মোদীর ভারতে উগ্র-জাতীয়তাবাদের উত্থানে ব্যাহত মুক্ত চিন্তাধারা: জর্জ সোরস

 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক / লিগ্যাল ভয়েস টোয়েন্টিফোর :

জাতীয়তাবাদের ভয়ঙ্কর উত্থান হচ্ছে ভারতে। যা মুক্ত সমাজের সব চেয়ে বড় শত্রু। এমনটাই মনে করেন মার্কিন মানবতাবাদী জর্জ সোরস । দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোমনিক ফোরামে বক্তব্য রাখছিলেন তিনি। বর্তমানে মুক্ত চিন্তাধারা ও সমাজ নানান প্রতিরোধের সম্মুখীন। যা তুলে ধরতে গিয়ে ভারতের উদাহরণ টেনে আনেন মার্কিন-হাঙ্গেরিও এই মানবতাবাদী। সারসের মতে ভারতে মুক্ত সমাজ, চিন্তাধার আজ, ‘ভয়ঙ্করভাবে ধাক্কা’ খেয়েছে। সিএএ ঘিরে দেশজুড়ে বিতর্ক। মোদী সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ, বিক্ষোভে গর্জে উঠছে পড়ুয়া থেকে সাধারণ মানুষ। সেই প্রেক্ষাপটে সারসের মন্তব্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ।

জর্জ সোরস বলেছেন, ‘ভারতে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নরেন্দ্র মোদী সরকার কাশ্মীরে শাস্তিমূলক পদক্ষেপের মধ্যে দিয়ে হিন্দু রাষ্ট্র গঠনে উদ্যোগী।

সরকারী পদক্ষেপের মাধ্যমে মুসলমানদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হচ্ছে। এটা ভারতে সব চেয়ে বড় এবং ভয়ঙ্কর ধাক্কা।’ সারসের মতে, বর্তমানে আমরা ইতিহাসের ‘রূপান্তরশীল মুহূর্তের’ মধ্যে বসবাস করছি। যেখানে উন্মুক্ত সমাজ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মত দুটি বিষয় ‘সভ্যতার অস্তিত্ব রক্ষায়’ ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ। এক্ষেত্রে মানুষের চাহিদা মেটানোর বদলে ওই পরিস্থিতিকে নিজেদের স্বার্থে কাজে লাগায় রাজনীতিবিদরা। ফলে, মুক্ত সমাজে বসবাসকারীদের মধ্যে ‘ব্যাপক হতাশার’ সৃষ্টি হয়।

‘তবে, মুক্ত সমাজের অস্তিত্ব রক্ষার ক্ষেত্রে কিছু আশা রয়ে গিয়েছে। দমনমূলক পরিধির মধ্যেও তাদেরও (রাজনীতিবিদ) কিছু দুর্বলতা রয়েছে। স্বৈরশাসনের সবচেয়ে বড় ঘাটতি হল যখন তারা ক্ষমতায় থাকে বুঝতে পারে না কখন কিভাবে নিপীড়নের মাত্রা বন্ধ করবে। তাদের নিয়ন্ত্রণের মাত্রাহীনতাই মুক্ত সমাজকে কিছুটা স্থায়িত্ব দেয়। এর ফল স্বরূপ, নীপিড়িতরা বিদ্রোহ করে। গোটা বিশ্বে এই ধরনের ঘটনা ঘটছে।’ মনে করেন মানবতাবাদী জর্জ সোরস।

সভ্যতার অস্তিত্ব রক্ষায় জলবায়ুর গুরুত্বের কথা তুলে ধরতে গিয়ে সারস বলেন, ‘২০২০ ও পরবর্তী কয়েক বছর সি জিংপিং বা ট্রাম্পেরই নয়, গোটা বিশ্বের ভাগ্য নির্ধারণ করবে।’ পঠনপাঠন ও গবেষণার জন্য ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দিয়ে এক বিশ্ব শিক্ষা নেটওয়ার্ক গঠনের কথা বলা হয়েছে, যা আসলে উন্মুক্ত সমাজ বিশ্ববিদ্যালয় নেটওয়ার্ক। দীর্ঘকালীন এক প্রক্রিয়ায় ‘সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা এবং পঠনপাঠনের স্বাধীনতা ব্যক্তির স্বায়ত্তশাসনকে শক্তিশালী করে’ বলে মনে করেন জর্জ সোরস।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *