বাংলাদেশ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনকে গুরুত্ব দিচ্ছে: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

কূটনীতিক প্রতিবেদক/লিগ্যাল ভয়েস টোয়েন্টিফোর :

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম রোহিঙ্গা ইস্যুতে যুব সমাজের মতামত জানতে চেয়ে বলেছেন, ‘সরকার তাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের প্রতি গুরুত্ব দিয়েছে।’ সেন্টার ফর রিসার্চ এন্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) ‘লেটস টক’ অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ একদল তরুণের সঙ্গে এবং মতবিনিময় অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘সরকার জনাকীর্ণ ক্যাম্পগুলো থেকে প্রায় ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ রোহিঙ্গা নতুন অধিগ্রহণ করা ভাষান চরে নিয়ে যাবে, যাতে তারা প্রত্যাবাসনের আগে অপেক্ষাকৃত ভালো জীবনযাপন ও শিক্ষার সুযোগ পায়।’

যুবকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে অংশ নেওয়া বাংলাদেশের ইউএনএইচসিআর’র আবাসিক প্রতিনিধি স্টিভেন করলিস রোহিঙ্গা ইস্যুর সমাধানে বাংলাদেশের উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। ইউএনএইচসিআর প্রতিনিধি বলেন, ‘২২ আগস্ট দ্বিতীয় পদক্ষেপের পরে কিছু ইতিবাচক দিক দেখতে পেয়েছি। এই প্রথমবারের রোহিঙ্গা মিয়ানমার সরকারকে তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে বলেছে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচনা বিন্দু।’ স্টিভেন করলিস রোহিঙ্গাদের দাবির প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ‘এসব দাবির মধ্যে রয়েছে তাদের ফেরার আগে নাগরিকত্ব ও নিরাপত্তার দাবি।’

দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশ সরকার এই সময়ে রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরত না যাওয়ার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের প্রতি পূর্ণ সম্মান দেখিয়েছে একথা উল্লেখ করে করলিস বলেন, ‘সেখানে মিয়ানমার ও চীনের দূতাবাস প্রতিনিধিরা ছিলেন তারা সেখানে প্রত্যাবাসনের প্রস্তুতি দেখতে পেয়েছেন। বর্ষা মৌসুমের পরে ভাষানচরের ব্যাপারে জাতিসংঘ সরকারের সঙ্গে পুনরায় আলোচনা শুরু করবে।’

২০১৭ সালের আগস্টের মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ‘জাতিগত নিধনের’ মুখে ৭ লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়ার পরে কয়েক দশকের রোহিঙ্গা সংকট নতুন মাত্রা লাভ করে। মানবিক বিবেচনায় বাংলাদেশ সীমান্ত খুলে দেয়। তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থনে দুইবার তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নিলেও মিয়ানমার সরকারের পক্ষ থেকে খুব সামান্যই সাড়া পাওয়া গেছে।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার এই নীতি মেনে চলছে যে সকল রোহিঙ্গার মিয়ানমার ফেরার সিদ্ধান্ত তাদের স্বেচ্ছাকৃত হতে হবে।’ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী তরুণরা নিরাপত্তা থেকে বনভূমিতে বিরূপ প্রভাব এবং তাদের দীর্ঘতার অবস্থানের কারণে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব নিয়ে উদ্বেগের কথা জানান। তারা স্থানীয় জনগণের ভোগান্তির কথাও তুলে ধরেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের কোন দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা নেই। তবে আমরা আমাদের জনগণের স্বার্থ, আমাদের সার্বভৌমত্ব এবং আমাদের স্বাধীনতা সর্বাগ্রে দেখবো, এর চেয়ে বড় কিছু হতে পারে না। বাংলাদেশকে যে সব দেশ রোহিঙ্গা শিশুদের আনুষ্ঠানিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে বলেন তারা একথা মিয়ানমারকে বলতে পারেন।’

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *