যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে অংশ নেওয়া ভুল ছিল: ইমরান
আন্তর্জাতিক ডেস্ক /লিগ্যাল ভয়েস টোয়েন্টিফোর :
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, ৯/১১ হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসবাদবিরোধী যুদ্ধে অংশ নিয়ে তার দেশ একটি মারাত্মক ভুল করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাংক কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্সের (সিএফআর) একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে সোমবার তিনি এই মন্তব্য করেন। এক প্রশ্নের জবাবে ইমরান বলেন, আশির দশকে সোভিয়েত ইউনিয়ন আফগানিস্তান দখল করতে এসেছিল। এই সময়ে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায়। সোভিয়েত সেনাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য মার্কিন সহায়তায় পাকিস্তান এই গোষ্ঠীকে (তালেবান) সৃষ্টি করেছিল।
তিনি বলেন, পাকিস্তানের সেনা গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই (ইন্টার সার্ভিস ইন্টালিজেন্স) সোভিয়েতের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ তৈরির জন্যে মুসলিম বিশ্বের জেহাদি গোষ্ঠীগুলোকে প্রশিক্ষণ দেয়। ইমরানের দাবি, সে সময়ে জেহাদিরা নায়কের মতো ছিল। তাদের প্রতিরোধের মুখেই ১৯৮৯ সালে আফগানিস্তান ছেড়ে যায় রাশিয়া। খবর আনন্দবাজার পত্রিকা ও পিটিআই’র
৯/১১-এর হামলার পর আফগানিস্তানে তালেবানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। এই হামলার আগে যে তিনটি দেশ আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দিয়েছিল, তার মধ্যে পাকিস্তান অন্যতম। কিন্তু অবস্থান পরিবর্তন করে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে কথিত সন্ত্রাসবাদবিরোধী যুদ্ধে অংশ নেয় পাকিস্তান।
পাকিস্তানের তত্কালীন প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফের সরকারের ঐ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন ইমরান। এই সংঘাতে পাকিস্তানের নিরপেক্ষ থাকা উচিত ছিল বলে মনে করেন তিনি। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নিতে ইমরান এখন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে অবস্থান করছেন।পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এবারই প্রথম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নিচ্ছেন তিনি। মার্কিন আগ্রাসনের সিদ্ধান্তে পাকিস্তানের সমর্থনের ঘটনায় দেশটির স্ববিরোধিতাও দেখতে পেয়েছেন ইমরান।
তার মতে, সোভিয়েত ইউনিয়নের দখলদারির বিরুদ্ধে বিদেশি শক্তিকে রুখে দেওয়ায় যাদের উত্সাহ দেওয়া হয়েছিল, সেই গোষ্ঠীই মার্কিন আগ্রাসন বিরোধিতা করে জঙ্গি বলে চিহ্নিত হয়েছে। এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান ছেড়ে গেলেও এই গোষ্ঠীগুলো রয়ে গিয়েছে।
ইমরান মনে করেন কোনোভাবেই সামরিক শক্তি দ্বারা আফগানিস্তানে শান্তি ফেরানো সম্ভব নয়। শান্তি ফেরাতে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আলোচনার উদ্যোগ নিতে অনুরোধ করবেন বলে জানান।