বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনে যাত্রীদের জন্য খাবার বাধ্যতামূলক না করার দাবি : পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
সাইদুর রনি,
লিগ্যাল ভয়েস : বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনে বাধ্যতামূলক খাবারের টাকা নেওয়া হচ্ছে। যা পরিবেশনের দায়িত্বে আছে পুলিশের প্রতিষ্ঠান মেট্রো বেকারী। রাজশাহী-ঢাকা-রাজশাহী রুটে নতুন চালু হওয়া বিরতিহীন ‘বনলতা এক্সপ্রেস’ ট্রেনের বাধ্যতামূলক খাবার নিয়ে জনমনে সৃষ্ট বিতর্ক কাটছে না। রমজান মাসের প্রথম দিনে যাত্রীদের হাতে খাবারের প্যাকেট ধরিয়ে দেওয়ায় সৃষ্টি হয়েছে নতুন বিতর্ক। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ রোজাদার যাত্রীরা।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, সপ্তাহের শুক্রবার ছাড়া বাকি ছয়দিন সকাল ৭টায় বনলতা এক্সপ্রেস রাজশাহী থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। আবার দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে ট্রেনটি রাজশাহীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। ট্রেনে চলাচলকারী যাত্রীদের নাশতা পরিবেশন করা হয়। এ জন্য টিকিটের সঙ্গেই কেটে নেওয়া হচ্ছে অতিরিক্ত ১৮০ টাকা। তবে চলাচল উদ্বোধনের দিন থেকেই খাবার নিয়ে দেখা দিয়েছে বিতর্ক।
রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা যাত্রীদের জন্য খাবার বাধ্যতামূলক না করা একই দাবি তোলেন রাজশাহী-৬ (চারঘাট-বাঘা) আসনের সাংসদ ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের মতামত নিয়ে রবিবার খাবারের টাকা কেটে রাখার বিষয়টি বাধ্যতামূলক না রাখার কথা জানান রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। পরদিন সোমবার রোজার মধ্যে যাত্রীদের খাবার পরিবেশন হয়েছে, অথচ বনলতার যাত্রার সময় সেহরি কিংবা ইফতারের কোনোটাই পড়ে না। ফলে রোজার দিনে খাবার নিয়ে বেকায়দায় পড়েন যাত্রীরা।
এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চলছে সমালোচনা। অনেকেই দ্রুত খাবারের বিষয়টি যাত্রীদের ‘ঐচ্ছিক’ করে দেওয়ার মন্ত্রীর ঘোষণার দ্রুত বাস্তবায়ন চাইছেন। অনেকেই বলছেন, রেলওয়ের চরম অব্যবস্থাপনার জন্য বিরতিহীন ট্রেনে চড়তে যাত্রীদের অতিরিক্ত টাকা খরচ হচ্ছে। এ অবস্থায় বনলতার খাবার নিয়ে সৃষ্ট সংকটসহ সাম্প্রতিক সময়ে রেলওয়ের ব্যবস্থাপনায় নানা বিশৃঙ্খলার বিষয়ে তদন্ত চেয়েছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক বাদশা ও রাজশাহী সদরের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা।
তিনি বলেন, এ নিয়ে তিনি রেল মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে একটি চিঠি দেবেন। অন্যদিকে সোমবার রাজশাহীর সিনিয়র সাংবাদিক আহমেদ সফিউদ্দিনের একটি ফেসবুক পোস্টে তিনি এ কথা জানান।
এ বিষয়ে এমপি বলেন, ‘রেলওয়ের মতো একটি রাষ্ট্রায়াত্ব প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনায় এমন বিশৃঙ্খলা চলতে দেওয়া যায় না। বিশেষ করে রেলসেবায় যাত্রীদের আস্থা নষ্ট করে এমন সিদ্ধান্ত কেন, কাদের স্বার্থে নেওয়া হচ্ছে সে বিষয়ে একটি সুষ্ঠু তদন্ত এখন সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে। একজন সংসদ সদস্য হিসেবে এই দাবিটি তোলা আমি আমার দায়িত্ব মনে করি।’ রোজার মধ্যেও বনলতায় খাবার পরিবেশন নিয়ে জানতে চাইলে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক খন্দকার শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘পুলিশের প্রতিষ্ঠান ‘মেট্রো বেকারী’ খাবার পরিবেশন করে থাকে। যতদিন পর্যন্ত খাতাকলমে খাবারের বিষয়টি নিয়ে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত না হচ্ছে ততদিন প্রতিষ্ঠানটি খাবার পরিবেশন করবে।