প্যারিসে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস
স্টাফ রিপোর্টার,
প্যারিসে বাংলাদেশ দূতাবাস যথাযথ মর্যাদা ও উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ‘মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস’ পালন করেছে।
আজ ঢাকায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৬ মার্চ সন্ধ্যায় ইউনেস্কোতে কূটনৈতিক মহলের জন্য অভ্যর্থনার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে ফ্রান্সে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতগণ, ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, ফ্রান্স সিনেটের সদস্য, প্যারিসে বসবাসরত বীরমুক্তিযোদ্ধা ও প্রবাসী বিশিষ্ট বাংলাদেশিসহ বিপুল সংখ্যক লোক অংশগ্রহণ করে।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফ্রান্সের উচ্চ কক্ষ সিনেটের সদস্য এবং ফ্রান্স-দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপের প্রেসিডেন্ট ম্যাডাম জেকি ডারোমেডি।
তিনি তাঁর বক্তব্যের শুরুতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে ত্রিশ লক্ষ শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ম্যাডাম জেকি বাংলাদেশের র্আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি অতি সম্প্রতি তাঁর বাংলাদেশে সফরে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ও পররাষ্ট্র মন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর সফল বৈঠক নিয়ে আলোকপাত করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে রাষ্ট্রদূত তাঁর স্বাগত বক্তব্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান- এর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদদের আত্মত্যাগের কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিযাত্রার কথা তুলে ধরেন।
এর আগে ২৬ মার্চ সকালে দূতাবাস প্রাঙ্গণে রাষ্ট্রদূত কাজী ইমতিয়াজ হোসেন প্রবাসী বাংলাদেশি ও দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উপস্থিতিতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। এরপর উপস্থিত সকলের অংশগ্রহণে শুদ্ধ সুরে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হয়। এরপর পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতসহ অন্যান্য পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত এবং তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। অনুষ্ঠানে প্যারিসে বসবাসরত বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিকবৃন্দসহ প্রবাসি বাংলাদেশিরা অংশগ্রহণ করেন। এরপর বঙ্গবন্ধুর সাড়ে তিন বছরের দেশ পরিচালনা ও দেশ গঠনকে উপজীব্য করে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘সোনালী দিনগুলি’ এবং বর্তমান সরকারের গত দশ বছরের উন্নয়ন অভিযাত্রায় দূতাবাস কর্তৃক নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তাগণ মহান মুক্তিযুদ্ধে নিহত শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে সকলকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস চর্চার প্রতি আহ্বান জানান। সমাপনী বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত কাজী ইমতিয়াজ হোসেন তাঁর বক্তব্যের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান- এর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন এবং মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করেন।
তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল ও দূরদর্শী নেতৃত্বের প্রশংসা করে বর্তমান সরকারের বিগত গত ১০ বছরে অর্জিত অসাধারণ আর্থ-সামাজিক উন্নযনের উপর আলোকপাত করেন।
রাষ্ট্রদূত ফ্রান্স- এর সাথে ক্রমবর্ধমান দ্বিপাক্ষিক রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক এবং বহুপাক্ষিক সংগঠন ইউনেস্কোর এর মাধ্যমে শিক্ষা- সংস্কৃতি- বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে অবদানের শান্তি প্রতিষ্ঠার অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশের সক্রিয় অংশগ্রহণের কথা তুলে ধরেন। আগত অতিথিদের ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশি খাবারে আপ্যায়ন করা হয়।