‘নগদ’-এ প্রতিষ্ঠা হয়নি ডাক বিভাগ ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্তৃত্ব

ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’-এর যাত্রা ২০১৯ সালের ২৬ মার্চ। শুরু থেকেই বলা হচ্ছে, এটি বাংলাদেশ ডাক বিভাগের সেবা। বর্তমানে ই-মানি সৃষ্টি, অর্থ লেনদেন, পেমেন্ট থেকে শুরু করে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সব সেবাই দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু কার্যক্রম শুরুর দুই বছরেও ‘নগদ’ নিজের আইনি সত্তা স্পষ্ট করতে পারেনি। নগদ লিমিটেডে ডাক বিভাগের ৫১ শতাংশ শেয়ার মালিকানার বিষয়টি নিয়েও অস্পষ্টতা রয়েছে। এ কারণে প্রতিষ্ঠানটিকে ঘিরে আইনি জটিলতাও বাড়ছে।

নগদের লোগোতে বলা হয়েছে, এটি ‘ডাক বিভাগের ডিজিটাল লেনদেন’। এক্ষেত্রে দাবি করা হয়, ২০১০ সালের সংশোধিত ডাক আইনের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে সেবাটি। নগদ বর্তমানে অর্থের লেনদেনের পাশাপাশি পেমেন্টের দায়িত্বও পালন করছে। এ নিয়ে আপত্তি তুলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বক্তব্য হলো ডাক বিভাগ অর্থ লেনদেন করতে পারলেও কোনোভাবেই পেমেন্টের দায়িত্ব পালন করতে পারে না।

নগদ পরিচালনা করছে থার্ড ওয়েভ টেকনোলজিস লিমিটেড নামের একটি কোম্পানি। গ্রাহকদের কাছে থেকে অর্থ গ্রহণ, ই-মানি সৃষ্টি থেকে শুরু করে প্রতিটি কার্যক্রমই পরিচালিত হচ্ছে বেসরকারি এ কোম্পানির মাধ্যমে। সংগৃহীত অর্থের ব্যবহার ও নিয়ন্ত্রণও করছে থার্ড ওয়েভ।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা ছিল, নগদের কার্যক্রম চালাতে হলে ডাক বিভাগের একটি সাবসিডিয়ারি কোম্পানি গঠন করতে হবে। এ কোম্পানির ৫১ শতাংশ শেয়ার থাকতে হবে ডাক বিভাগের হাতে। যদিও দুই বছরেও সাবসিডিয়ারি কোম্পানি তৈরি করতে পারেনি ডাক বিভাগ। অন্যদিকে ডাক আইন অনুযায়ী ডাক বিভাগের সাবসিডিয়ারি কোম্পানি গঠনের সুযোগও নেই।

অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, থার্ড ওয়েভ টেকনোলজিস লিমিটেডই নাম পরিবর্তন করে এখন ‘নগদ লিমিটেড’ হয়ে গিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত সরকারি সব পক্ষের মধ্যেই এখন এ নিয়ে অস্বস্তি রয়েছে।

ডাক অধিদপ্তর, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো বলছে, আইনি প্রক্রিয়া মেনে নগদের সূচনা হয়নি। এর মধ্যেই সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় বড় হয়ে উঠেছে ডিজিটাল সেবাটি। প্রতি মাসে এর মাধ্যমে লেনদেনের পরিমাণ ৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এ অবস্থায় সেবাটিকে আইনি কাঠামোয় আনতে গিয়ে সব পক্ষকেই জটিলতায় পড়তে হচ্ছে।

দেশে কোনো কোম্পানি গঠন করতে হলে রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসে (আরজেএসসি) নিবন্ধনের প্রয়োজন হয়। প্রতিষ্ঠানটির তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর ‘থার্ড ওয়েভ টেকনোলজিস লিমিটেড’ নামের কোম্পানিটি গঠিত হয়। এ কোম্পানির নিবন্ধন নং সি-১৩৪০২৭। তবে সম্প্রতি থার্ড ওয়েভ টেকনোলজিস লিমিটেডের নাম পরিবর্তন করে ‘নগদ লিমিটেড’ করা হয়েছে। কোম্পানিটির নিবন্ধনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন নথি বণিক বার্তার হাতে এসেছে। নথিতে নগদ লিমিটেডের শেয়ারধারীদের বিস্তারিত বিবরণ থাকলেও তাতে ডাক বিভাগের নাম খুঁজে পাওয়া যায়নি।

