বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসায় জাতিসংঘের তিনটি রোমভিত্তিক সংস্থা

ঢাকা লিগ্যাল ডেস্ক : বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা করেছে জাতিসংঘের তিনটি রোমভিত্তিক সংস্থা। বুধবার রোমে সফররত অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সাথে এফএও, ডাব্লুএফপি এবং আইএফএডি’র প্রধানদের পৃথকভাবে সংগঠনের সদর দফতরে এক সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।


এ সময়ে তারা বাংলাদেশ ও এই তিনটি সংস্থার মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী সহযোগিতার বিষয়ে আলোকপাত করেন। অত্যন্ত আন্তরিক পরিবেশে অনুষ্ঠিত এই তিনটি সভায়ই জাতিসংঘের সংস্থাগুলির কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গিয়েছে।
গত ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮ এর নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নিরঙ্কুশ বিজয়ের জন্য সভার সভাপতি অভিনন্দন জ্ঞাপন করেন। তারা গত দশকে বাংলাদেশের জিডিপিতে ৬ শতাংশেরও বেশি প্রবৃদ্ধি হওয়ায় এবং দারিদ্র্য ও ক্ষুধা মোকাবেলায় বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের প্রশংসা করেন। পাশাপাশি মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বিতাড়িত মিয়ানমার রোহিঙ্গা নাগরিকদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব পদক্ষেপ গ্রহণ করায় তারা অত্যন্ত প্রশংসা করে বলেন, বিশ্বে মানবতার এক দৃষ্টান্তমূলক উদাহরণ স্থাপন করেছে বাংলাদেশ।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির নির্বাহী পরিচালক ডেভিড বেসলি বাংলাদেশে তার সাম্প্রতিক সফরকে স্মরণ করেন এবং জোরপূর্বক বিচ্ছিন্ন মায়ানমার নাগরিকদের অমানবিক অবস্থার কথা উল্লেখ করে দুঃখ প্রকাশ করেন।


দারিদ্র্য ও ক্ষুধা দূরীকরণের পক্ষে বাংলাদেশকে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতির কথা উল্লেখ তিনি বলেন, সম্প্রতি, ডব্লিউএফপি জোরপূর্বক বিতাড়িত মিয়ানমার নাগরিকদের জন্য সহায়তা ৫৩২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ৯৬৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে বৃদ্ধি করেছে।
ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচারাল অর্গানাইজেশন (এফএও) এর মহাপরিচালক জসি গ্রাজিয়ানো ড সিলভা অসাধারণ অগ্রগতির জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেন এবং সহযোগিতার শুরু থেকে বাংলাদেশকে এফএও’র ৩০০ মিলিয়ন ডলারের মূল্যের ৩২৬ টি জাতীয় প্রকল্পের মাধ্যমে সহযোগীতার কথা উল্লেখ করেন।


অর্থমন্ত্রী বাংলাদেশে কৃষিখাতে নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন স্থানান্তর করার জন্য কৃষি গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠায় প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়ার জন্য এফএও-এর প্রধানকে অনুরোধ করেন।তিনি এফএওওকে তাদের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে আম, কাঁঠাল, পেয়ারা, আনারস, লিচুর মত উন্নত ফলের জন্য ফল প্রক্রিয়াকরণ শিল্প স্থাপন করার আহ্বান জানান।
ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর এগ্রিকালচারাল ডেভলপমেন্ট (আইএফএডি) এর সভাপতি জিলবার্ট এফ হাউংবো জানান, ১৯৭৪ সালে শুরু হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশে অনুদান এবং কম সুদের ঋণ হিসাবে আইএফএডি ১৮.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সরবরাহ করেছে যা প্রকল্পের প্রায় ৪৬৪ মিলিয়ন মানুষের কাছে পৌঁছেছে।


তিনি বলেন, অধিকন্তু ১১.১ মিলিয়ন পরিবারের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে ৩৩টি গ্রামীণ উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য আইএফএডি ঋণ এবং অনুদান হিসাবে ৭১৭.২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে।
এ সময়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল দারিদ্র্য ও ক্ষুধা দূরীকরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশকে চল্লিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে ক্রমাগত সহায়তার জন্য সংগঠনের প্রধানদের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং রোহিঙ্গাদের মানবিক সাহায্যের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *