নাগরিক সুবিধা নিশ্চিতে সকল অব্যবস্থাপনা দূর করতে হবে : এলজিআরডি মন্ত্রী
ঢাকা, ২৪ জানুয়ারি ২০১৯ (লিগ্যালভয়েস) : স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম বলেছেন, সব ধরণের নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করে বসবাসযোগ্য পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে অবহেলা-অব্যবস্থাপনা দূর করতে হবে।
মন্ত্রী আজ রাজধানীর কারওয়াণ বাজারস্থ ঢাকা ওয়াসার দাপ্তরিক ও উন্নয়ন কার্যক্রম পর্যালোচনা, পরিদর্শন ও মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘ঢাকা মহানগরীসহ সারাদেশে নাগরিক ভোগান্তির জন্য মূলত অব্যবস্থাপনা দায়ী। আমরা শুধু শহরে নয় গ্রামেও সকল নাগরিক সুবিধা পৌঁছানোর অঙ্গীকার নিয়ে ক্ষমতায় এসেছি।’
এসময় স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব এস এম গোলাম ফারুক, ঢাকা ওয়াসার চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোঃ হাবিবুর রহমান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার তাকসিম এ. খানসহ মন্ত্রণালয় ও ঢাকা ওয়াসার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
তাজুল ইসলাম বলেন, অনেক দিনের অবজ্ঞা, অবহেলা ও অব্যবস্থাপনার কারণে নাগরিক সেবা প্রদানকারী সংস্থার উপর মানুষের আস্থা উঠে গেছে। এখন আর পেছনে ফিরে তাকানোর সময় নেই। নতুন উদ্যমে, সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় ও দুর্নীতিমুক্ত থেকে নাগরিকদের সেবা দিতে হবে। এ বিষয়ের ব্যতয় ঘটলে কোন ছাড় দেয়া হবে না।
তিনি বলেন, আগামীতে সরকার দৃশ্যমান অনেক কিছু দিয়ে দেশকে আরো উন্নততর অবস্থায় নিয়ে যেতে চায়। সবার জন্য সমান সেবা নিশ্চিত করতেও চায়। এক সময় জ¦ালানী ও বিদ্যুৎ ছিল চ্যালেঞ্জ। সামনের দিনে বিশুদ্ধ পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কাজ করতে হবে।
মন্ত্রী ঢাকা ওয়াসার কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, অতীতের ত্রুটি-বিচ্যুতির ব্যাপারে সতর্ক না হলে পরিণতি ভালো হবে না। আমরা অনেক দূরে যেতে চাই, আর অন্যায় সহ্য করা হবে না। আপনাদের যার যেখানে দুর্বলতা আছে তা এক্ষুনি শোধরান, তা না হলে পরিণতি খারাপ হবে। আর কোনো অন্যায় সহ্য করা হবে না। অব্যবস্থাপনার কারণে আমাদের অগ্রগতি অনেক বাধাগ্রস্ত হয়েছে, আর নয়। ঢাকা মহানগরীর জলাবদ্ধতা দূরীকরণে পরিকল্পনা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ঢাকা মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে করণীয় ঠিক করতে সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহের সাথে শিগগিরই বৈঠক হবে। আশা করি ঢাকাবাসী একটি কার্যকর সমাধান উপহার পাবে।
মতবিনিময় সভায় জানানো হয়, ঢাকা ওয়াসা ঢাকা মহানগর ও নারায়ণগঞ্জ শহরের ৪শ’ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ১ কোটি ৭০ লাখ নাগরিকের জন্য সুপেয় পানি সরবরাহ করছে। দৈনিক ২শ’ ২০ কোটি লিটার পানির চাহিদার বিপরীতে বর্তমানে ২৪২ কোটি লিটার পানি উৎপাদন করছে। ঢাকা ওয়াসার সিস্টেমলস বর্তমানে শতকরা ২০ ভাগের নিচে নেমে এসেছে।
সভায় জানানো হয়, ভূ-উপরিভাগের পানির উৎস হতে পানি সরবরাহের লক্ষ্যে ৪৫ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয়ে পদ্মা-যশোলদিয়া পানি শোধনাগার প্রকল্প, ৭০ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয়ে গন্ধর্বপুর পানি শোধনাগার ও ৫ কোটি ৫ লক্ষ মার্কিন ডলার ব্যয়ে তেতুঁলঝরা-ভাকুর্তা ওয়েফিল্ড প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। সভায় ২০২৮ সালের মধ্যে ১৮৫ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয়ে সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার ফেজ-৩, পদ্মা-যশোলদিয়া পানি শোধনাগার ফেজ-২ ও গন্ধর্বপুর পানি শোধনাগার ফেজ-২ প্রকল্প গ্রহণ করা হবে বলে অবহিত করা হয়। পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য স্যুয়ারেজ মাস্টার প্ল্যানের আওতায় দাশেরকান্দি, মিরপুর, উত্তরা, রায়ের বাজার, পূর্বাচল, পাগলা, নারায়ণগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ, সাভার, টঙ্গী ও গাজীপুরে মোট ১১ টি স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপনে প্রকল্পের কাজ হাতে নেয়া হয়েছে বলে জানানো হয়।