সরকার দুর্নীতি দূর করে সুনীতি প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর : আইনমন্ত্রী

সাইয়্যেদ মো: রবিন/লিগ্যাল ভয়েস টোয়েন্টিফোর :

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বর্তমান সরকার দুর্নীতি দূর করে দেশে সুনীতি প্রতিষ্ঠা করতে বদ্ধপরিকর।

শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ডাচ-বাংলা ব্যাংক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণিতে অধ্যায়নরত দুই সহস্রাধিক দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীকে বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

আনিসুল হক বলেন, বর্তমানে সমাজের একটি বড় সমস্যা হলো দুর্নীতি। দুর্নীতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নীতি, যা সমাজের বিরাট অংশকে শোষিত ও বঞ্চিত করছে। সমাজে ব্যাপক বৈষম্য তৈরি করছে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে বাধাগ্রস্থ করছে। সে কারণেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছে এবং এই নীতি বাস্তবায়নের জন্য দুর্নীতি বিরোধী অভিযান চালানো হচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, শিক্ষার সব সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে গেলেও একটি বিষয় জাতিকে ভাবিয়ে তুলেছে। তা হলো সারা বিশ্বে এই তত্ত্ব প্রতিষ্ঠিত যে, যে জাতি যত উন্নত ও শিক্ষিত সে জাতির মধ্যে অপরাধ প্রবণতা তত কম। কিন্তু বাংলাদেশে উন্নয়নের গতি ও শিক্ষার হার বাড়লেও সামাজিক অপরাধ কমছে না।

তিনি বলেন, সবচেয়ে বেশি উদ্বেগের বিষয় হলো শিক্ষিত লোকের মাধ্যমেই অপরাধগুলো বেশি ঘটছে এবং এমন কোন অপরাধ নেই যেটা শিক্ষিত লোকের মাধ্যমে ঘটছে না। এটা কেন হচ্ছে তা নিয়ে ভাববার সময় এসেছে। নিজ নিজ পরিবার, সমাজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে।

আইনমন্ত্রী শিক্ষার আসল মর্মার্থ আত্বস্থ করে শিক্ষার্থীদের মাদক ও অনৈতিক কাজের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার এ ব্যাপারে সব ধরণের সহযোগিতা করবে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।

তিনি বলেন, যুগোপযোগী ও মানসম্পন্ন শিক্ষা ব্যবস্থা ছাড়া সুশিক্ষিত ও দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলা সম্ভব নয়। তাই সবার জন্য মানসম্পন্ন শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করা জাতীয় কর্তব্য। সরকারের একার পক্ষে এই বিশাল দায়িত্ব পালন করা দূরূহ ব্যাপার। সরকারের পাশাপাশি সব বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এমনকি ব্যক্তি বিশেষ এগিয়ে এলে সরকার নতুনভাবে উজ্জীবিত হবে।

আনিসুল হক বলেন, সরকারের মূল লক্ষ্য হচ্ছে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করা এবং এটি করতে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন হচ্ছে মানসম্পন্ন শিক্ষা।

মন্ত্রী বলেন, আজকের ছাত্র-ছাত্রীরাই আগামীদিন দেশ পরিচালনা করবে। তারাই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করবে। তাই তরুণ সমাজের মেধা বিকাশে সঠিক যত্ন ও রক্ষণাবেক্ষণ করা সবার নৈতিক দায়িত্ব।

তিনি বলেন, অতীতে দেশে মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রদানের ক্ষেত্রে চরম বৈষম্য ছিল। এই বৈষম্য ছিল শহর ও গ্রামীণ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে, ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে, শিক্ষিত ও অশিক্ষিত পরিবারের মধ্যে এমনকি একই শহরের ভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে। কিন্তু শেখ হাসিনার সরকারের কার্যকর বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ার ফলে শিক্ষাক্ষেত্রে ওই বৈষম্য অনেক কমে এসেছে।

আনিসুল হক বলেন, এখন গ্রাম ও শহরের লেখাপড়া সমান তালে চলছে। শিক্ষার্থী যে প্রতিষ্ঠানেই পড়ুক না কেন সে যেন মানসম্পন্ন শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হচ্ছে। শিক্ষা নিয়ে বাণিজ্য করার পথ বন্ধ করা হচ্ছে। কোচিং বাণিজ্য বন্ধ করতে নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

ডাচ্-বাংলা ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান সায়েম আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির ও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম মো. শিরিন বক্তৃতা করেন।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *