দুর্নীতিবাজ যত বড়ই হোক পার পাবে না : রাষ্ট্রপতি
আব্দুল হাই /লিগ্যাল ভয়েস টোয়েন্টিফোর :
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সমাজ থেকে অনিয়ম-দুর্নীতি দূর করতে সরকারের অভিযান শুরুর প্রশংসা করে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন যে, দুর্নীতিবাজ যত বড়ই হোক পার পাবে না।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সরকার ইতোমধ্যে সমাজ থেকে অনিয়ম-দুর্নীতি দূর করতে অভিযান শুরু করেছে। আপনি যত বড় নেতা, কর্মকর্তা, প্রকৌশলী, ব্যবসায়ী বা ঠিকাদার হন না কেন অনিয়ম-দুর্নীতি করে পার পাবেন না।’
রাষ্ট্রপতি জনাব মো. আবদুল হামিদ গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিশ্ব বসতি দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করছিলেন।
রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন যে, এ অভিযান দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ইতিবাচক অবদান রাখবে এবং অবকাঠামোসহ উন্নয়নের সকল ক্ষেত্রে গুণগতমান নিশ্চিতে ভূমিকা রাখবে।
রাষ্ট্রপতি বিভিন্ন সরকারি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে কিছু দুর্নীতিবাজ লোকের অসাধু কর্মকান্ডে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ব্যবসার নামে প্রতারণা কোনভাবেই প্রহণযোগ্য হতে পারে না।
মো. হামিদ বলেন, ‘কাজের প্রতিটি স্তরে সঠিকভাবে তদারকি হলে রডের পরিবর্তে বাঁশ আর সিমেন্টের বদলে বালি ব্যবহারের গল্প শুনতে হবে না।’
রাষ্ট্রপতি ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট অন্যদের অহেতুক বিলম্ব করে প্রকল্প ব্যয় বাড়িয়ে ফায়দা লোটার মনমানসিকতা পরিহার করার আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতি হামিদ জনগণের টাকায় বাস্তবায়িত প্রকল্প কাজের গুণগত মানের ব্যাপারে কোন ধরণের কম্প্রোমাইজ বরদাশত করা হবে না উল্লেখ করে বলেন, ‘সৎভাবে ব্যবসা করবেন, সরকার আপনাদের পাশে থাকবে এবং সবধরণের সহযোগিতা দেবে।’
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রকল্পগুলোকে দুর্নীতি থেকে রক্ষা করতে এবং বিশেষভাবে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেয়ার জন্য প্রকল্পের কর্মকর্তা, প্রকৌশলী ও সংশ্লিষ্ট সবার দায়িত্বসমূহ সুনির্দিষ্ট করে দেয়ার পরামর্শ দেন।
বাংলাদেশ দ্রুত উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, এরই মধ্যে বাংলাদেশ মাত্র ১৩ মাসে ২০-তলা ভবন নির্মাণের মত যথেষ্ট সক্ষমতা অর্জন করেছে। তিনি বলেন, ‘তবে কিছু দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তির কারণে এই অর্জনকে কলঙ্কিত করা যায় না। এই ধরণের কার্যকলাপে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে এবং গণতান্ত্রিক সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করে দেয়।’
বাংলাদেশের বিদ্যমান বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়ে কথা বলার সময় রাষ্ট্রপতি সময়োপযোগী পরিকল্পনা গ্রহণের সঙ্গে সমন্বিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, সরকার নগরায়ন ও শিল্প-কারখানা স্থাপনসহ সব ধরণের কার্যক্রমের জন্য পরিবেশ রক্ষায় বিশেষ গুরুত্ব দেয়ার পাশাপাশি আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থাকেও গুরুত্ব দিচ্ছে।
রাষ্ট্রপতি, উদ্ভাবনী ধারণার প্রন্টিয়ার প্রযুক্তিগুলোকে কাজে লাগিয়ে বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তরের মাধ্যমে পরিবেশ দূষণ রোধ করতে গুরুত্বারোপ করেন।
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ.ম রেজাউল করিম এমপি, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব এম শহীদ উল্লাহ খন্দকার, বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি মিয়া সিপ্পো, বঙ্গভবনের সংশ্লিষ্ট সচিবগণ উপস্থিত ছিলেন।