বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত পাঠাতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন রাজনৈতিক আশ্রয়ে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পলাতক খুনি রাশেদ চৌধুরীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলারের সঙ্গে আজ বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি তাকে (মার্কিন রাষ্ট্রদূত) রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছি।’
মোমেন বলেন, তিনি রাষ্ট্রদূতকে বলেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র প্রায়শ অন্যান্য দেশ থেকে তাদের দন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামীকে দেশে ফিরিয়ে এনে থাকে। ‘যুক্তরাষ্ট্রের পথ অনুসরণ করে আমরা আমাদের দেশে একটি অবাধ ও বিচারিক প্রক্রিয়ায় সাজাপ্রাপ্ত বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত পলাতক খুনি (রাশেদ)কে ফেরত চাই।’
তিনি উল্লেখ করেন যে, এর আগে যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধুর অপর দন্ডপ্রাপ্ত খুনি মহিউদ্দিন আহমেদকে বাংলাদেশের কাছে ফেরত দিয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত তাকে আশ্বাস দিয়েছেন যে, তিনি বাংলাদেশের অনুরোধ ওয়াশিংটনের কাছে পৌঁছে দেবেন।
মন্ত্রী বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রশংসা করেছেন। তবে মোমেন বলেন, ‘আমরা নির্বাচন নিয়ে খুব বেশি আলোচনা করিনি। কারণ রাষ্ট্রদূত নির্বাচনের দিনে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে আমার নির্বাচনী আসন পরিদর্শন করেছেন।’
রোহিঙ্গা ইস্যুর উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী যথা শিগগির এ সংকট নিরসনে মিয়ানমারের সঙ্গে ঘনিষ্ট সম্পর্ক রয়েছে এমন দেশগুলোকে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করার আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রদূত মন্ত্রীকে আশ্বাস দেন যে, রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে সবধরনের সহায়তা দেবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা সামরিক সরঞ্জাম ক্রয়সহ ব্যবসা-বাণিজ্য সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় আলোচনা করেন।
সামরিক সরঞ্জাম ক্রয় প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, তিনি মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে অবহিত করেছেন যে, সামরিক সরঞ্জাম ক্রয়ের ব্যাপারে বাংলাদেশ সকলের প্রতি উন্মুক্ত এবং বাংলাদেশ ব্যয় সাশ্রয়ী পণ্য ক্রয়কে অগ্রাধিকার দেয়।
তিনি বলেন, আমি তাকে বাংলাদেশে আরো বেশি বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছি। জ্বালানি খাতে আমরা ২০২১ সাল নাগাদ ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে দেশের বিভিন্ন অর্থনৈতিক রোডম্যাপ বাস্তবায়নে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি বাংলাদেশকে সহায়তা করার আহ্বান জানিয়েছেন।
বৈঠক শেষে মার্কিন রাষ্ট্রদূত সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা সুশাসন, গণতন্ত্র এবং অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব সামরিক বিক্রয় ও ইন্দো প্রশান্ত কৌশলসহ কিভাবে জোরদার মার্কিন-বাংলাদেশ সম্পর্ক গড়ে তোলা যায় তা নিয়ে আলোচনা করেছি।’
মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, তিনি ড. মোমেনের মত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বেশকিছু ডিগ্রি গ্রহণকারী এবং বেশকিছু মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা রয়েছে এমন এক ব্যক্তির সঙ্গে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে সাক্ষাৎ করতে পেরে তিনি আনন্দিত।