হ্যাকারের কল্যাণে ফেসবুক পেজ ভেরিফায়েড!
ফেসবুক পেজ হারিয়ে ফেলেছিলেন অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনা। বাধ্য হয়ে শরণাপন্ন হয়েছিলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাইবার নিরাপত্তা ও অপরাধ দমন বিভাগের। কিন্তু হ্যাকের কল্যাণে উপকারই হয়েছে ভাবনার।
ভাবনার ভাষায়, ‘‘এই পরিস্থিতির পর মনে হলো, আমি বুঝি হঠাৎ কোনও কূপের অতল অন্ধকারে তলিয়ে গেলাম! জানতে পারলাম, আমার অ্যাকাউন্ট বার বার হ্যাক করার চেষ্টা করেও সফল হয়নি হ্যাকার। এমন অস্বাভাবিক চেষ্টা টের পেয়ে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ পুরো অ্যাকাউন্টটাই বন্ধ করে দিলো! অথচ এখানে আমার কত ছবি, কত স্মৃতি। চলছে বইমেলা। আমার উপন্যাস ‘তারা’র প্রচারণা। সব শেষ!’’
পরদিন ভাবনা যোগাযোগ করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাইবার নিরাপত্তা ও অপরাধ দমন বিভাগে। তাদের সহযোগিতায় ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি জানানো হয়। সঙ্গে দেওয়া হয় ভাবনার ছবি, পরিচয়পত্র, বায়োগ্রাফি ইত্যাদি।
ভাবনা বললেন, ‘এগুলো করার পরেও মনটা খুব খারাপ ছিলো। কারণ, সবাই বলছিলো- এসব অ্যাকাউন্ট সচরাচর ফেরত পাওয়া যায় না। পেলেও মাস দুই তিনেক তো লাগবেই।’
এমন শঙ্কা উবে গেল ঠিক ১০ দিনের মাথায়। ২১ ফেব্রুয়ারি ভাবনা একটি ইমেইল বার্তা পেলেন ফেসবুক কর্তৃপক্ষ থেকে। অর্থাৎ সব তথ্য-প্রমাণ পরীক্ষা করে তারা ভাবনার প্রোফাইলটি ফেরত দিলো। ফেরত দিয়েই এই গল্পের ইতি ঘটেনি। বোনাস হিসেবে ভাবনা পেলেন নীল চিহ্নের তকমাটাও! যা যে কোনও ফেসবুক ইউজারের কাছে কাঙ্ক্ষিত।
ভাবনা বলেন, ‘আমি সত্যিই মুগ্ধ ও বিস্মিত! এত দ্রুত এটি ফেরত পাবো, সঙ্গে ভেরিফায়েডও! কারণ, আমি তো অ্যাকাউন্ট ভেরিফায়েড করার জন্য কোনও আবেদন করিনি। আমি শুধু অ্যাকাউন্টটা ফেরত চেয়েছি। প্রমাণ হিসেবে পাসপোর্টের কপিটা দিয়েছি। অথচ ওরা আমাকে চমকে দিলো। নামের পাশে নীল চিহ্নটা দেখে বিশ্বজয়ের আনন্দ পেয়েছি।’
ভাবনা আরও যোগ করলেন, ‘ভেরিফায়েড করতে হলে নাকি ডলার লাগে, অনেক কিছু প্রমাণ করতে হয়। এভাবেই করছে সবাই। এসব শুনে ভেরিফায়েড করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাই এসব নিয়ে আবেদন করিনি কখনও। অথচ হ্যাকারদের কল্যাণে আমি ভেরিফায়েড হয়ে গেলাম! মজা না?’
এদিকে ২১ ফেব্রুয়ারি নীল চিহ্ন নিয়ে অ্যাকাউন্ট ফিরে পাবার পর ভাবনার ফেসবুকে চলছে ‘তারা’ উৎসব। এটি তার লেখা প্রথম উপন্যাস। যা প্রকাশ করেছে তাম্রলিপি প্রকাশনী।