লামায় বিষপানে গৃহবধূর আত্মহত্যা : স্বামী পলাতক
মো. নুরুল করিম আরমান, লামা প্রতিনিধি :
বান্দরবান : প্রেম করে বিয়ের তিন মাস যেতে না যেতেই স্বামীর সাথে অভিমান করে বান্দরবান জেলার লামা পৌরসভা এলাকায় বিষপান করে মর্জিনা বেগম (২০) নামের এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার দিনগত রাতে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে মারা যান তিনি। মর্জিনা আক্তার পৌরসভার সাবেক বিলছড়ি গ্রামের বাসিন্দা আবদুর রশিদ আলীর মেয়ে ও কুড়ালিয়ারটেক গ্রামের বাসিন্দা নাঈম হোসেনের স্ত্রী। ঘটনার পর লাশ রেখে গৃহবধূর স্বামী নাঈম হোসেন (২৮) পালিয়ে গেছে বলে জানা গেছে। নাঈম হোসেনের বাবার নাম আনোয়ার হোসেন।
সূত্র জানায়, গত তিন মাস আগে প্রেমের টানে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেন নাঈম হোসেন ও মর্জিনা বেগম। কিন্তু বিয়ের পর থেকে পারিবারিক বিষয় নিয়ে নাঈম হোসেন ও মর্জিনা বেগমের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকত। এর জের ধরে ২১ দিন আগে মর্জিনা বেগম পৌরসভা এলাকার কুড়ালিয়ারটেকস্থ শশুর বাড়ি থেকে সাবেক বিলছড়ি গ্রামে বাবার বাড়ি চলে যান। গত শুক্রবার দুপুরে স্বামী নাঈম হোসেনের সাথে ঝগড়ার এক পর্যায়ে গৃহবধূ মর্জিনা বেগম বিষপান করলে স্বজনেরা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে শারিরীক অবস্থার অবনতি হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মর্জিনা বেগমকে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। রাতে মর্জিনা বেগমের মৃত্যু হলে হাসপাতালে লাশ রেখে পালিয়ে যান স্বামী নাঈম হোসেন।
এদিকে মৃত গৃহবধূ মর্জিনা বেগমের বড় বোন জেসমিন আক্তার অভিযোগ করে বলেন, বিয়ের পর থেকেই আমার বোন মর্জিনা বেগমের কাছ থেকে নগদ দেড় লক্ষ টাকা ও ফুল ফার্নিচার দাবী করেন নাঈম হোসেন সহ অন্যরা। যৌতুক দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে প্রায় সময় শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করা হতো বোনকে। শুক্রবার আমাদের বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নাঈম হোসেন বেড়াতে এসে আমার বোন মর্জিনা বেগমকে হত্যা করে করে লাশ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচার করেন। মৃত মর্জিনা বেগমের গায়ে আঘাতের চিহ্ন ও গায়ের কাপড় ছেঁড়া দেখা গেছে বলেও জানান জেসমিন আক্তার। তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করেন গৃহবধূর স্বামী নাঈম হোসেনসহ শশুর পক্ষীয়রা। বিষপানে গৃহবধূ মর্জিনা বেগমের মৃত্যুর সত্যতা লামা পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলর মমতাজ উদ্দিন নিশ্চিত করেন।
এ বিষয়ে লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শহীদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, বিষপান করে গৃহবধূ মর্জিনা বেগমের মৃত্যুর ঘটনা শুনেছি। কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে কাগজপত্র আসার পর কেউ অভিযোগ করলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মৈত্রী/এফকেএ/এএ