মানসম্পন্ন শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টিতে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান আইনমন্ত্রীর
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, সকলের জন্য মানসম্পন্ন শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করা জাতীয় কর্তব্য। তিনি বলেন, ‘সরকারের একার পক্ষে এই বিশাল দায়িত্ব পালন করা দূরূহ ব্যাপার। তাই সরকারের পাশাপাশি সকল বেসরকারী প্রতিষ্ঠান এমনকি ব্যক্তি বিশেষ এগিয়ে এলে সরকার উজ্জীবিত হবে।’
আজ রাজধানীর মিরপুরে শহীদ সোহরাওয়ার্দী জাতীয় ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড আয়োজিত দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে মন্ত্রী প্রধান অতিথির বক্তৃতা করছিলেন।
অনুষ্ঠানে ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড প্রায় চার হাজার দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীকে বৃত্তি প্রদান করে।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করা এবং এটি করতে হলে সবচেয়ে বড় যে জিনিসটা প্রয়োজন হবে সেটা হচ্ছে মানসম্পন্ন শিক্ষা। মনে রাখতে হবে প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে বেঁচে থাকতে হলে এই শিক্ষা দিয়েই বেঁচে থাকতে হবে। সেজন্যই আমরা শিক্ষার উপর জোর দিয়েছি।’
তিনি বলেন, যুগোপযোগী ও মানসম্পন্ন শিক্ষা ব্যবস্থা ছাড়া সুশিক্ষিত ও দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলা সম্ভব নয়। তাই শেখ হাসিনার সরকার সুশিক্ষিত ও দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার জন্য শিক্ষাকে দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রধান হাতিয়ার হিসেবে বিবেচনায় নিয়েছে। এজন্যে বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের বছর শুরুর দিনেই পাঠ্যপুস্তক বিতরণ, যুগোপযোগী ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে সিলেবাস প্রণয়ন, ছাত্র-ছাত্রীদের উপবৃত্তি প্রদান, দেশে ও বিদেশে ফেলোশীপ প্রদান, শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার, মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপন, শিক্ষক প্রশিক্ষণ, কারিগরি শিক্ষার প্রসার, মাদ্রাসা শিক্ষা আধুনিকায়ন প্রভৃতি কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, শিক্ষা নিয়ে বাণিজ্য করার পথ বন্ধ করা হচ্ছে। কোচিং বাণিজ্য বন্ধ করতে নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এসব পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব না হলে মেধার অসম প্রতিযোগিতা তৈরি হতো এবং সমাজের একটি বিরাট অংশ পিছিয়ে পড়তো। টেকসই উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হতো।
দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘তোমরা উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের ব্যাপারে কোন চিন্তা করবে না। তোমাদের উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার যুগান্তকারী বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। সরকার কেবল দরিদ্র শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য ‘প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট’ নামে একটি স্বতন্ত্র ট্রাস্ট চালু করেছে।
এছাড়া মেধাবী শিক্ষার্থীদের দেশে ও বিদেশে মাস্টার্স, এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের জন্য ‘প্রধানমন্ত্রী ফেলোশিপ’, ‘বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ ট্রাস্ট’ প্রদত্ত ফেলোশিপ, ‘জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ’, ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ফেলোশিপ’ চালু করেছে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বৃত্তি ও ফেলোশিপ প্রদান করছে।
ডাচ্-বাংলা ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান সায়েম আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম বক্তৃতা করেন।