শুরু থেকেই থার্ড ওয়েভ টেকনোলজিস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে দায়িত্ব পালন করছেন তানভীর আহমেদ মিশুক। কোম্পানিটির নাম পরিবর্তন হয়ে নগদ লিমিটেড হওয়ার পরও এ পদেই নিয়োজিত রয়েছেন তিনি। নগদের সামগ্রিক পরিস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে তানভীর আহমেদ মিশুক বণিক বার্তাকে বলেন, এতদিন আমরা ডাক বিভাগের সঙ্গে মুনাফা ভাগাভাগি করতাম। এক্ষেত্রে ডাক বিভাগ ৫১ শতাংশ ও থার্ড ওয়েভ টেকনোলজিস ৪৯ শতাংশ মুনাফার অংশীদার ছিল। কিন্তু গতকাল থেকে ডাক বিভাগ নগদ লিমিটেডের ৫১ শতাংশ শেয়ারের অংশীদার হয়ে গেছে। আমরা কোম্পানির শেয়ার বিভক্তির বিষয়টি জানিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগকে জানিয়েছি। ফাইলটি এখন আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিংয়ের অপেক্ষায় আছে।

তানভীর আহমেদ মিশুকের দাবি, শুরু থেকেই নগদের সব লেনদেন ডাক বিভাগের নিয়ন্ত্রণে চলছে। তিনি বলেন, থার্ড ওয়েভ টেকনোলজিস শুধু প্রযুক্তিগত সহযোগিতা করছে। অর্থের সব লেনদেনই ডাক বিভাগ দেখছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সব শর্ত পূরণ করে চলতি মাসেই নগদ লাইসেন্স পাবে।

নগদের কোম্পানিতে রূপান্তরের বিষয়টি সম্পর্কে জানা নেই ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সিরাজ উদ্দিনের। তিনি বলেন, ডাক বিভাগের সেবা হিসেবে নগদের কার্যক্রম চলছে। নগদ নামে কোনো কোম্পানি গঠন হয়েছে বলে আমি শুনিনি। আমাদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া কোম্পানি গঠন হলো কীভাবে?

থার্ড ওয়েভ টেকনোলজিসের ‘নগদ লিমিটেডে’ রূপান্তরের বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের অগোচরেই হয়েছে বলে জানালেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. আফজাল হোসেনও। তিনি বলেন, যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নগদের সূচনা হয়নি। আমি তখন এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলাম না। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব গ্রহণের পর আমি আইনি ঘাটতিগুলো দূর করার উদ্যোগ নিয়েছি। বাংলাদেশ ব্যাংক যেভাবে চায়, আমরা সেভাবেই নগদের লাইসেন্সের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। সাবসিডিয়ারি কোম্পানি গঠনের বিষয়ে আমরা আইনি মতামত নিয়েছি। পোস্ট অফিস আইন ও বাংলাদেশ ব্যাংক যতটুকু অনুমোদন দেবে, ততটুকু সেবাই আমরা নগদের মাধ্যমে দিতে চাই।

নগদ নামে কোম্পানি গঠনের ক্ষেত্রে ডাক অধিদপ্তর কোনো অর্থ বিনিয়োগ করবে না বলে জানান আফজাল হোসেন। তিনি বলেন, নগদ ডাক অধিদপ্তরের সুনাম ব্যবহার করবে। এর বিপরীতে কোম্পানিটিতে ডাক অধিদপ্তরের ৫১ শতাংশ শেয়ার থাকবে। কোম্পানি পরিচালনার পুরো অর্থ ও মূলধন থার্ড ওয়েভ টেকনোলজিস জোগান দেবে। কোনো কারণে ‘নগদ’ বিলুপ্ত হলে মালিকানার অনুপাতে লাভ-ক্ষতি বহন করবে।

