সিএসইতে পড়তে চান?
পড়াশোনার পর স্মার্ট পেশা বেছে নেয়ার ক্ষেত্রেও সহায়ক ভূমিকা রাখে কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এ সাবজেক্টের কদর যেমন বেড়েছে, তেমনি পড়ার আগেও নেয়া প্রয়োজন কিছু সিদ্ধান্ত ও প্রস্তুতি। কারণ এ বিষয়ে পড়ার জন্য চাই অনেক মনোযোগ, প্রচেষ্টা ও ধৈর্য। আগে এ বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা নিতে হবে। তারপর ভালো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে সিএসই বা কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তি হবে।
সিএসইতে পড়তে হলে আগে থেকেই কিছু প্রস্তুতি তো নিয়ে রাখতেই হবে! যেহেতু এ বিষয়ে পড়তে গেলে নিত্যনতুন প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করতে হবে, সেহেতু প্রযুক্তির নতুন নতুন আপডেট সম্পর্কে খোঁজখবর রাখতে হবে। প্রযুক্তি-বিষয়ক পত্রপত্রিকা পড়তে হবে। নতুন প্রসেসর বের হওয়া, কোন কোম্পানির স্মার্টফোন কেমন, ল্যাপটপের আপডেট, অপারেটিং সিস্টেম ইত্যাদি বিষয়ে সবসময় খোঁজখবর নিতে হবে। কারণ তথ্যভাণ্ডার যত বেশি ভালো হবে, ততই সুবিধা হবে পড়ায়। সিএসইতে পড়তে হলে টানা চার-পাঁচ বছরই প্রযুক্তি বিষয়ে কাজ করতে হবে, সুতরাং এ সম্পর্কে যত বেশি জানা যাবে, ততই মঙ্গল হবে।
সিএসইতে পড়ার জন্য সিজিপিএ ভালো থাকার পাশাপাশি দক্ষতাও থাকা খুব প্রয়োজন। কারণ এটি এমন একটি সাবজেক্ট, যেখানে দক্ষতাই মূল। আর ভালো চাকরি পাওয়ার জন্য দক্ষতা দেখাতেই হবে। সফটওয়্যার কোম্পানিগুলো সিজিপিএ দেখে, কিন্তু দক্ষতাকে বেশি প্রাধান্য দেয়। তাই গ্র্যাজুয়েশনের চার-পাঁচ বছর কেবল পুঁথিগত বিদ্যাতেই নিজেকে নিবদ্ধ না করে হাতে-কলমে কাজ শেখায়ও মনোযোগ দিতে হবে। পড়ার পাশাপাশি একটি ছোটখাটো কোম্পানিতে পার্টটাইম চাকরি করলেও বেশ লাভবান হওয়া যাবে। কারণ এ ধরনের পেশায় পূর্ব অভিজ্ঞতা অতিরিক্ত পয়েন্ট হিসেবে গণনা করা হয়। এছাড়া রিসার্চ পেপার ও প্রজেক্ট প্রকাশ করতে পারলে আরো বেশি লাভবান হওয়া যাবে।
এখানে একটি কথা, সিএসইতে যারা পড়ার কথা ভাবছেন, তারা নিশ্চয়ই জানেন গণিত ভালো জানতেই হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় সিএসইর মূল কোর্সগুলোর পাশাপাশি গণিতের আবশ্যক কিছু কোর্স থাকে। এগুলোয় ভালো নম্বর তুলতে হলে গণিতের ভিত্তি মজবুত হতে হবে। তাই আগে থেকেই নবম-দশম শ্রেণীর অংকগুলো বারবার অনুশীলন করতে হবে, ইন্টারনেটে কুইজ বের করেও সমাধান করলে উপকৃত হবেন।
ভবিষ্যতে প্রোগ্রামার, ডেভেলপার, সফটওয়্যার টেস্টার, ডাটা সায়েন্টিস্ট বা হার্ডওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যেখানেই নিজেকে দেখতে চান না কেন, প্রোগ্রামিং শেখা লাগবেই। তাই শুরুতেই প্রোগ্রামিংয়ে ভালো হতে হবে।
পড়াশোনার পাশাপাশি ওয়েবসাইট ও অ্যাপ বানানোর কাজ করা যেতে পারে। এ ছোটখাটো প্রজেক্ট করতে করতেই অনেক দক্ষতা অর্জন হয়ে যাবে। আবার অনেক সময় এসব থেকে বড় ধরনের কাজ শুরু হয়ে যায়। সবসময় মাথায় রাখতে হবে প্রাতিষ্ঠানিক পড়ার বাইরের জগৎ থেকেও শেখার কথা। প্রোগ্রামিং-বিষয়ক বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে হবে। যেতে হবে বিভিন্ন ওয়ার্কশপ ও সেমিনারে। এতে অনেক ছোট ছোট জিনিস শেখা যাবে ও প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করে এমন মানুষের সঙ্গে মেশার সুযোগ হবে, যা কিনা ভবিষ্যতে খুব কাজে দেবে।
সিএসইতে পড়ার জন্য যেমন গণিত ভালো জানতে হবে, তেমনি মনোযোগ দিতে হবে ইংরেজিতেও। ইংরেজি বই ও পত্রিকা পড়ে, সিনেমা দেখে ও বন্ধুদের সঙ্গে ইংরেজিতে কথোপকথনের মাধ্যমেও ভালো ইংরেজি শিখে নেয়া যাবে।