‘ভাটির টানে বাইয়া চলি, ভাইটালি সুরে গাইয়া’
নজরুল ইসলাম তোফা
সৃষ্টিশীল যা কিছু দৃশ্যমান, তার সবকিছুই প্রবহমান। আর এই চলমানতাই যেন জীবনের বৈশিষ্ট্য। মানুষ একদিনেই কোনো কাজের সফলতা কিংবা দক্ষতা অর্জন করতে পারেনা। তাই তাদের ‘দক্ষতা’ লাভের পেছনেই রয়েছে দীর্ঘ দিনের অভ্যাস আর অনুশীলন। ‘পরিশ্রম এবং উদ্যম’ ছাড়া কোনো কাজে সফলতা লাভ করা যায় না। “বিজ্ঞানী নিউটন” বলেন, ”আমার আবিষ্কারের কারণ প্রতিভা নয়, বহু বছরের নিরবচ্ছিন্ন সাধনা ও পরিশ্রম।” তাই সাধারণ মানুষ পরিশ্রম আর সাধনা দ্বারা যুগেযুগেই আবহমান বাংলায় ‘সঙ্গীত’ সাধকরাই যেন ‘গানচর্চা’ করে আসছে। সঙ্গীতেই হয় জ্ঞান ও সঙ্গীতেই সাধক সম্প্রদায়ের ধ্যান। চৌষট্টি প্রকার কলা বিদ্যার মধ্যে সঙ্গীতের স্হান সবার শীর্ষেই রয়েছে। মানব জাতির পরিচিতি বহনেই সঙ্গীতের ”ভাষা বা কৃষ্টির” ওপরেই অনেক মানুষ নির্ভরশীল। সুতরাং বলতে চাই বাংলা লোক সঙ্গীতের শক্তিশালী একটি ‘ঐতিহ্যবাহী ধারা’ ভাটিয়ালি গান। এই ভাটিয়ালি গানের সুর ও কথার মধ্যে জাতির হৃদয়ের তলদেশে মনোমুগ্ধকর ভাবের সন্ধান পাওয়া যায়। এমন গানের অন্তর্মুখী আবেদন শ্রোতাকেই যেন ‘মনের গভীরে’ টেনে নিয়ে পারে। সু-সঙ্গীতে আধ্যাত্মিকতার সন্ধান অনেক যুগযুগ ধরেই ছিল এবং আজও আছে আগামীতেও থাকবে। দেশ ও জাতির সমৃদ্ধির জন্য নানা প্রকার সঙ্গীত শিল্পকে জাতীয় সংস্কৃতির গন্ডির আওতায় যথাযথ মূল্যায়ন করা দরকার।
জানা দরকার যে ‘ভাটি’ শব্দের উত্তর ভাবার্থে ‘আল’ প্রত্যয় যোগ করেই ”ভাটিয়াল”। অতঃপর ভাটিয়ালি শব্দ গঠিত হয়েছে। ভাটি অঞ্চলের গান বলেই তারা নাম পেয়েছে “ভাটিয়ালি”। এটিই সাধারণ মানুষদের বিশ্বাস। তারা বিশ্বাস করে ‘ভাটিয়ালি গান’ এদেশের ‘প্রাণের গভীরের গান বা চেতনার খোরাক’। সুতরাং, এই গানই তাদের শ্রেষ্ঠ সম্পদ। কিন্তু ডঃ রীনা দত্তের বক্তব্য একটু ভিন্ন মতামত। তিনি বলেন, গান গুলির বিচার করতে গেলে ভাটিয়ালি গান আসলেই ‘প্রবন্ধ যুগের গান’। এ প্রবন্ধ-সঙ্গীতে- ‘আলী’ নামক প্রবন্ধে নাকি উল্লেখ রয়েছে। তাই তো, ‘আলী’ প্রকরণটিকে আবার অলংকৃত প্রবন্ধের সঙ্গে মিশ্র রূপে, সাধারণ ভাট পর্যায়ের লোকেরাই যেন ব্যবহার করতো। তাই, ভাটিয়ালির মধ্যেই যেন “আলী” প্রকরণের প্রভাব বা ছায়া রয়েছে। তাঁর এ ভাবনা নেহাৎ অযৌক্তিক নয়। সুতরাং তাঁর মতেই প্রবন্ধ-সঙ্গীতের আলী প্রকরণের অন্তর্গত হলো- ভাটিয়ালি গান। তিনি আবার স্বীকার করেও নিলেছিল তবে আংশিক। তা হলো, ভাটমুখে ‘ভাটিয়ালি সঙ্গীত’ মূল গান হলেও পরবর্তীতে কালে নৌকার ‘মাঝি-মাল্লারা’ এমন গানেই যেন ইতিহাসের কালজয়ী সাক্ষী হয়ে বাংলার লোকসংস্কৃতির ধারক ও বাহক হয়েছে।
