ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সামর্থ্য বৃদ্ধিতে কাজ করছে সরকার: স্বররাষ্ট্রমন্ত্রী
জিল্লুর রহমান,
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন এমপি বলেছেন, বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সামর্থ্য বৃদ্ধিতে কাজ করছে বর্তমান সরকার। তিনি গতকাল ১২ মার্চ নারায়ণগঞ্জের পূর্বাচলে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সে নবনিযুক্ত অফিসারদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মোঃ শহিদুজ্জামান। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহাম্মেদ খান, পিএসসিসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ফায়ার সার্ভিসের অন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সাফল্যের সাথে বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ সমাপ্ত করার জন্য নবনিযুক্ত সকল অফিসারকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স একটি সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান। এখন থেকে এই সেবার কর্মযজ্ঞে আপনারাও সংযুক্ত হলেন। মানুষের জান-মাল রক্ষা করাকে আপনাদের পবিত্র দায়িত্ব মনে করতে হবে। নিজ নিজ কর্মস্থলে যোগদান করে অর্পিত দায়িত্ব ও কর্তব্য নিষ্ঠার সাথে পালন করতে হবে। বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ সাফল্যের সাথে শেষ করলেও আমি মনে করি, আজ থেকে আপনাদের প্রকৃত প্রশিক্ষণ শুরু হবে। কিভাবে দুর্ঘটনা মোকাবেলা করতে হয়, কিভাবে দক্ষতার সাথে অগ্নি নির্বাপণের কৌশল কাজে লাগাতে হয়, কিভাবে বিধ্বস্ত ভবন থেকে আটকে পড়া মানুষকে উদ্ধার করা যায়; দক্ষ নেতৃত্ব প্রদানের মাধ্যমে একটি জটিল অপারেশনকে কিভাবে সহজ ও সাফল্যের সাথে পরিচালনা করতে হয়; – এখন থেকে আপনারা তা হাতে-কলমে শেখার সুযোগ পাবেন। আপনাদের প্রতিনিয়ত অনুশীলনের মধ্য দিয়ে একজন সত্যিকারের অগ্নিসেনা ও উদ্ধারকর্মী হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলার চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।”
ম্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নবীন অফিসারদের উদ্দেশে বলেন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এখন বহুমাতৃক সেবাকাজে নিয়োজিত। প্রতিনিয়ত দুর্যোগ-দুর্ঘটনার চিত্র পরিবর্তিত হচ্ছে। বিদ্যমান দুর্ঘটনাগুলো নতুন নতুন চরিত্রে আবির্ভূত হচ্ছে; আবার নতুন নতুন দুর্ঘটনাও যোগ হচ্ছে। দুর্যোগপ্রবণ এই দেশে দুর্যোগ প্রশমনের জন্য যেমন কাজ করতে হবে; তেমনি উদ্ভাবনী বিবেচনা শক্তি দিয়ে সংঘটিত দুর্ঘটনার ক্ষয়ক্ষতিকেও সীমিত রাখতে হবে। তিনি নবীন অফিসারদের মনে করিয়ে দেন,ফায়ার সার্ভিস একটি ইউনিফরমধারী সুশৃঙ্খল বিভাগ। প্রতিটি ক্ষেত্রে সকলকে শৃঙ্খলার মান বজায় রাখতে হবে। সব সময় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশ-নির্দেশ মেনে চলতে হবে। চেইন অব কমান্ড ফলো করতে হবে। সুন্দর মন-মানসিকতা এবং শৃঙ্খলাপূর্ণ আচরণ দিয়ে এই বিভাগের সুনাম ও মর্যাদা বৃদ্ধিতে তারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
ফায়ার সার্ভিসের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করে জনাব আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, দেশের সব মহলের কাছে ফায়ার সার্ভিসের আস্থা ও গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পেয়েছে। সোহরাওয়ার্দি হাসপাতাল ও চকবাজারের চুড়িহাট্টার ভয়াবহ অগ্নি নির্বাপণে তাদের কর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন, তা দেশের সকল মানুষের নিকট প্রশংসিত হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এর ধারাবাহিকতা বজায় রেখে উত্তরোত্তর ফায়ার সার্ভিসকে আরো মর্যাদাপূর্ণ স্থানে উন্নীত করতে প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মী সব সময় আন্তরিক ও নিবেদিত থাকবেন বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।
ফায়ার সার্ভিসের মানোন্নয়নে বর্তমান সরকারের বাস্তবায়িত কার্যক্রমের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, ভবিষ্যতেও এই প্রতিষ্ঠানের সেবা সামর্থ্য বৃদ্ধি, সেবার ক্ষেত্র সম্প্রসারণ এবং কর্মরতদের জীবনমান উন্নয়নে সম্ভব সব উদ্যোগ বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হবে। কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নির্বাচিত তিনজন চৌকস কর্মকর্তাকে মেডেল পরিয়ে দেন। এরপর তিনি সেখানে নবনির্মিত মালটিপারপাস শেডের শুভ উদ্বোধন এবং অধিদপ্তরে নতুন সংযোযিত গাড়ি-পাম্প ও সাজ-সরঞ্জাম পরিদর্শন করেন।