থার্ড ওয়েভ টেকনোলজিস নামের কোম্পানিটির নাম পরিবর্তনের পর চুক্তিটি কীভাবে হবে জানতে চাইলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব বলেন, আমাদের না জানিয়েই থার্ড ওয়েভ টেকনোলজিসের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। বিষয়টি গ্রহণযোগ্য নয়। বিদ্যমান সমস্যাগুলোর সমাধান করে দ্রুতই ‘নগদ’ বাংলাদেশ ব্যাংকের লাইসেন্স নেবে।

ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও জানেন না ‘নগদ লিমিটেড’ নামে কোম্পানি গঠনের কথা। গতকাল বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, নগদ নামে কোনো কোম্পানি গঠনের বিষয়টি আমার জানা নেই। আমরা কোম্পানিটিকে থার্ড ওয়েভ টেকনোলজিস নামেই জানি। কোম্পানি গঠন করা হলে সেটি থার্ড ওয়েভ টেকনোলজিসের সঙ্গেই হবে।

মোস্তাফা জব্বার বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের শর্ত অনুযায়ী নগদের লাইসেন্স নেয়ার কার্যক্রম চলছে। এজন্য একটি কমিটি গঠন করে দেয়া হয়েছে। কমিটি প্রতিবেদন দেয়ার পরই এ বিষয়ে সীমাবদ্ধতা ও ঘাটতি সম্পর্কে জানা যাবে।

আইন অনুযায়ী ডাক বিভাগের সাবসিডিয়ারি কোম্পানি গঠনের সুযোগ আছে কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, গঠিত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার আগে এ বিষয়ে মন্তব্য করা ঠিক হবে না।

একই প্রশ্নের জবাবে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আইনি মতামত চেয়ে কোনো চিঠি আমি পাইনি। চিঠি পেলে তবেই এ বিষয়ে মন্তব্য করা যাবে।

২০১৯ সালে নগদের কার্যক্রম শুরুর পর সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে এ নিয়ে আপত্তি উঠতে থাকে। এ অবস্থায় নগদের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একটি সাবসিডিয়ারি কোম্পানি গঠনের নির্দেশনা দিয়েছিল আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। একই বছরের এপ্রিলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগকে দেয়া এ-সংক্রান্ত একটি চিঠিতে বলা হয়, ডাক অধিদপ্তরের আর্থিক সেবা দেয়ার আইনি অধিকার রয়েছে। অন্যদিকে আইনগতভাবে পেমেন্ট সিস্টেম-সংক্রান্ত কার্যাবলি তদারকির দায়িত্ব বাংলাদেশ ব্যাংকের। পোস্ট অফিস আইনে ডাক অধিদপ্তরের এ সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন গ্রহণ ও তদারকির বিষয়ে সুস্পষ্ট উল্লেখ নেই। এর পরও আর্থিক সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে ডাক অধিদপ্তর বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন গ্রহণ করতে পারে।

এক্ষেত্রে ডাক অধিদপ্তরকে ৫১ শতাংশ শেয়ার মালিকানার ভিত্তিতে একটি সাবসিডিয়ারি কোম্পানি প্রতিষ্ঠার নির্দেশনা দিয়ে চিঠিতে আরো বলা হয়, ওই কোম্পানিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন বা অনাপত্তি গ্রহণ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের তদারকির অধীনে নিতে হবে।

ডাক বিভাগের পক্ষ থেকে নগদের লাইসেন্সের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আবেদন জানানো হয়েছিল। এ নিয়ে গত বছরের ১৫ মার্চ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস বিভাগ থেকে ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে চিঠি দিয়ে ছয় মাসের জন্য নগদের কার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদন দেয়া হয়। তবে চিঠিতে সাতটি শর্তও জুড়ে দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ অনুমোদনের মেয়াদ শেষ হয় গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লাইসেন্সের শর্ত পূরণ করতে পারেনি ডাক বিভাগ। বিভাগটির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আরো ছয় মাস সময় দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সে হিসেবে নগদের কার্যক্রম চালানোর অনুমোদনপত্রে মেয়াদ মার্চে শেষ হচ্ছে।

