বিল গেটসের প্রশংসায় ভাসছেন বাংলাদেশি বাবা-মেয়ে
আন্তর্জাতিক ডেস্ক/ লিগ্যাল ভয়েস টোয়েন্টিফোর :
মাইক্রোসফটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস বাংলাদেশের শিশুমৃত্যু হ্রাস করার জন্য বাংলাদেশের বাবা-কন্যা মাইক্রোবায়োলজিস্টের দুজনের কাজের প্রশংসা করেছেন। বাবা মাইক্রোবায়োলজির অধ্যাপক ডা. সমির সাহার সঙ্গে বর্তমানে শিশু স্বাস্থ্য গবেষণা ফাউন্ডেশন (সিএইচআরএফ)-এ কাজ করছেন ডা. সেঁজুতি সাহা।
গত মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বিল গেটস তার ব্যক্তিগত ব্লগ গেটসনোটসে লিখেছেন, একসঙ্গে, বাবা-মেয়ের এই টিম বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যের একটি গতিশীল জুটি।
ইতিবাচক কাজে সমাজের রূপ বদলে দেয়ার স্বপ্ন নিয়ে যারা কাজ করেন তাদের নিয়ে নিয়মিত ‘বিল গেটস হিরোস ইন দ্য ফিল্ড’ শিরোনামে ব্লগ লেখেন মাইক্রোসফটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। মঙ্গলবার বিল গেটস বাংলাদেশি এই বাবা-মেয়েকে বেছে নিয়েছেন তার এবারের নায়ক হিসেবে।
তিনি লিখেন, নিম্ন আয়ের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পদশালী দেশের স্বাস্থ্যসেবার পার্থক্য, যেখানে শিশু মৃত্যুর হার বেশি রয়েছে; সেসব কমিয়ে আনতে কাজ করছেন তারা। এক্ষেত্রে তারা উপাত্ত, রোগ নির্ণয়ের সর্বাধুনিক পদ্ধতি এবং সংক্রামক ব্যাধির বিরুদ্ধে টিকাদানকে কাজে লাগাচ্ছেন।
তাদের এই গবেষণা শুধু বাংলাদেশেই নয় বরং একই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশেও তাদের কাজ ব্যবহৃত হচ্ছে, লিখেন গেটস।
বাংলাদেশ এবং অন্যান্য দেশে শিশু মৃত্যুর হার হ্রাস করতে সিএইচআরএফ প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করেন ডা. সামির।
গেটস বলেন, সিএইচআরএফ-র কাজ এবং শিশুদের জন্য সরকারের গৃহীত টিকাদান কর্মসূচি এবং স্বাস্থ্যসেবায় জোরালো সহায়তার কারণে বাংলাদেশে পাঁচ বছর বয়সের নিচের শিশু মৃত্যুহার কমেছে এবং সার্বিক স্বাস্থ্যসেবারও উন্নয়ন ঘটেছে। বাংলাদেশে এখন প্রায় ৯৮ শতাংশ টিকাদান কর্মসূচির আওতায় এসেছে বলেও জানান তিনি।
ডা. সমিরের গেটস লিখেন, তিনি ঢাকা শিশু হাসপাতালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান। শিশুমৃত্যুর বড় দুই ঘাতক ব্যাধি মেনিনজাইটিস ও নিউমোনিয়া রোগের টিকা ব্যবহারে বাংলাদেশকে সহায়তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন তিনি।
মাইক্রোসফটের এই সহ-প্রতিষ্ঠাতা আরও লিখেন, স্বাস্থ্যখাতের উন্নতি ঘটলেও বাংলাদেশের এখনও অনেক পথ পাড়ি দেয়ার রয়েছে। চলতি বছরে গোলকিপারস ইভেন্টে অংশ নিয়ে ডা. সেঁজুতি সাহা বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে এখনও যে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে সেসব গল্প তুলে ধরেছেন। শিশুদের চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ চিকিৎসা কেন্দ্র ঢাকা শিশু হাসপাতালে প্রত্যেক বছর ৬ হাজারের বেশি শিশু ভর্তি না হতে পেরে ফিরে যায়। কারণ হাসপাতালটি ৬৬৫ শয্যার। আর এসব আসন সবসময় পূর্ণ থাকে।
ডা. সমির ও ডা. সেঁজুতির কাজের প্রশংসা করে নিজের ব্লগের ইতি টেনেছেন গেটস। তিনি লিখেন, এই বাবা-মেয়ের কাজের কল্যাণে বাংলাদেশ এমন এক ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, যেখানে সংক্রামক ব্যাধি খুব কম থাকবে এবং হাসপাতালের শয্যাগুলো ফাঁকা থাকবে।