বাংলা লোকসঙ্গীতের এ ভাটিয়ালি গানকে নিয়ে যে যাই বলুক, এমন শিল্পের গুরুত্ব ও সৃজনশীলতাকেই অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। আসলে জোর দিয়ে বলতে পারি,- সব জাতির কাছেই “সঙ্গীতশিল্প” একটি গুরুত্বপূর্ণ ‘শিল্প মাধ্যম’। বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃষ্টি সাহিত্য তত্ত্বে সবধরনের গান সম্পর্কে বলেছে- ‘ইহকাল, মহাকাল, জীবন-তরী এবং ফসল কিংবা পরপারের সান্নিধ্য লাভেই সঙ্গীতের- ‘কথা ও সুরে’ আধ্যাত্মিকতা এবং নান্দনিক রূপ ফুটে উঠে’। সুতরাং বলতেই পারি, ভাটিয়ালি গানের সুরের দ্বারা প্রকৃত আধ্যাত্মিকতার ধ্যান-জ্ঞানের সহিত ‘সৌন্দর্য-মাধুর্যের উৎস’ নিহিত আছে। তাই ‘বিশ্বাসকেই মুখ্য’ করে সাধারণ মানুষের ‘সৃজনশীল ক্ষমতা’ কত উচ্চ ও উন্নত হতে পারে, তা এ ভাটিয়ালি গানেরই প্রমাণ মিলে। ভাব, ভাষা, সুর, ছন্দ, প্রকৃতি কিংবা পরিবেশ সমন্বয়েই এমন গানের একটি নিজস্ব ভূবন ও স্বতন্ত্র চরিত্র ফুটে উঠেছে। এইগানের প্রতিই আকর্ষণবোধ মানুষের চিরন্তনী স্বভাব। তাই বিজ্ঞান ভিক্তিক চিন্তা চেতনায় আজকের তরুণ গবেষকরা গবেষণায় ব্রত হয়ে এমন ভাটিয়ালি গানকে বলেছেন- বাংলা লোক সঙ্গীতের ধারা ভিত্তিক পরিচিতির মুখ্য কারণ, এমন গানের মধ্যেই রয়েছে- ”করুন সুর”। এর আরও মুখ্য ভাব- প্রেম, লৌকিক কিংবা আধ্যাত্মিক উভয় প্রেমে বিচ্ছেদ জনিত করুণ রস সঞ্চারিত হয় সব মানুষের আত্মায়। তারা ভাটিয়ালি গান গেয়ে বা শুনে পার্থিব ও অপার্থিব জীবনের আস্বাদন করে। সুতরাং, এমন গানের ‘ভাবের মাহাত্ম্য’ এবং কথা ও সুরের লালিত্য একেবারেই অনন্য।
নদীমাতৃক দেশ বাংলাদেশ। নদীর সঙ্গে নৌকা এবং নৌকার মাঝির যোগসূত্র অত্যন্ত নিবিড়। তাই, কোন্ অদৃশ্য সুরকার ও গায়ক গঙ্গা, যুমনা, মেঘনা, গড়াই, ধলেশ্বরী, শীতলক্ষ্যার মতোই কতো নামের নদ-নদী যে আছে। তাদের নিয়েই এমন সুরকার এবং গায়ক রূপালী তারে কোমল অঙ্গুলি স্পর্শ করে এই দেশের শাশ্বত কালের প্রানের গান ভাটিয়ালি সুর এবং কথা সৃষ্টি করেছে। জানা যায় যে, ভাটি অঞ্চলের মানুষরা নৌকা বেয়ে সুদূর শহরে বাণিজ্য করতে যেত। তারা বহুদিন পরিবার পরিজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পানির উপর ভাসে। তাদের সামনে থাকে সুদূর প্রসারী নদী পথ আর মাথার উপরে অনন্ত অসীম নীল আকাশ। দিগন্ত ব্যাপি এ নদীর শূন্যতার উপর নৌকার বাদাম উড়িয়ে একক ভাবেই ভাটিয়ালি গান গাইতো। এমন গানের সৃষ্টির শুরুতে যেন বাদ্য-যন্ত্রের ব্যবহার হতো না। ধীরে ধীরেই নানা লোকজ বাদ্যযন্ত্রেরও ব্যবহার হয়। দিগন্ত ব্যাপি টেউয়ের তালে তালে ভাবের উদয় ঘটিয়ে গানের কথা গুলো বানিয়ে বানিয়েই সুললিত কণ্ঠে গভীর আবেগে গাইতো। অবসরে রংবে-রঙের নৌকায় বসে মনের মধ্যে বহু জিজ্ঞাসার উত্তর উদয় করেই গান গাইতো। পূর্ব