বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য সহযোগিতা জোরদারে আগ্রহ যুক্তরাজ্যের
বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা সহযোগিতা জোরদারের আগ্রহ প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্য।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র ও কমনওয়েলথ দপ্তরের এশিয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মার্ক ফিল্ড বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশকে গুরুত্ব দেই এবং আগামি দিনগুলোতে দক্ষিণ এশীয় এই দেশটির সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাণিজ্য, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা সহযোগিতা জোরদারের উপর গুরুত্বারোপ করা হবে।’
যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের নব-নিযুক্ত হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম লন্ডনে মার্ক ফিল্ড-এর কার্যালয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানা গেছে।
পূর্বের বাংলাদেশ সফরের কথা স্মরণ করে, বিশেষত বাংলাদেশ ও ব্রিটিশ- বাংলাদেশি সম্পর্কিত যুক্তরাজ্যের সর্বদলীয় পার্লামেন্টারি গ্রুপের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতার কারণে, মার্ক ফিল্ড ঢাকা ও লন্ডনের মধ্যকার সম্পর্ক দৃঢ় করার ব্যাপারে তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
৩০ ডিসেম্বরের সাধারণ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয়ের পর মন্ত্রিসভায় নবীন ও তরুণ রাজনীতিকদের অন্তর্ভুক্ত করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেন। আগামি দিন গুলোতে বাংলাদেশ আরও প্রবৃদ্ধি ও সমৃদ্ধি অর্জন করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বৈঠককালে, হাইকমিশনার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের নতুন মেয়াদে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে কৌশলগত ও অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব নতুন পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সরকারের প্রতিশ্রুতির কথা পুনরায় উল্লেখ করেন।
তিনি বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য সম্পর্কে পরস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট নতুন ক্ষেত্রগুলোতে সহযোগিতার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেন।
তাসনিম মন্ত্রীকে আরো ব্রিফ করেন যে, যুক্তরাজ্যে দায়িত্বের মেয়াদে তার প্রধান কাজ হবে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার ও বহুমুখীকরণ, বাংলাদেশের মেগা অবকাঠামো প্রকল্প জ্বালানি, আইটি ও সেবা খাতে আরো ব্রিটিশ বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা এবং প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক সংযোগসহ কৌশলগত স্তরে সহযোগিতা বাড়ানো।
হাইকমিশনার দুই কমনওয়েলথ রাষ্ট্রের মধ্যে জোরালো ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ে বেশ কিছু প্রস্তাব উত্থাপন করেন।
মিনিস্টার ফিল্ড শিক্ষা ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যে বসবাসরত ব্রিটিশ বাংলাদেশীদের অনন্য সাফল্যের প্রশংসা করেন।
প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়ার মানবিক পদক্ষেপের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্রিটিশ সরকারের গভীর প্রশংসার কথা পুনর্ব্যক্ত করে ব্রিটিশ মন্ত্রী জাতিসংঘ সংস্থাগুলোকে সম্পৃক্ত করে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে স্বেচ্ছা, মর্যাদাপূর্ণ, স্থায়ীভাবে প্রত্যাবাসনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দেন।
তাসনিম আশ্বস্ত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার নতুন মেয়াদেও রোহিঙ্গাদের প্রতি তার মানবিক অবস্থান সমুন্নত রাখবেন।
ব্রিটিশ মন্ত্রী মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার লঙ্খন ও ‘গণহত্যা’ রোধে ব্রিটিশ সরকার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে এবং বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয়ভাবে তার অগ্রণী ভূমিকা পালন অব্যাহত রাখবে।
ব্রিটিশ মন্ত্রী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনীতে নেতৃত্বের ভূমিকা এবং বিশ্ব শান্তির জন্য বাংলাদেশ শান্তিরক্ষীদের আত্মত্যাগের প্রশংসা করেন।
হাইকমিশনার ব্রিটিশ মন্ত্রীর সঙ্গে ২০২১ সালে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপনের একটি প্রস্তাব নিয়েও আলোচনা করেন।
লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের ডিফেন্স অ্যাটাশে, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম আমিনুল হক, কমার্শিয়াল কাউন্সেলর এস এম জাকারিয়া হক ও ফার্স্ট সেক্রেটারী মো. শফিউল আলম বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।