বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচারের রেকর্ড চলছে
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান জিএফআই-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী শুধু এক বছরে বাংলাদেশ থেকে ৫০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, টাকা পাচারের মূল রুট হুন্ডি। কঠোরভাবে হুন্ডি বন্ধ হলে বাংলাদেশের আর্থিক খাতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে। সরকারের উন্নয়নে পাবে নতুন গতি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, দেশ থেকে অর্থ পাচার রোধ করতে হলে সবার আগে কালো টাকার উৎস বন্ধ করতে হবে। যারা অবৈধ উপায়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করেন মূলত তারাই বিদেশে অর্থ পাচার করেন। তাদের বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। এ ছাড়া যেহেতু সিংহভাগ অর্থই পাচার হচ্ছে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের মাধ্যমে সেহেতু এখানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) আরও শক্তিশালী করতে হবে।
কোন ধরনের জিনিস আমদানি হচ্ছে সেগুলো যথাযথ যাচাই করতে হবে। অনেক সময় খালি কনটেইনার এনে আমদানি দেখানো হচ্ছে। যার বিপরীতে বিপুল পরিমাণ আমদানি বিল নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। একইভাবে রপ্তানির সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অর্থ পাচার করা হচ্ছে। গতকাল তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে আরও বলেন, এর পাশাপাশি বিনিয়োগের সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে। বিনিয়োগকারী বা উদ্যোক্তাদের পুুঁজির সুরক্ষার নিশ্চয়তা দিতে হবে। সম্প্রতি আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত এ বিষয়ে কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ করছে। পাশাপাশি যেসব দেশে অর্থ পাচার হচ্ছে সে সব দেশের সরকারের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে পাচার হওয়া অর্থ ফেরতের উদ্যোগ নিয়েছে বলে তিনি জানান। ভারত সুইস ব্যাংকের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছে, আমরাও সেটা করতে পারি।
প্রয়োজনে দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি হতে পারে। যার মাধ্যমে একদিকে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনা যাবে অন্যদিকে আর যেন অর্থ অবৈধভাবে না যায় সে ব্যবস্থাও করা সম্ভব। সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রতি বছরই দেশ থেকে অর্থ পাচার হচ্ছে এমন তথ্য জানা যায় কিন্তু এটা বন্ধ করতে কোনো সরকারই দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। ফলে কাউকে না কাউকে তো পদক্ষেপ নিতে হবে। এক্ষেত্রে মূল দায়টা সরকারেরই। কেননা টাকাটা কোন কোন দেশে যাচ্ছে সেটাও আমরা জানি। প্রতি বছরই একই দেশে যাচ্ছে। কারা পাচার করছে সেটাও হয়তো সরকারের অনেকেই জানে কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় না। সরকারের সদিচ্ছা ছাড়া কোনোভাবেই অর্থ পাচার রোধ করা সম্ভব নয়।