ঘুমের মধ্যেই চিরতরে বিদায় নেন চার্লি চ্যাপলিন
বিনোদন ডেস্ক / লিগ্যাল ভয়েস টোয়েন্টিফোর :
চলচ্চিত্র অভিনেতা ও পরিচালক চার্লি চ্যাপলিন। আজ তার চলে যাওয়ার দিন। ১৯৭৭ সালের আজের এই দিনে জীবন প্রদীপ নিভে যায় এই তার। সেদিন চ্যাপলিন ঘুমের মধ্যেই চিরতরে বিদায় নেন।
বিশ শতকের নির্বাক এবং সবাক যুগের সেরা চলচ্চিত্রকার অভিনেতা, পরিচালক, স্ক্রিন রাইটার, সম্পাদক, কাহিনীকার, গীতকার এবং আরও অনেক কিছু নিয়ে অবিস্মরণীয় হয়ে রয়েছেন চার্লি চ্যাপলিন। তিনি ১৮৮৯ সালের ১৬ এপ্রিল জন্মগ্রহণ করেন।
প্রায় ৮৮ বছর বয়সে গান, নাটক, চলচ্চিত্র ছাড়াও কবিতা লেখা, গল্প লেখা, প্রবন্ধ চর্চা, বক্তৃতা ও নানা সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি।
পাঁচ-সাত বছর বয়সেই তার গায়িকা মা একদিন গান গাইতে গাইতে কণ্ঠরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
দর্শক ও শ্রোতারা এতে বিরক্ত হয়ে উঠলেন। সেই থিয়েটার মঞ্চের ম্যানেজার শিশু চার্লিকে নামিয়ে দেন গান গাইতে। চার্লির অভিনয় সহ গান শুনে মুগ্ধ হন শ্রোতারা। কষ্টের কথা হচ্ছে- তার শৈশবকাল কেটেছে দারিদ্রে, মা-বাবার ঝগড়া শুনে। জীবনের প্রথম পর্বে ইংল্যান্ডের ভ্রাম্যমাণ নাটকের দলে কাজ করেছেন। ‘ফুটবল ম্যাচ’ নাটকে কৌতুক চরিত্রে অভিনয় করে দর্শদের মুগ্ধ করেন।
সিনেমায় প্রবেশ এবং আমেরিকায় কিস্টোন ফিল্ম কোম্পানিতে যোগদান তার জীবনের পালাবদল ঘটায়। ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারিতে ‘মেকিং এ লেডিস’ (একরিল) তার প্রথম অভিনয় চলচ্চিত্র। কিন্তু গোলাকার টুপি, ঢোলা ট্র্যাউজার, টাইট জ্যাকেট, আর বেঢপ জুতো নিয়ে ভবঘুরে চার্লির আবির্ভাব ‘কিড অটো রেসেস অ্যাট ভেনিস’ চলচ্চিত্রে।
তারপর আর পেছনে নয়, সামনে এগিয়ে চলা। চার্লি চ্যাপলিন হয়ে উঠেছেন ‘ভবঘুরে মিলিয়োনেয়ার’। ১৯১৬ সাল থেকেই বিশ্বজোড়া পরিচিতি। আমেরিকা, ইউরোপ শুধু নয়, গোটা পৃথিবী জুড়ে। ভাবতবর্ষেও তার জনপ্রিয়তা কম ছিল না। নির্বাক চলচ্চিত্র বলেই পৃথিবীর ভিন্ন ভিন্ন ভাষাভাষী অঞ্চলের মানুষের কাছে চলচ্চিত্রের আবেদন সহজেই পৌঁছে যায়।
১৯১৪-১৯৬৭ পর্যন্ত ৮১টি ছোটবড় সিনেমায় তিনি অভিনয় করেছেন। শেষ ছবি মার্লন ব্রান্ডো আর সোফিয়া লরেন অভিনীত ‘এ কাউন্টেন ফ্রম হংকং’। চ্যাপলিন জাহাজের স্টুয়াটের ছোট চরিত্রে অভিনয় করেন। সাধ ছিল কিন্তু সাধ্য ছিল না। কন্যা ভিক্টোরিয়াকে নিয়ে ‘দ্যা ফিক’ নামে ডানাওয়ালা এক বাচ্চা মেয়ে বিয়ে করে চলে গেছেন অন্যত্র। শেষ জীবনের কয়েক বছর কেটেছে অসুস্থতায়।
প্রায় নিঃসঙ্গ অবস্থায় সুইজারল্যান্ডে মারা যান তিনি। ১৯৭৮ সালের ৩ মার্চ সুইজারল্যান্ডের করসিয়ার-সার-ভেভে গোরস্তান থেকে চুরি হয়ে যায় চার্লি চ্যাপলিনের মৃতদেহ। অবশেষে ১৮ মার্চ পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করে এবং পুনরায় সমাহিত করা হয় চার্লি চ্যাপলিনকে।