গণশুনানির নামে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ষড়যন্ত্র চলছে : আইনমন্ত্রী
ঢাকা, লিগ্যাল ডেস্ক : আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন, গণশুনানির নামে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ষড়যন্ত্র চলছে।
তিনি বলেন, ‘জনগণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে রয়েছে, উনাদের (জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট) সঙ্গে নেই। উনাদের সঙ্গে জনগণ নেই বলেই অডিটরিয়ামে বসে তাদের শুনানি করতে হয়।’
শনিবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে বাংলাদেশ আইনজীবী সহকারী সমিতি কর্তৃক আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সমিতির সভাপতি মো. মোহাম্মদ নূর মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে রেলপথ মন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, ঢাকা কোর্ট আইনজীবী সহকারি সমিতির সভাপতি মো. আবদুল হান্নান, সাধারণ সম্পাদক মো. খোরশেদ আলম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে গত ২২ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আয়োজিত গণশুনানির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনে পরাজিত হয়ে তারা এখন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে ‘অডিটরিয়াম শুনানি’ করছেন। তারা বলছেন, এখানে (গত ৩০ ডিসেম্বর) নাকি নির্বাচন হয়নি। তাদের ওই অনুষ্ঠানে একজনও জনগণ নেই। তারা ঘুমিয়েছেন এখানে বসে। তারপরও উনারা বলছেন, উনারা নাকি এখানে (সমিতির অডিটরিয়ামে) গণশুনানি করেছেন। জনগণ তো শেখ হাসিনার সাথে, উনাদের সাথে তো নেই। উনাদের সঙ্গে জনগণ নেই বলেই তাদের অডিটরিয়ামে বসে শুনানি করতে হয়। শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে গণশুনানি করেছিলেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। আর এখানেই হলো শেখ হাসিনার সঙ্গে তাদের পার্থক্য।’
আইনমন্ত্রী সকলকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘ষড়যন্ত্র কিন্তু শেষ হয়নি। এই যে ঘুমানো চক্র (জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট) দেখছেন, তারা কিন্তু একটি জিনিসই পারেন। আর তা হলো ষড়যন্ত্র করা।’
আনিসুল হক বলেন, ‘১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বেগম খালেদা জিয়া ভোটারবিহীন একটি নির্বাচন করেছিলেন। ভোটারবিহীন নির্বাচন হয়েছিলো বলেই একমাসের আন্দোলনের মাথায়, দেড় মাসের মধ্যে খালেদা জিয়াকে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হয়েছিলো। উনারা বলেন, ২০১৪ সালে নির্বাচন হয়নি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে পাঁচ বছর এইদেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে সরকারের দায়িত্ব পালন করেছেন। সেই পাঁচ বছর জনগণ উপকৃত হয়েছে। তাই আন্দোলন হয়নি। কিন্তু ২০১৪ সালে খালেদা জিয়া আন্দোলনের চেষ্টা করে অগ্নি সন্ত্রাস করেছেন। জনগণ কিন্তু তার সঙ্গে সায় দেয়নি। আবার তারা ২০১৮ সালে নির্বাচন করেছেন। নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন।’
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যার নেপথ্যে কারা ছিল তাদের চিহ্নিত করার জন্য একটি কমিশন দরকার। আজকে তাদের চেহারা ধীরে ধীরে উন্মোচিত হচ্ছে। আমরা সেই কমিশনও জনগণকে উপহার দেব, যেন ইতিহাস ঠিকভাবে লিখিত হয়। আর বিকৃত ইতিহাস যেন আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে না পড়তে হয়।’
তিনি আইনজীবীদের সহকারীদের জন্য পৃথক আইন প্রণয়নের বিষয়ে সকলকে আশ্বস্থ করেন।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে সারা বিশ্বে পরিচিত করেছেন। তিনি একটি ভিশন নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের দেশ হবে বাংলাদেশ, সেই দ্বারপ্রান্তে আমরা পৌঁছে গেছি। ২০৪১ সালে উন্নত দেশ হিসেবে সারা বিশ্বে পরিচিত হবে বাংলাদেশ।’
আইনমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া এবং ড. কামাল হোসেনরা বাংলাদেশকে পাকিস্তানের পেছনে রাখতে চায়। আর সেই বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সারাবিশ্বের সেরা পঞ্চাশটি দেশের মধ্যে একটা। এত বাধা সত্ত্বেও বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল হয়ে মাথা উঁচু করে রয়েছে।’
তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।