বাংলার এমন গানই- মুলত ভাটিয়ালি গান। পল্লী কবি জসীমউদ্দীন পূর্ববাংলার নৌকার মাঝি-মাল্লাদেরকেই- ‘ভাটিয়ালি গানের মুখ্য রূপকার’ হিসেবেই পরিগণিত করেছে। তবুও- জানা যায় যে, এমন ”ভাটিয়ালির নামকরণের অর্থ” নানান জনে নানা ভাবেই মন্তব্য দেয়ার চেষ্টা করেছে। কেউ বলে, নদীর ভাটির স্রোতের টানেই- ‘বিভিন্ন প্রকারের নৌকা’ ভাসিয়ে মাঝিগণ যে গান করতো, সেই গানই ‘ভাটিয়ালি’। আবার কেউ কেউ বলেছে, এই বাংলার ভাটি অঞ্চলের নৌকা-মাঝির গানই ভাটিয়ালি গান। যে যাই বলুক না কেন আশরাফ সিদ্দিকীর অভিমত হলো, নদনদীর ভাটি দিয়ে নৌকা বেয়ে যেতো, মাঝি মাল্লারা অবসর বা উদাস মনে সে নৌকায় যে গুলো গান গাইতো সেই গুলিই ভাটিয়ালি গান।
ভাটিয়ালি মুখ্যত পূর্ব বাংলার মাটি ও মানুষের গান।
ভাটিয়ালি গান বাংলাদেশের ভাটি অঞ্চলের অনেক জনপ্রিয় সঙ্গীত। বিশেষ করে ময়মনসিংহ অঞ্চলের ব্রহ্মপুত্র নদের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলগুলিতেই ভাটিয়ালি গানের মূল সৃষ্টি, চর্চাস্থল এবং সেখানে এমন গানের ব্যাপক প্রভাব আছে। এই ভাটি অঞ্চলের ভাটিয়ালি গানের দীর্ঘকালের ঐতিহ্য রয়েছে। এগানের ‘সুর ও কথা’ মন এবং জীবনের জন্যই যেন সৃষ্টি, যুগে যুগে এমন ভাটিয়ালি গানের শৈল্পিক ব্যবহার- আবহমান বাংলায় মানব জীবনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িত।
তাদের শ্রবণইন্দ্রিয়কে আকৃষ্ট করবার চেষ্টায় ভাটির টানে নৌকা ছেড়ে দিয়েই যেন- বিনা আয়াসে নৌকা চালাতে থাকে। আর এমন ‘অনায়াস’ এবং তজ্জাত ‘অবসর’ই ভাটিয়ালি রচনাগত উৎস বলা যায়। তাই তাদের স্বরচিত ভাটিয়ালি গানকে সারিগানের মতো বললেও ভুল হবে না। নদী, নৌকা বা মাঝি কেন্দ্রিক সারিগান। উভয় গানের ‘বিষয় বস্তু’ লৌকিক কিংবা আধ্যাত্মিক প্রেম, রাধাকৃষ্ণ লীলার মতো ধ্যান এবং জ্ঞানের চেতনায় মগ্ন হওয়ার মিল রয়েছে। তাই এই মিলটা শুধুমাত্র বাইরে, অভ্যন্তরে উভয় গানে বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। জানা যায়, সারি গান নৌকার মাঝি মাল্লাদের শ্রম-সঙ্গীত, আবার এমন “ভাটিয়ালি গান” নৌকার মাঝি-মাল্লাদেরই “শ্রম-হীন” অবসরের গান।
সুতরাং ভাটিয়ালি একটি নান্দনিক সুরের নাম এতে সন্দেহের অবকাশ নেই। এ ভাটিয়ালি গানের বিষয়, পটভূমি, পরিবেশ, রূপক-প্রতীক, সুর-লয় এবং শব্দ ভান্ডার ইত্যাদি থেকে দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে বলতেই পারি নদী ও নৌকার যুক্ত মাঝি-মাল্লার জীবনকেই আশ্রয় করে এ গানের উদ্ভব, বিকাশ ও প্রসার ঘটেছে।
