চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে কুমিল্লার ফাইনালে ঢাকা
গত আসরের চ্যাম্পিয়ন রংপুর রাইডার্সকে হারিয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ফাইনালে উঠেছে ঢাকা ডায়নাইমাইটস। বুধবার মিরপুরে শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রংপুরের গড়া ১৪২ রানের সংগ্রহ ৫ উইকেট ও ২০ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে গেছে সাকিব আল হাসানের দল। আগামীকাল ফাইনালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের মুখোমুখি হবে ঢাকা।
অনানুষ্ঠানিক সেমি ফাইনাল এই ম্যাচে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে রংপুরকে দারুণ সূচনা এনে দেন ক্রিস গেইল ও নাদিফ চৌধুরী। তবে এদিন টুর্নামেন্টজুড়ে নিষ্প্রভ গেইলকে এক পাশে রেখে ব্যাট হাতে ঝড় তোলার চেষ্টা করেন নাদিফ। তবে ৪২ রানের বেশি এগোতে পারেনি এ জুটি। দারুণ নৈপুণ্যে ম্যাচে ফিরে আসে ঢাকা। তৃতীয় ওভারের শেষ বলে নাদিফকে ফেরান শুভাগত হোম। ১২ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় ২৭ রান করেন নাদিফ। পরের ওভারে প্রথম দুই বলে জোড়া ধাক্কা আসে রুবেল হোসেনের কাছ থেকে। প্রথমেই ভয়ংকর ক্রিস গেইলকে নুরুল হাসানের ক্যাচ বানিয়ে ফেরান রুবেল। ১৩ বলে ২ ছয়ে ১৫ রান করেন গেইল। পরের বলেই রুবেলের শিকার প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান রাইলি রুশো। টুর্নামেন্টজুড়ে দুর্দান্ত ব্যাট করা রুশো ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে কোনো রানই করতে পারলেন না। ফিরলেন কাইরন পোলার্ডের হাতে ক্যাচ দিয়ে।
দ্রুততম সময়ের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়া রংপুরকে উদ্ধার করতে কিছুটা সতর্ক হয়েই ব্যাট চালান মোহাম্মদ মিঠুন ও রবি বোপারা। এ দুজন মিলে রংপুরকে পৌঁছে দেন ১০৬ রানে। কিন্তু এরপর আবারো ছন্দপতন। ১০৬ থেকে ১১০ রানে যেতে রংপুর হারায় আরো তিনটি উইকেট। এ সময় প্রথম ধাক্কাটি আসে কাজি অনিকের কাছ থেকে। ২৭ বলে ৩৮ রান করা মিঠুনকে নুরুল হাসানের ক্যাচে পরিণত করেন অনিক। ৩ রান করে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন বেন হাওয়েলও। তাকে ফেরান সাকিব আল হাসান। অনিকের দ্বিতীয় শিকার হয়ে সাজঘরের পথ ধরেন মাশরাফিও। রংপুরের অধিনায়ক ক্যাচ দেন আন্দ্রে রাসেলের হাতে।
এরপর নাহিদুলকে নিয়ে দলকে ১২৪ পর্যন্ত নিয়ে যান রবি বোপারা। কিন্তু এরপর আবারো ছন্দপতন। ৪ রান করে রুবেলের বলে বোল্ড হয়ে যান নাহিদুল। ২ রান করে রাসেলের বলে তাকেই ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ফরহাদ রেজা। কোনো রান না করে বিদায় নেন শফিউল ইসলামও। ১২৮ রানেই ৯ উইকেট হারিয়ে ফেলে রংপুর। সেখান থেকে দলকে ১৪২ পর্যন্ত নিয়ে যান বোপারা। শেষ ওভারের চতুর্থ বলে আউট হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৪৩ বলে ৬ চার ও ১ ছয়ে ৪৯ রান। এদিন শেষ ছয়জনসহ রংপুরের মোট সাত ব্যাটসম্যান দুই অংকের স্পর্শ পাননি। বল হাতে ঢাকার হয়ে সবচেয়ে উজ্জ্বল ছিলেন রুবেল হোসেন। ৩.৪ ওভার বল করে ২৩ রান দিয়ে নিয়েছেন ৪ উইকেট। শেষ ওভারের প্রথম তিন বলে দুই চার ও এক ছক্কা না দিলে ফিগারটা আরো সুন্দর হতে পারত রুবেলের। অন্যদের মাঝে ২১ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন অনিক এবং ৩১ রান দিয়ে দুই উইকেট নিয়েছেন রাসেলও
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারেই উপুল থারাঙ্গার উইকেট হারায় ঢাকা। ইনিংসের চতুর্থ বলেই মাশরাফির শিকার হয়ে ফেরেন ৪ রান করা থারাঙ্গা। দলীয় ৪১ রানে ফেরেন সুনীল নারাইন। ৮ বলে ১৪ রান করেন তিনি। বেনি হাওয়েলের বলে ২৩ রান করে বোল্ড হয়ে যান সাকিব। আর দলীয় ৯১ রানে মাশরাফি ফেরান কাইরন পোলার্ডকে (১৪)। এরপর দ্রুত ফিরে যান ৩৫ রান করা রনি তালুকদারও। তবে নুরুল হাসানকে নিয়ে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দলের ফাইনাল নিশ্চিত করেন আন্দ্রে রাসেল। ১৯ বলে ৫ ছক্কায় ৪০ রান করেন রাসেল।