জিআই পণ্যের নিবন্ধন পাচ্ছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের খিরসাপাত আম
ঢাকা, ২৬ জানুয়ারি ২১০৯ লিগ্যালভয়েস ডেস্ক : ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে নিবন্ধন পেতে যাচ্ছে ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জের খিরসাপাত আম’।
আগামীকাল রোববার সকালে শিল্প মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই সনদ প্রদান করবেন।
ভারপ্রাপ্ত শিল্পসচিব মোঃ আবদুল হালিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস্ অধিদপ্তর (ডিপিডিটি) এর আয়োজন করেছে।
উল্লেখ্য, ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য বা সংক্ষেপে জিআই হচ্ছে মেধাসম্পদের অন্যতম শাখা। কোনো একটি দেশের মাটি, পানি, আবহাওয়া, জলবায়ু এবং ওই দেশের জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি যদি কোনো একটি অনন্য গুণমানসম্পন্ন পণ্য উৎপাদনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তাহলে সেটিকে ওই দেশের জিআই হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। একই গুণমানসম্পন্ন সেই পণ্য শুধু ওই এলাকা ছাড়া অন্য কোথাও উৎপাদন করা সম্ভব নয়।
ইতিহাস ও ঐতিহ্যের দিক থেকে বাংলাদেশ সমৃদ্ধশালী হলেও দীর্ঘ সময় ধরে জিআই আইন না থাকায় এদেশের ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের মালিকানা সুরক্ষার সুযোগ ছিল না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (নিবন্ধন ও সুরক্ষা) আইন, ২০১৩ এবং ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (নিবন্ধন ও সুরক্ষা) বিধিমালা, ২০১৫ প্রণয়ন করা হয়। এরপরই দেশের ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য নিবন্ধনের পথ সুগম হয়। ডিপিডিটি দেশের প্রথম ঐতিহ্যবাহী পণ্য হিসেবে জামদানিকে জিআই নিবন্ধন দিয়েছে। পরবর্তীতে জাতীয় মাছ ইলিশ জিআই সনদ লাভ করেছে। আগামীকাল দেশের তৃতীয় পণ্য হিসেবে ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জের খিরসাপাত আম’ জিআই নিবন্ধন পাবে।
‘খিরসাপাত’ আম চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার অত্যন্ত স্বসাদু ফল। বর্তমানে দেশের মোট উৎপাদিত আমের শতকরা ২০ থেকে ২৫ ভাগ আমই খিরসাপাত জাতের। এ জাতের আম প্রতিবছর রপ্তানি হওয়া আমের তালিকায়ও শীর্ষে রয়েছে। অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে বর্তমানে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের আম রপ্তানি হচ্ছে। খিরসাপাত আমের বিপুল সম্ভাবনা বিবেচনা করে এর জিআই নিবন্ধনের উদ্যোগ নেয়া হয়।
জিআই নিবন্ধনের জন্য বিশ্ববাজারে এটি ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জের খিরসাপাত আম’ নামে পরিচিতি পাবে। এর ফলে এ আমের আবাদ বাড়াতে বাগান মালিকরা আগ্রহী হবে। এতে করে একদিকে আমের উৎপাদন বাড়বে এবং অন্যদিকে স্থানীয় পর্যায়ে আমকেন্দ্রিক অর্থনীতি জোরদার হবে। এ সৃজনশীল উদ্যোগের মাধ্যমে স্থানীয় আম চাষি, ব্যবসায়ী, কৃষিভিত্তিক শিল্প উদ্যোক্তাসহ সংশ্লিষ্ট সকলে উপকৃত হবেন বলে আশা করা হচ্ছে