রফতানি সম্প্রসারণের লক্ষ্যে এফটিএ-কে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে : বাণিজ্যমন্ত্রী
ভূইয়া আসাদুজ্জামান /লিগ্যাল ভয়েস টোয়েন্টিফোর :
রফতানি বাণিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে সরকার মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিকে (এফটিএ) সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
তিনি বলেন, ‘২০২৪ সালে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হবে। তখন আমাদের কিছু বাণিজ্য সুবিধা যেমন কমে আসবে,পাশাপাশি নতুন নতুন প্রতিযোগীদের সাথে লড়াই করতে হবে। ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তাই আমাদের এখনই এফটিএ করার প্রয়োজন। সরকারও সেটিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে।’
শনিবার রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে ‘বৈশ্বিক মুক্ত বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদারকরণ’ বিষয়ক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
কমনওয়েলথ অফ ইন্ডিপেন্ডেড স্টেট-বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (সিআইএস-বিসিসিআই) সেমিনারের আয়োজন করে।
সিআইএস-বিসিসিআই সভাপতি হাবিব উল্লাহ ডনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো.আতিকুল ইসলাম,প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মূখ্যসচিব মো. নজিবুর রহমান, বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দিন, রফতানিমূখী তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমই-এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফয়সাল সামাদ ও বিকেএমইএর প্রথম সহসভাপতি মো. হাতেম, বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. মুস্তাফিজুর রহমান, বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব শরীফা খান প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
সেমিনারে সিআইএস-বিসিসিআই উপদেষ্টা মনজুর আহমেদ ও সংগঠনের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি লোকমান হোসেন আকাশ যৌথভাবে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
ইউরোশিয়া ও মার্কোসাভূক্ত দেশের সঙ্গে এফটিএ স্বাক্ষর হলে সেখানে বাংলাদেশের রফতানি সম্প্রসারণের অবারিত সুযোগ রয়েছে উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ইউরোশিয়ায় বাংলাদেশের পোশাক পণ্যের বড় বাজার রয়েছে। রাশিয়া ও এর পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে কমপক্ষে ৪ থেকে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পোশাক রফতানি করা যাবে।এছাড়া মার্কোসাভূক্ত চারটি দেশ ব্রাজিল,আর্জেনটিনা,প্যারাগুয়ে ও উরুগুয়েতে আমরা পোশাক রফতানি করতে পারি। আমরা এসব দেশের সঙ্গে এফটিএ স্বাক্ষর করতে প্রস্তুতি গ্রহণ করছি বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, ব্রাজিল আমাদের কাছ থেকে পোশাক কিনবে,এর বিনিময়ে তারা গরুর মাংশ পাঠাতে চাই। আবার গরুর মাংশ আনার বিষয়ে আমাদের মাংশ ব্যবসায়ীদের আপত্তি রয়েছে। তাই জাতীয় স্বার্থ বিবেচনায় রেখে কোনটিতে আমরা লাভবান হবো, সেই হিসাব করতে হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মূখ্যসচিব মো. নজিবুর রহমান বলেন,বর্তমান সরকার অত্যন্ত ব্যবসাবান্ধব। আমরা প্রতিনিয়ত ব্যবসায় পরিবেশের উন্নয়নে কাজ করছি। আমাদের লক্ষ্য হলো ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও মানুষের জীবনমানে উন্নতি ঘটানো।
বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দিন জানান, ভারত, চীন, রাশিয়া, ব্রাজিল, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলংকা, ভূটানসহ বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে এফটিএ স্বাক্ষরের বিষয়ে সরকার অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে।
মূল প্রবন্ধে মনজুর আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত একটি দেশের সঙ্গেও এফটিএ স্বাক্ষর করতে পারিনি। অথচ আমাদের প্রতিযোগী দেশ ভিয়েতনাম একাধিক দেশের সঙ্গে এফটিএ স্বাক্ষর করেছে।
তারা এফটিএ’র সুবিধা ইতোমধ্যে পেতে শুরু করেছে, এ কারণে তাদের বার্ষিক রফতানি দ্রুত সম্প্রসারণ হচ্ছে।
তিনি মনে করেন ২০২৪ সালের পর বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হবে, তাই এখনই এফটিএ স্বাক্ষরের পথে দ্রুত অগ্রসর হতে হবে।