২০১৯ সালের মার্চে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিবকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দেয়া এ-সংক্রান্ত একটি চিঠিতে বলা হয়, ‘নগদ’-এর ক্ষেত্রে গ্রাহকের অর্থ ডাক অধিদপ্তরের সরকারি হিসাবে জমা করার বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার ক্ষেত্রে ডাক অধিদপ্তর গ্রাহককে অর্থ ফেরত দেয়া বা প্রক্রিয়াধীন পরিশোধ নির্দেশনা দ্রুত নিষ্পত্তিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। অন্যথায়, তৃতীয় পক্ষের সহায়তায় পরিচালিত এ সেবা কোনো কারণে অবসায়নের প্রয়োজন হলে গ্রাহকের টাকা ফেরত দেয়া সম্ভব হবে না।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানার চেষ্টা করেও বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলামকে পাওয়া যায়নি। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মোহা. হুমায়ুন কবিরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ‘পেমেন্ট সিস্টেম’ বিভাগের দায়িত্বে আছেন। বণিক বার্তাকে হুমায়ুন কবির বলেন, কার্যক্রম পরিচালনা করতে হলে ‘নগদ’কে ডাক বিভাগের সাবসিডিয়ারি কোম্পানি হতে হবে। নগদ নামে কোনো কোম্পানি এরই মধ্যে হয়েছে বলে আমরা জানি না। থার্ড ওয়েভ টেকনোলজিস নগদ পরিচালনা করছে।

নগদের কোনো লেনদেন এখন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংক খতিয়ে দেখেনি বলে জানান হুমায়ুন কবির। তিনি বলেন, নগদ এখনো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ছাতার নিচে আসেনি। যেসব শর্ত দেয়া হয়েছে, সেগুলো পরিপালন করে এলে তবেই নগদকে লাইসেন্স দেয়া হবে। কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দেয়া সাময়িক সময়সীমা আগামী মাসে শেষ হবে। এর মধ্যে লাইসেন্স না নিলে নগদের সাময়িক অনুমোদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

প্রসঙ্গত, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিবকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দেয়া ওই চিঠিতে আরো বলা হয়েছিল, ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের মাধ্যমে পরিশোধ-সংক্রান্ত সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে সব সময় প্রি-পেইড মডেল অনুসরণ করা হয়। অর্থাৎ, গ্রাহকের কাছ থেকে গৃহীত অর্থের বিপরীতে ই-মানি ইস্যু করা হয়। গ্রাহকের অর্থের সুরক্ষার স্বার্থে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানগুলোর গ্রাহকের কাছ থেকে গৃহীত অর্থ নির্দিষ্ট ব্যাংক হিসাবে জমা রাখার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এক্ষেত্রে এসব ব্যাংক হিসাবে রক্ষিত অর্থের সমপরিমাণ ই-মানি ইস্যুর বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংক নিশ্চিত করে। এর মাধ্যমে যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা অথবা অর্থমূল্য সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের অবসায়ন ঘটলে বাংলাদেশ ব্যাংক গ্রাহকের অর্থ ফেরত ও প্রক্রিয়াধীন পরিশোধ নির্দেশনাগুলোর নিষ্পত্তি নিশ্চিত করে।

নগদের ক্ষেত্রে গ্রাহকের অর্থ ও ইস্যুকৃত ই-মানির মনিটরিং প্রক্রিয়া সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংক অবহিত নয় উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, প্রযুক্তিনির্ভর এমএফএস সেবার অপব্যবহারের মাধ্যমে নগদ অর্থ জমা ছাড়াই যেকোনো পরিমাণ ই-মানি ইস্যু করা হলে দেশে কৃত্রিমভাবে অর্থ সরবরাহ বৃদ্ধির ঝুঁকি থাকে। এ কারণে বিষয়টিতে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনের আবশ্যকতা রয়েছে। এ ধরনের সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান সুচিন্তিত নীতিমালা ও তদারকি ব্যবস্থার বাইরে থাকলে কৃত্রিম ই-মানি ইস্যু করার ঝুঁকি বহুগুণে বেড়ে যায়, যা সামগ্রিকভাবে দেশের মুদ্রা ব্যবস্থাপনাকে ব্যাহত করবে। সূত্র: বণিক বার্তা

শেয়ার করুন: