নির্বাচন কমিশনের বিধি-বিধান বিএনপি’র জন্য লাভজনক- তথ্যমন্ত্রী
স্টাফ রিপোর্টার / লিগ্যাল ভয়েস টোয়েন্টিফোর :
ঢাকা, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি ২০২০, তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের বিধি-বিধান বিএনপি’র জন্য লাভজনক, কারণ আমাদের দেশে মন্ত্রী বা এমপিবৃন্দ প্রচারণায় অংশ নিতে পারেন না।’
মঙ্গলবার অপরাহ্নে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি খোরশেদ আলম খসরুর নেতৃত্বে কমিটির সাথে বৈঠকের শুরুতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন মন্ত্রী। তথ্যসচিব কামরুন নাহার এসময় উপস্থিত ছিলেন।
সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ‘লেভেল প্লেয়িংফিল্ড’ আছে কি না- সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, নির্বাচনে তো ‘লেভেল প্লেয়িংফিল্ড’ আছেই এবং সেটি বিএনপির পক্ষে। কারণ, পাশ্ববর্তী দেশ ভারত পৃথিবীর সবচাইতে বড় গণতান্ত্রিক দেশ, যেখানে ভোটারের সংখ্যা পৃথিবীতে সর্বোচ্চ। সেই দেশে মন্ত্রীরা সরকারি প্রটোকল বাদ দিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করতে পারে, যে পর্যায়েরই মন্ত্রী হোক না কেন? সংসদ সদস্যরাতো পারেই। সংসদীয় গণতন্ত্রের সুতিকাগার যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও পৃথিবীর অন্যান্য সংসদীয় গণতন্ত্রের দেশেও মন্ত্রী-সংসদ সদস্যরা সরকারি সুযোগ সুবিধা বাদ দিয়ে প্রচারণায় অংশগ্রহণ করতে পারে। আমাদের দেশে আমরা পারছি না। এটি বরং বিএনপিকে সুবিধাজনক অবস্থান দিয়েছে সুতরাং প্লেয়িংফিল্ডটা তাদের পক্ষে।’
বিএনপি প্রার্থীর ওপর হামলার বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান বলেন, ‘প্রথমত বিষয়টি পুরোপুরিভাবে না জেনে মন্তব্য করা সমীচিন নয়। দ্বিতীয়ত আমি মনেকরি পরিবেশকে ঘোলাটে করার জন্য একটি মহল সক্রিয়। এটি সেই পক্ষই কারসাজি কি না? সেটি খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। আর বিএনপি’র প্রথম থেকেই প্রচেষ্টা হচ্ছে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা। সুতরাং নানা ধরণের ঘটনা প্রবাহের মধ্যদিয়ে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার যে প্রক্রিয়া, এটি সেই প্রক্রিয়ারও অংশ কি না- সেটিও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।’
চট্টগ্রাম গণহত্যার বিচারে তথ্যমন্ত্রীর সন্তোষ
চট্টগ্রাম গণহত্যার বিচার সম্পন্ন হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ‘তিনি বলেন, ৩২ বছর পর এই হত্যা মামলার রায় হয়েছে। এজন্য অবশ্যই আমরা সন্তুষ্ট। আমি মনেকরি এই গণহত্যা চালানোর জন্য ঢাকা থেকে যারা নির্দেশ দিয়েছিল তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন। একইসাথে ১৯ বছর আগে সিপিবির সমাবেশে যেভাবে হামলা করে নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছিল। সেটিরও যে বিচার হয়েছে, এজন্য সন্তোষ প্রকাশ করছি।’
গণহত্যার ভয়াবহতার কথা স্মরণ করে ড. হাছান বলেন, ‘১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন ও বর্তমান আওয়ামী লীগের সভাপতি বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সেদিন চট্টগ্রামে লালদিঘি ময়দানে একটি জনসভা করার জন্য চট্টগ্রাম বিমান বন্দর থেকে গাড়ি বহর নিয়ে আসছিলেন। আমি নিজে সেই গাড়ি বহরের সামনে মিছিলের সামনের সারিতে সামনে ছিলাম। আমরা যখন কোতয়ালী মোড় অতিক্রম করি তখন থেকেই গুলি শুরু হয় এবং নির্বিচারে গুলি চালানো হয়।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘২৪ জন বলা হলেও আসলে নিহতের সংখ্যা আরো অনেক বেশি কারণ সেদিন অনেক লাশ গুম করে ফেলা হয়েছিল। আমাদের হিসাব ৩০জনের বেশি, কারো কারো মতে সেটি ৩৬ জন। জননেত্রী শেখ হাসিনার মিছিলে ওপর নির্বিচারে গুলি তাকে এবং দেশের গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল শক্তিকে ধ্বংস করার লক্ষ্যেই। যারা এই হামলা পরিচালনা করেছিল তাদের উত্তরসূরিরা তারা কিন্তু এখনও সক্রিয়। আমাদেরকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।’
আইন-আদালত স্বাধীন
দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদকসহ প্রথম আলোর বেশ কয়েকজন সাংবাদিকের হাইকোর্ট থেকে জামিন পাওয়ার বিষয়ে মন্তব্য চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এর মাধ্যমে এটিই প্রমাণিত হয় যে, দেশে আইন এবং আদালত স্বাধীনভাবে কাজ করছে, তাদের জামিন পাওয়ার মাধ্যমে এটিই প্রমাণিত হয়েছে।