হানিমুনে গিয়ে পুলিশের হাতে আটক অস্ট্রেলিয়ার ফুটবলার
২০ বছর বয়সে পাঁচবছর আগে স্বপ্ন নিয়ে দেশ ছেড়েছিলেন বাহরাইনের তরুণ ফুটবলার হাকিম আল আরাইবি। অষ্ট্রেলিয়ায় আসার পর আরও আঁকড়ে ধরলেন নিজের প্রথম ভালোবাসাকে। পিঠে শরণার্থী তকমা নিয়েই এল সাফল্য। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম সারির ক্লাবে জায়গা করে নিলেন অচিরেই। জীবনে এল ভালোবাসাও। এখন ২৫ বছর বয়সী এই ফুটবলার বিয়েও করলেন পছন্দের মানুষকে। ঠিক করলেন মধুচন্দ্রিমায় যাবেন থাইল্যান্ড। সেই মধুচন্দ্রিমাই যে পরিণত হবে তিক্ত অভিজ্ঞতায়, তা বোধ হয় স্বপ্নেও ভাবেননি হাকিম। ২০১১ সালের কৃতকর্মের ফলস্বরূপ ইন্টারপোলের জালে পড়লেন তিনি। থাইল্যান্ড বিমানবন্দরে নামতেই তাঁকে গ্রেফতার করল ইন্টারপোল।
বাহরিন সরকারের অভিযোগ, ২০১১ সালে আরব স্প্রিং প্রোটেস্টে হিংসা ছড়ানোয় প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত ছিলেন হাকিম। ২০১৪ সালে এর বিচার হওয়ার পর হাকিমের বিরূদ্ধে ১০ বছরের কারাদন্ডের সাজা ঘোষণা করা হয়। সাজা এড়াতে বাহারিন ছেড়ে অস্ট্রেলীয়ায় পালায় বছর কুড়ির ফুটবলার। বাহারিনের খাতায় তিনি একজন পলাতক দাগি আসামী। সূত্রের খবর, ৮ই নভেম্বর থাই ভিসা পাওয়ার দিনই বাহরিন সরকার ইন্টারপোলের রেড নোটিস জারি করে। সস্ত্রীক হাকিম বিমানে মেলবোর্ন থেকে ব্যাংককের উদ্দেশে রওনা হতেই সজাগ হয়ে যায় বাহরাইন ও থাই ইন্টারপোল।
ব্যাংককের অষ্ট্রেলীয় দূতাবাসের বয়ান অনুযায়ী, হাকিমের সংরক্ষিত শরনার্থী তকমার ব্যাপারে প্রাথমিক পর্যায় জানতই না তারা। জানার সঙ্গে সঙ্গেই তিনদিনের মাথায় প্রত্যাহার করে নেওয়া হয় রেড নোটিস । কিন্তু ততক্ষণে দেরি হয়ে গিয়েছে। হাকিমকে বাগে আনতে থাইল্যান্ড সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে ফেলে বাহরিন সরকার। খালি পায়ে শিকল বাঁধা অবস্থায় থাই কোর্টে এক সপ্তাহ পর হাজির করা হয় হাকিমকে। গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র সমালোচনার ঝড় ওঠে আন্তর্জাতিক স্তরে। নিন্দায় সরব হয় ফুটবল জগত থেকে মানবাধিকার কর্মীরা। চাপে পড়ে তুলে নিতে বাধ্য হয় বাহরিন সরকার। আপাতত মেলবোর্নে ফিরে এসেছেন হাকিম। “অষ্ট্রেলীয় নাগরিকত্ব না পাওয়া অবধি যাব না কোথাও”, বললেন তিনি। মধুচন্দ্রিমার প্ল্যান এখনকার মতো মলতুবিই রাখছেন এই ফুটবলার।