দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারের অঙ্গীকার পাকিস্তান ও রাশিয়ার
ইসলামাবাদ
পাকিস্তান ও রাশিয়া দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার এবং আফগানিস্তানে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে পারষ্পরিক সহযোগিতার অঙ্গীকার করেছে।
রুশ প্রেসিডেন্টের আফগান বিষয়ক বিশেষ দূত ও দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের সেকেন্ড এশিয়ান ডিপার্টমেন্টের পরিচালক জামির কাবুলোভ বার্তা সংস্থা তাসকে একথা বলেন।
কাবুলোভ বলেন, ‘সাম্প্রতিক বৈঠকে আমরা দুপক্ষই অত্যন্ত সন্তুষ্ট।’
তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানের অংশীদাররা আরো একবার রাশিয়ার সঙ্গে নিবিড়ভাবে সহযোগিতা ও সম্পর্ক জোরদারের ব্যাপারে তাদের দৃঢ়প্রত্যয় নিশ্চিত করেছে। তারা আমাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় ইস্যু ছাড়াও আফগানিস্তানে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতেও একসাথে কাজ করতে চায়।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা আফগানিস্তানকে ঘিরে যা হচ্ছে সেসব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।’
বিশেষভাবে তাদের মধ্যে দোহায় মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে তালেবান প্রতিনিধিদের বৈঠকের ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে।
উল্লেখ্য, রাশিয়া তালেবানকে অবৈধ সংগঠন মনে করে।
যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবানের বৈঠকের ফলাফল সম্পর্কে পাকিস্তান ও রাশিয়া কেউই কিছু জানে না।
কাবুলোভ জানান, দুপক্ষের মধ্যে ওই বৈঠক সম্পর্কে আফগানিস্তানের জাতীয় ঐক্য বিষয়ক মার্কিন বিশেষ প্রতিনিধির মন্তব্যে ‘সম্পূর্ণ চিত্র ফুটে ওঠেনি।’
কাবুলোভ বলেন, ‘আমরা আফগানিস্তানে দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা ও দেশটিতে চলমান গৃহযুদ্ধের অবসানে গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’
এই কূটনীতিক জোর দিয়ে বলেন, ‘রাশিয়া ও পাকিস্তান তালেবানের সাথে একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে বিদেশী সৈন্য প্রত্যাহারসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রচেষ্টা পর্যবেক্ষণ করছে। আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে এটা হবে একটি অন্যতম প্রধান পদক্ষেপ।’
তার মতে, আফগানিস্তানে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে পাকিস্তান প্রয়োজনীয় সহায়তা করছে না বলে যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি অভিযাগ করেছে এবং এ প্রেক্ষিতে অর্থনৈতিক সহায়তা বন্ধেরও হুমকি দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এখন আবার ওয়াশিংটন ইসলামাবাদের সহায়তা চাইতে বাধ্য হয়েছে।’
পাকিস্তান সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) কাঠামো, বিশেষত এসসিও-আফগান কন্টাক্ট গ্রুপে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। এই সংগঠনটি আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছে।
আফগান শান্তি প্রক্রিয়ায় এসসিও’র ভূমিকা সম্পর্কে কাবুলোভ বলেন, এখন আফগানিস্তানের জন্য সক্রিয়ভাবে এসসিও’র কর্মসূচিতে অংশ নেয়া অত্যন্ত জরুরি।
তিনি বলেন, ‘এই সংগঠনটির সুবিধা হচ্ছে এতে রাশিয়া অথবা চীনের কোন কর্তৃত্ব নেই। আমরা অংশীদারদের আকার, প্রভাব বা ক্ষমতাকে অগ্রাহ্য বা অসম্মান করি না। এই অঞ্চলের সবাই এসসিও পরিবারের সদস্য এবং আমরা এই ঐক্য প্রক্রিয়া অব্যহত রাখব।’
মস্কোর এই ঐক্যপ্রক্রিয়ার কাঠামোটি অন্য কোন শান্তি প্রক্রিয়ার সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে না উল্লেখ করে কাবুলোভ বলেন, ‘বৈঠকের ব্যাপারে কারো সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা রাশিয়ার কূটনৈতিক নীতি নয়।’
তিনি বলেন, ‘যখন আমরা ও আমাদের অংশীদাররা মিলিত হয়ে আফগানিস্তানে শান্তি ফিরিয়ে আনতে আরো একটি বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নিব বলে ঠিক করলাম তখন আমরা করণীয় সম্পর্কে ঠিক করতে নিদিষ্ট দিনে মিলিত হলাম।’
তিনি আরো বলেন, ‘মস্কো আফগানিস্তানে একটি শান্তিপূর্ণ জাতীয় ঐক্যের জন্য অংশীদারদের সঙ্গে অভিন্ন লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা সেখানে ইসলামিক স্টেট আইএস) এর সমস্যাও দেখতে পাচ্ছি। গোষ্ঠীটি আফগানিস্তানে সক্রিয়। এ পর্যায়ে মস্কো ও ইসলামাবাদ আইএসকে পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ইরান, চীন ও রাশিয়ার জন্য অভিন্ন হুমকি মনে করছে।’