বিমানে বাংলাদেশে আসা সব যাত্রীদেরই পরীক্ষা করা হবে
স্টাফ রিপোর্টার / লিগ্যাল ভয়েস টোয়েন্টিফোর :
করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে বিশ্বের যে কোনো দেশ থেকে কেউ বাংলাদেশে ঢুকলে বন্দরে স্ক্রিনিংয়ের মধ্য দিয়ে যেতে হবে বলে জানিয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। এতদিন শুধু চীন থেকে আসা ব্যক্তিদের পরীক্ষা করা হলেও এখন তার পরিসর বাড়ানো হচ্ছে।
আজ শনিবার করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে আইইডিসিআরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
প্রসঙ্গত, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে প্রতিদিন ২৫টি ফ্লাইটে গড়ে সাড়ে ১২ হাজার যাত্রী বাংলাদেশে আসছেন। এর মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে মাত্র চারটি ফ্লাইটে আসা চীনফেরত ৭০০ যাত্রীদের যথাযথ স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও মনিটর করত স্বাস্থ্য বিভাগ।
বিমানবন্দরে কর্তব্যরত স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা এতদিন চায়না ইস্টার্ন, চায়না সাউদার্ন, ড্রাগন এয়ার ও ইউএস বাংলায় চীন থেকে আগত প্রত্যেক যাত্রীকে ফ্লাইটের কেবিন ক্রুদের মাধ্যমে মেডিকেল ডিক্লারেশন ফর্ম, স্বাস্থ্য তথ্য কার্ড ও প্যাসেঞ্জার লোকেটর ফরম বিতরণ করত।
এছাড়া বিমানবন্দরে নামার পর ফ্লাইটের যাত্রীদের কাছ থেকে তারা এসব ফরম সংগ্রহ করত এবং থার্মাল স্ক্যানার ও হ্যান্ড স্ক্যানার দিয়ে যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হতো। মাত্র চারটি ফ্লাইটের যাত্রীরা এর আওতায় থাকায় সিংহভাগ যাত্রীই স্বাস্থ্য পরীক্ষার বাইরে থেকে গেছেন। তাদের মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন রোগতত্ত্ববিদরা।
চীন থেকে ইতোমধ্যে দুই ডজনেরও বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। এতে মৃতের সংখ্যা সাতশ ছাড়িয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন দেশ সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। এ কারণে বিমানবন্দরে আসা সবগুলো বিমানকেই স্ক্রিনিংয়ের আওতায় আনা হয়েছে।
বিমানবন্দরে কর্মরত স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শাহরিয়ার সাজ্জাদ জানান, ২১ জানুয়ারি থেকে চীন থেকে আগত চারটি ফ্লাইটের যাত্রীদের মাঝে মেডিকেল ডিক্লারেশন ফর্ম, স্বাস্থ্য তথ্য কার্ড ও প্যাসেঞ্জার লোকেটর ফরম বিতরণ করার কাজ চলছিল। তবে তারা নিবিড় পর্যবেক্ষণ করে দেখেছেন চারটি নয়, ১৩টি ফ্লাইটে চীনাসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক আসছেন।
তিনি আরও জানান, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে প্রতিদিন ২৫টি ফ্লাইটে সাড়ে ১২ হাজার যাত্রী বাংলাদেশে আসেন। বৈশ্বিক করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বিবেচনায় অধিকতর সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে রোগতত্ত্ববিদদের পরামর্শে এখন থেকে ২৫টি ফ্লাইটে আগত সকল যাত্রীদের মনিটর করা হবে।
এদিকে গত বেশ কিছুদিন যাবত সকল যাত্রীকে থার্মাল স্ক্যানার ও হ্যান্ড স্ক্যানারে জ্বর পরীক্ষা করা হলেও তাদের প্রত্যেককে মেডিকেল ডিক্লারেশন ফর্ম, স্বাস্থ্য তথ্য কার্ড ও প্যাসেঞ্জার লোকেটর ফরম পূরণ করতে হয়নি। তবে এখন থেকে সকল যাত্রীর কাছ থেকে এ তিনটি কার্ডে তথ্য সংগ্রহ করা হবে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশের সবগুলো বন্দরে আসা যাত্রীদের স্ক্রিনিং করার সক্ষমতা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আছে কি না- এ প্রশ্নে অধ্যাপক ফ্লোরা বলেন, বিভিন্ন এয়ারলাইন্স, বন্দর কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সহযোগিতায় এ কাজটি করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এয়ারলাইন্সগুলোর সহযোগিতা নিচ্ছি। ফ্লাইটের মধ্যে যে ডিক্লেয়ারেশন ফর্ম দেওয়া হয়, তাতে এয়ারলাইন্সগুলো সহায়তা করে। আমরা সম্মিলিতভাবেই করছি। এখানে এয়ারলাইন্সগুলোর সহযোগিতা খুবই জরুরি। যে বন্দরে থার্মাল স্ক্যানার নেই, সেখানে আমরা হ্যান্ডহেল্ড স্ক্যানার দিয়েছি। থার্মাল স্ক্যানার এবং হাত দিয়ে যেটা করা হয়- দুটোর কার্যক্রম একই।’
বিমানযাত্রীদের বিমানবন্দরে থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের মধ্য দিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি তাদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্যের একটি কার্ড পূরণ করতে হচ্ছে।