জানজট নিরসনে চারলেন হচ্ছে সব আন্তঃজেলা সড়ক
সিনিয়র রিপোর্টার/ লিগ্যাল ভয়েস টোয়েন্টিফোর :
শহরের যানজট কমিয়ে নিরাপদ সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা স্থাপন করতে আন্তঃজেলা সড়কগুলো চারলেন করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ইতিমধ্যে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে দেশের সব আন্তঃজেলা সড়ক চারলেনে উন্নীত করা হবে। নিরাপদ সড়ক যোগাযোগের পাশাপাশি সড়কে যেন গতি নিশ্চিত হয় সে ব্যাপারে জোর দিচ্ছে সরকার।
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
আজকের একনেক বৈঠকে সড়ক উন্নয়ন ও বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন সম্প্রসারণ নিয়ে ছয়টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলোতে মোট খরচ হবে সাত হাজার ৩১২ কোটি ৫১ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে দুই হাজার ৭৭৮ কোটি ৫১ লাখ টাকা, বৈদেশিক সহায়তা থেকে চার হাজার ২১২ কোটি ৩০ লাখ টাকা এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থা থেকে ৩২১ কোটি ৬৮ লাখ টাকা খরচ হবে।
এম এ মান্নান বলেন, সরকারের এখন প্রধান দুটি লক্ষ্য সড়ক উন্নয়ন এবং বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটানো। সেই জন্য এই একনেকে ছয়টি প্রকল্পের মধ্যে পাঁচটিই হচ্ছে সড়কের। আমরা সড়কের জাল বিস্তার করেছি। এখল সুফল পাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী চান আরও গতি।
সড়ক সংস্কার করা সরকারের লক্ষ্য জানিয়ে এম এ মান্নান বলেন, বাঁক সোজা করা এবং পুরনো লক্কর-ঝক্কর সেতু বাতিল করে নতুন সেতু নির্মাণ করা। এছাড়া আন্তঃজেলা সড়কগুলো চারলেন করা হবে। এজন্য যা যা করার সব করা হবে। এছাড়া, সড়কের দুই পাশে গাছ লাগানেরও পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, উন্নয়নের আরেক রাজা বিদ্যুৎ। তাই বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন নির্মাণে একটি বড় প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া অনুশাসনের কত শতাংশ বাস্তবায়িত হয়েছে এমন এক প্রশ্নের জবাবে
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, তার অনুশাসন নিয়ে যে বই প্রকাশ করা হয়েছে এতেই তিনি খুশি হয়েছেন। তাছাড়া এগুলোর বাস্তবায়ন তো যখনই তিনি অনুশাসন দেন তখনই শুরু হয়ে যায়। এটা শতাংশ হিসেবে বলা যাবে না যে, এখন পর্যন্ত কত শতাংশ অনুশাসন বাস্তবায়ন হয়েছে। তবে এসব অনুশাসন অবশ্য পালনীয়। প্রকল্প পরিচালকদের এগুলো মেনেই কাজ করতে বলা হবে। সেই সঙ্গে পরিকল্পনা কমিশন উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) প্রক্রিয়াকরণ করার সময় এসব অনুশাসন মিলিয়ে দেখবে।
অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে, পলবাড়ি-দড়াটানা-মনিহার-মুড়ালী জাতীয় মহাসড়ক এর মনিহার হতে মুড়ালী পর্যন্ত চারলেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের খরচ ১৩১ কোটি ১৭ লাখ টাকা।
বগুড়া-সারিয়াকান্দি জেলা মহাসড়ক উন্নয়ন এবং বাঙ্গালী নদীর উপর আড়িয়ারঘাট সেতু নির্মাণ প্রকল্পের খরচ হবে ২৪০ কোটি টাকা। মাগুরা-নড়াইল আঞ্চলিক মহাসড়কের বাঁক সরলীকরণসহ যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৭২৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
ফেনী আলোকদিয়া-ভালুকিয়া-লস্করহাট-ছাগলনাইয়া জেলা মহাসড়কটি যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৫৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। নাটোর রোড হতে রাজশাহী বাইপাস পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ২০৬ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। ঢাকা এবং পশ্চিমাঞ্চলীয় গ্রিড সঞ্চালন ব্যবস্থা সম্প্রসারণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে পাঁচ হাজার ৯৪৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।
ঢাকা এবং পশ্চিমাঞ্চলীয় গ্রিড সঞ্চালন ব্যবস্থা সম্প্রসারণ প্রকল্পটি উদ্যোগী মন্ত্রণালয় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। বাস্তবায়ন করবেপাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অফ বাংলাদেশ লিমিটেড (পিজিসিবি)।
প্রকল্পের উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানা যায়, বিদ্যমান সঞ্চালন অবকাঠামো ব্যবস্থার ক্ষমতা বৃদ্ধি ও শক্তিশালীকরণের মাধ্যমে ঢাকার ডেসকো এলাকা এবং বাংলাদেশের পশ্চিম, উত্তর এবং দক্ষিণ অঞ্চলের ক্রমবর্ধমান আবাসিক, শিল্প ও বাণিজ্যিক বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণ করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা সচিব নুরুল আমিন, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম এবং পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী।