তিনটি ওয়ান স্টপ সার্ভিস একপে, একসেবা ও একশপ উদ্বোধন করেন সজিব ওয়াজেদ জয়
আসাদুজ্জামান /লিগ্যাল ভয়েস টোয়েন্টিফোর :
প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় তিনটি ওয়ান স্টপ নাগরিক সেবা- একসেবা, একপে ও একশপের উদ্বোধন করেছেন।
এসকল সার্ভিস থেকে জনগণ বিভিন্ন ধরনের নাগরিক সেবা, ইউটিলিটি বিল প্রদান এবং ই-কর্মাস সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।
ইনফরমেশন এন্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (আইসিটি) বিভাগ রাজধানীর আগারগাঁয়ের আইসিটি টাওয়ারে আজ এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত হু কাং-ইল।
‘একসেবায়’ এখন পর্যন্ত ১৬২টি সরকারি সেবা রয়েছে। এই সেবা পেতে নাগরিকদের ভিন্ন ভিন্ন মন্ত্রণালয়ে বা ভিন্ন ভিন্ন ওয়েবসাইটেও যেতে হবে না। এক জায়গা থেকেই এসব সেবা পাওয়া যাবে। পর্যায়ক্রমে এতে আরও তিন হাজার সেবা অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
‘একপে’ এর মাধ্যমে সরকারি বিভিন্ন ইউটিলিটি সেবার বিল ও অন্যান্য ফি এক জায়গা থেকেই দেওয়া যাবে। আর ‘একশপ’ এর মাধ্যমে দেশের যেকোন জায়গা থেকে উৎপাদক বা উদ্যোক্তারা ই-কমার্সে তাদের পণ্য বিক্রি করতে পারবে।’
এক্সেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) এর উদ্যোগে ‘ডিজিটাল মিউনিসিপালিটি সার্ভিসেস সিস্টেম’ পাইলট প্রকল্পের অধীন পরীক্ষামূলকভাবে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন ও ৯টি পৌরসভা- ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, নাটোর, ঝিনাইদহ, টুঙ্গিপাড়া,পীরগঞ্জ, সিংড়া, তারাব ও রামগতিতে ‘ডিজিটাল অটোমেশন পদ্ধতিতে নাগরিক সেবা’ প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ এছাড়াও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ আয়োজিত ই-গভার্নমেন্ট মাস্টার প্ল্যান রিপোর্টের মোড়ক উন্মোচন, এটুআইয়ের তিনটি নাগরিক সেবা উদ্বোধন এবং দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের মাঝে ল্যাপটপ বিতরণ করেন।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সজীব ওয়াজেদ বলেন, বাংলাদেশে এখন বিশ্বের ‘আধুনিক আইটি সিস্টেম রয়েছে’।
তিনি বলেন, ১০ বছর আগে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে যাত্রা শুরু করেছিলাম। তখন অনেকেই বুঝতে পারেনি যে, ডিজিটাল বাংলাদেশ কী? তবে অল্প সময়ের মধ্যেই আমরা বুঝাতে সক্ষম হয়েছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তব।
আইসিটি উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ আইসিটি উন্নয়নের নানা ধাপ পেরিয়ে এসেছে। বর্তমানে জাতিসংঘের ই-গভর্নমেন্ট উন্নয়ন সূচকে ১১৫ নম্বরে রয়েছে বাংলাদেশ। আগামী পাঁচ বছরে ৫০ ধাপ এগিয়ে যাবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ইনফো সরকার-৩ প্রকল্পের আওতায় সরকার সারা দেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে ফাইবার অপটিক ক্যাবল দিয়ে ব্রডব্যান্ড সেবা পৌঁছে দিচ্ছে। প্রায় সবগুলো শহরেই রয়েছে ফোরজি সেবা।
সজীব ওয়াজেদ বলেন, ডিজিটাল মিউনিসিপালিটি সার্ভিস পাইলট প্রজেক্টের মাধ্যমে প্রায় ২০ লাখ নাগরিককে সেবা দেওয়া হবে। ২০২১ সালের মধ্যে ৩০০ মিউনিসিপালিটিতে এই সেবা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম ১১২টি সেবা ডিজিটাইজড হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, সরকারের আরও অনেক সেবা রয়েছে সেগুলো দ্রুত অটোমেশন করতে হবে।
তাহলে যথাযথভাবে সার্ভিসগুলো মনিটর সম্ভব হবে।
সভাপতির বক্তৃতায় আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল সেবাগুলো সম্পর্কে ই-গভর্নেন্স ব্যবস্থায় এগিয়ে যেতে হলে দরকার সময় এবং অর্থের ব্যয় কমিয়ে আনা। তার জন্যই এক্সেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) এর উদ্যোগে আমরা চালু করেছি একশপ, একপে এবং একসেবা। “সরকারের সব সেবাগুলো আমরা একই প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসতে চাই। পর্যায়ক্রমে সরকারের ৩ হাজার সেবাকে আমরা একসাথে নিয়ে আসব।”
তিনি বলেন, আগামী ২ বছরের মধ্যে ৪০ হাজার ফ্রিল্যান্সার তৈরি করবে আইসিটি বিভাগ।
পরে আইসিটি উপদেষ্টা ‘ই-গভর্নমেন্ট মাস্টারপ্ল্যান’ রিপোর্টের মোড়ক উন্মোচনের পাশাপাশি পাইলট প্রকল্প হিসেবে ‘ডিজিটাল মিউনিসিপালিটি সার্ভিসেস সিস্টেম’, ‘একসেবা’, ‘একপে’ এবং ‘একশপ’ এরও উদ্বোধন করেন।
সজীব ওয়াজেদ এছাড়াও প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষে লার্নিং এন্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের আওতায় ১০০ জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর মাঝে ১০০টি ল্যাপটপ বিতরণ করেন।