সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তামাকের ক্ষতিকারক দিকের প্রচারণা চালানোর আহবান তথ্যমন্ত্রীর
ঢাকা, লিগ্যাল ডেস্ক : তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে তামাকের ক্ষতিকারক দিকের প্রচারণা চালানোর উপরে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে বলেছেন, ‘সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টাই পারে তামাকমুক্ত, মেধাবী, দেশপ্রেমিক ও মূল্যবোধসম্পন্ন মানুষের সমাজ গড়ে তুলতে।
জীবনের শুরুতেই মানুষ তামাকের ক্ষতির মধ্যে পরে যায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তামাক ও তামাকজাত পণ্য ব্যবহারের বিরুদ্ধে প্রচারণার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে আসক্তির বিরুদ্ধেও প্রচারণা প্রয়োজন। একইসাথে সারাজীবনে যারা ধুমপান করেনি, তাদেরকে পুরস্কার দেবার উদ্যোগও নেয়া যেতে পারে।’
হাছান মাহমুদ আজ বুধবার দুপুরে তামাক বিরোধী সংগঠন প্রজ্ঞা, এন্টি টোবাকো মিডিয়া এলায়েন্স ও ক্যাম্পেইন ফর টোবাকো ফ্রি কিডস’র সম্মিলিত উদ্যোগে ‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে অগ্রগতি, বাধা ও করণীয়: গ্যাটস ২০১৭ এর আলোকে একটি বিশ্লেষণ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাস্থ্যহানিকর তামাক সেবন থেকে যেমন দূরে থাকতে হবে, তেমনি মেধার সাথে দেশপ্রেম ও মূল্যবোধের সমন্বয় ঘটাতে হবে। মনে রাখতে হবে, দেশপ্রেম ও মূল্যবোধ ছাড়া উন্নত মানুষ হয়ে ওঠা ও উন্নত জাতি গড়া সম্ভব নয়।’
‘তামাক ও তামাকজাত পণ্য ব্যবহারে স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা দেশের মানুষ অবহিত, জনসম্মুখে ধূমপান নিষিদ্ধের আইনও দেশে রয়েছে, তবে এর যথাযথ প্রয়োগ প্রয়োজন’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘আশার কথা এই যে, দেশে গত ৮ বছরে ধুমপায়ীদের শতকরা হার কমে এসেছে। ধুমপান বিরোধী প্রচারণা এক্ষেত্রে প্রশংসার দাবি রাখে।’
আইন অমান্য করে ‘দেবী’ চলচ্চিত্র প্রদর্শনের ব্যাপারে মন্ত্রী বলেন, এটা তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে স্বাস্থ্য সচিব আসাদুল ইসলাম বলেন, গ্যাটস এর তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ আমাদের বেশকিছু দিকনির্দশনা দিয়েছে, সে আলোকে ভবিষ্যত তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম সাজাতে হবে।
গবেষক মাহফুজ কবীর বলেন, তামাকের দাম এখনও অনেক সস্তা, দাম বাড়িয়ে এসব পণ্য দরিদ্র মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে নিয়ে যেতে হবে।
সম্প্রতি প্রকাশিত গ্লোাবাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে (গ্যাটস) ২০১৭ এর ফলাফল অনুযায়ী, ১৫ বছর এবং তদূর্ধ্ব জনগোষ্ঠীর মধ্যে তামাকের ব্যবহার ২০০৯ সালের তুলনায় ২০১৭ সালে ১৮ দশমিক ৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। গ্যাটস এর ফলাফল অনুযায়ী, বাংলাদেশে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী বিশেষত দরিদ্র এবং অতিদরিদ্র জনগণের মধ্যে তামাক ব্যবহারের প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। নারীদের মধ্যে ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহারের উচ্চহার পরিলক্ষিত হয়েছে। এছাড়া সার্বিকভাবে শহরের তুলনায় গ্রামে তামাক ব্যবহারের হার অনেক বেশি।
বিশিষ্ট সাংবাদিক মোজাম্মেল হোসেনের সভাপতিত্বে ও এন্টি টোবাকো মিডিয়া এলায়েন্স’র আহ্বায়ক নাদিরা কিরণের পরিচালনায় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মোঃ আসাদুল ইসলাম, বিআইডিএস এর জ্যেষ্ঠ গবেষক ড. নাজনীন আহমেদ বিশেষ অতিথি হিসেবে এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অভ ইন্টারন্যাশনাল এন্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ’র গবেষণা পরিচালক ড. মাহফুজ কবীর প্রধান আলোচক ও তামাক বিরোধী সংগঠন প্রজ্ঞা’র সমন্বয়ক মোঃ হাসান শাহরিয়ার মুল উপস্থাপক হিসেবে সভায় বক্তব্য রাখেন।