদ্দ, লিজ দলিল প্রদান, নামজারি, হস্তান্তর অনুমতি প্রদান, প্লট/ফ্ল্যাট বরাদ্দসহ সকল কাজে ডিজিটাল পদ্ধতির ব্যবহার, সেবা প্রত্যাশীদের তথ্য প্রাপ্তি সহজীকরণ নিশ্চিত এবং এক্ষেত্রে বিদ্যমান ত্রুটি চিহ্নিতকরণ ও যথাযথ সমাধানের সুপারিশ করা যেতে পারে।
(ঘ) জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বহিরাগত দালাল সিন্ডিকেট এর অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রতিরোধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা এবং মোবাইল/অনলাইনে অভিযোগ গ্রহণ ও তাৎক্ষণিক সমাধানের জন্য হটলাইন চালুর উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।
(ঙ) সাধারণ বিষয়ের সিদ্ধান্ত প্রশাসনিকভাবে এবং গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে বোর্ড মিটিং-এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং সিদ্ধান্ত বাধ্যতামূলকভাবে নোটিশ বোর্ডে সেঁটে এবং অনলাইনে প্রকাশের নির্দেশনা দেয়া যেতে পারে।
জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদফতরের এই তদন্ত প্রতিবেদন সম্পর্কে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকারকে মুঠোফোনে প্রশ্ন করা হলে তিনি শুধু বলেন, রিপোর্টটি পেয়েছি। এদিকে তদন্ত প্রতিবেদনে ‘জাগৃক’ চেয়ারম্যান রাশিদুল ইসলামের দুর্নীতি ও অপকর্মের ফিরিস্তি ওঠে আসলেও এ বিষয়ে রাশিদুল ইসলাম একেবারেই নির্বিকার বলে জানা গেছে। সাপ্তাহিক শীর্ষ কাগজের পক্ষ থেকে বেশ ক’বার চেয়ারম্যান রাশিদুল ইসলামের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি। পর পর তিন দিন তার মোবাইলে কয়েকবার করে ফোন করা হয়েছে। একাধিকবার এসএমএস দেওয়া হয়েছে। এমনকি চেয়ারম্যানের দফতরে সশরীরে যাওয়ার পরও তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। জাগৃক’র অনেকেই বলছেন, চেয়ারম্যানের উদ্ধত আচরণে বোঝা যায়, প্রশাসন বা সরকার তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থাই গ্রহণ করতে পারবে না বলে তারা মনে করছেন। কারণ তার সঙ্গে রয়েছে বিভিন্ন স্থানের প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ। চেয়ারম্যান রাশিদুল ইসলামের হাতে অপমানিত, অপদস্থ ও বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাকে অপসারণসহ তার বিরূদ্ধে ওঠে আসা তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনকে আমলে নিয়ে, সহযোগীদেরসহ তার বিরূদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।