বাংলাদেশে বহুল প্রচলিত এই ভাটিয়ালির সুর এবং তালের গান নামকরণেই যেন সার্থক। এপরিসংখ্যান প্রদানে মুখ্য উদ্দেশ্য, ভাটিয়ালি গানের যেমন উৎস-ভূমি আছে। তেমনি উদ্ভব কালও আছে। এই গানের যে ভাবের গভীরতা কিংবা সুরের মাধুর্য সত্যিই যেন অতুলনীয়। উদাসী ভাবের করুণ-বিষাদের সুর বলে তা মধুরতম আবেদন সৃষ্টি করে। আধ্যাত্মিক স্তরের গানগুলোতেও অধ্যাত্ম এবং দেহতত্ত্বের কথা রূপক প্রতিকের আশ্রয়েই পরোক্ষভাবে প্রকাশিত করেছে। ভবসংসারের যন্ত্রণা থেকে ‘মুক্তি’ বা ‘আল্লাহ্’, ‘দয়াল গুরু কিংবা মুর্শিদের চরণাশ্রয়’ কামনা করাটাই যেন ভাটিয়ালি গান জন্ম বা রচনার ক্ষণ। তাই- শুধুই যে, বাউল সংস্কৃতিতেই এমন ভাব ফুটে উঠেছে তা নয়।এদিক থেকে ‘বৈষ্ণব’, ‘সুফী’ বা ‘বাউল’দের ভাবনার সঙ্গে ভাটিয়ালির ‘এক শ্রেনীর গানের’ নিকট সম্পর্ক রয়েছে। আধুনিক ভাটিয়ালি লোক-সঙ্গীতে মরমিয়া চেতনার ধারাবাহিকতাও যেন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সুতরাং, আধুনিক ভাটিয়ালি সঙ্গীত অনেকাংশেই ‘বস্তুবমূখী’ চেতনায় সমৃদ্ধ হচ্ছে। নৌকার মাঝি অথবা নৌকায় নৌকায় ব্যবসারত সওদাগরের মনে লাভ-লোকসান এর হিসাব প্রাধান্য পায় ভাটিয়ালি গানে।
‘ভাটিয়ালি গান’ সঙ্গীতশাস্ত্রের একটি রাগিণীর নাম।শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যে ‘রাগ’ অর্থে একাধিক পদেই তা উল্লেখ আছে। বৈষ্ণব ও সুফীপদেও বহুস্হলে এমন ভাটিয়ালি রাগের ব্যবহার লক্ষ্যণীয়। ‘মঙ্গলকাব্য’ বা প্রণয়োপাখ্যানগুলিতেও এমন সুর এবং সুরে রচিত গীতের উল্লেখ রয়েছে। তাছাড়াও বলা যায়, ‘হলায়ুধ মিশ্র’ রচিত- সেক শুভোদয়া সংস্কৃত গ্রন্থে ‘ভাটিয়ালি রাগেন গীয়তে’ নামক এক ‘ছড়া-ধর্মী’ সঙ্গীতেও যেন উল্লেখযোগ্য ভাটিয়ালি গান। যতীন্দ্রমোহন ভট্টাচার্য রচিত বাঙ্গালার বৈষ্ণবভাবাপন্ন মুসলমান কবি গ্রন্থে নানা রাগ-রাগিণীর কথাও উল্লেখযোগ্য, তার মধ্যেই ৪৮টি শীর্ষে রয়েছে। এর মধ্যে এখনও দেশ-প্রচলিত ভাটিয়ালি গানের সহিত খুব ব্যবহার রাগ-রাগিণী তা হলো ‘ভাটিয়াল’, ‘করুণা-ভাটিয়াল’, ‘দুঃখ ভাটিয়াল’, ও নাগোধা ভাটিয়াল। বাংলাদেশে ভাটিয়ালি গানের শিল্পী, রচয়িতা, সংগ্রাহক এবং গীতিকারদের মধ্যেই অন্যতম। ‘জালালখাঁ’, ‘মিরাজ আলী’, ‘উকিল মুন্সী’, ‘জংবাহাদুর’, ‘রশিদ উদ্দিন’, ‘উমেদআলী’সহ বাউল সম্রাট ‘শাহ আবদুল করিম’ প্রমূখ। এইবাংলার গান, প্রাণের গান, মনের গান, জীবনের গান, প্রেমের গান, ভালোবাসার গান ভাটিয়ালি গান। জীবনের চাওয়া, পাওয়া, না পাওয়া, আনন্দ কিংবা দুঃখ ভাগা-ভাগিই হলো ভাটিয়ালি গান। জীবনের পরতে পরতেই যেন মিশে আছে বাঙ্গালী ঐতিহ্যবাহী লোকসঙ্গীতের এই ভাটিয়ালি গান।…
“আমি যে গহীন গাঙের নাইয়া।
সাঁঝের বেলায় নাও বাইয়া যাই,
আপন মনে চাইয়া।
ভাটির টানে বাইয়া চলি, ভাইটালি সুরে গাইয়া”।
লেখক: নজরুল ইসলাম তোফা, টিভি ও মঞ্চ অভিনেতা, চিত্রশিল্পী, সাংবাদিক, কলামিস্ট এবং প্রভাষক।