প্রধানমন্ত্রী দেশের দুখী খেটে খাওয়া মানুষের বিস্বস্ত ঠিকানা
সংসদ প্রতিনিধি
সংসদ ভবন : রাষ্ট্রপতির ভাষণের জন্য আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের সদস্যরা রাষ্ট্রপতির ভাষণকে দেশের উন্নয়নের দলিল উল্লেখ করে বলেছেন, ১০ বছরে উন্নয়ন আর জনকল্যাণের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী প্রমাণ করেছেন তিনি দুঃখী খেটে-খাওয়া মানুষের বিশ্বস্ত ঠিকানা।
গত ৩ ফেব্রুয়ারি সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণে আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর এ আলোচনা শুরু হয়। ওই দিন চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাব উত্থাপন করলে সরকারি দলের সদস্য আ. স. ম ফিরোজ তা সমর্থন করেন।
গত ৩০ জানুয়ারি একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম ও বছরের প্রথম অধিবেশনের শুরুর দিন সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ সংসদে ভাষণ দেন।
রাষ্ট্রপতির ভ.ষণে আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আজ ১৫তম দিনে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, সরকারি দলের মৃনাল কান্তি দাস, কাজী কেরামত আলী, নেছার আহমদ, আফতাব উদ্দিন সরকার, মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান, গাজী মো. শাহনওয়াজ, আরমা দত্ত ও জাতীয় পার্টির মো. মুজিবুল হক আলোচনায় অংশ নেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে যে ঐতিহাসিক বিজয় উপহার দিয়েছে তা একমাত্র ১৯৭০’র নির্বাচনের সাথে তুলনীয়। নির্বাচন নিয়ে বিএনপিসহ বিভিন্ন মহলের বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, বিএনপি এ নির্বাচনে নামমাত্র অংশ নিয়েছে। তারা নির্বাচনে কোনো মানুষের কাছে যায়নি। বরং তারা এ নির্বাচন নিয়ে মনোনয়ন বাণিজ্য করেছে। বিএনপি নেতা তারেক জিয়া লন্ডনে বসে এ বাণিজ্য করেছে। এ জন্যই জনগণ ভোট দেয়নি।
ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, আগামী পাঁচ বছরে সরকার জবাবদিহিমূলক সুশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করবে। বাংলাদেশ হবে উন্নত-সমৃদ্ধশালী একটি দেশ।
মির্জাফর খন্দকার মোস্তাক ও জিয়া বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে এদেশকে কয়েকশ’ বছর পিছিয়ে দিয়েছে। মোস্তাক ক্ষমতা গ্রহণের পর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ওপর অকথ্য নির্যাতন করেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের তাদের আদর্শ থেকে বিচ্যুত করতে পারেনি, আর কখনো পারবেও না।
আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের অন্য সদস্যরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশের দুঃখী মানুষের বিশ্বস্ত ঠিকানা উল্লেখ করে বলেন, তাঁর সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। তাঁর নেতৃত্বে আজ দেশ খাদ্যে, বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন খাতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। দেশের মাথাপিছু আয় বর্তমানে ১ হাজার ৭৫২ ডলার, জাতীয় প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৮ শতাংশ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪ বিলিয়ন ডলার, রপ্তানি আয় ৩৬ দশমিক ৬০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
তারা বলেন, বর্তমান সরকার আগামী প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ বাংলাদেশ নিশ্চিত করতে পদ্মাসেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, রামপাল, মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্র, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলী টানেলসহ অনেক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এসব বাস্তবায়নের মাধ্যমে ঘোষিত সময়ের মধ্যে দেশ উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে।
তারা দেশের নদীসমূহ দখলের হাত থেকে রক্ষা করতে বর্তমানে পরিচালিত উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান। তারা বলেন, কোন দল ব্যক্তি দেখা যাবে না। অবৈধ হলেই তা উচ্ছেদ করতে হবে।
বিরোধী দলের সদস্য মুজিবুল হক বলেন, রাষ্ট্রপতির ভাষণটি একপেশে, তিনি তাঁর ভাষণে সরকারের উন্নয়নের কথাই বলেছেন। তিনি দেশের মানুষের বিভিন্ন সমস্যা এড়িয়ে গিয়েছেন। তাঁর বক্তব্যে মানুষের দুর্ভোগ নিরসনের দিক-নির্দেশনা থাকলে ভাষণটি পূর্ণাঙ্গ হতো।
তিনি তার বক্তব্যে রাজধানী ঢাকায় গণপরিবহনের অব্যবস্থাপনা ও অপ্রতুলতার কথা তুলে ধরে বলেন, ফিটনেসবিহীন বাসগুলোকে রাজধানীর বাইরে পাঠাতে হবে। নতুন বাস সংগ্রহে প্রয়োজনে সরকারকে ভর্তুকি দিতে হবে।
ঋণ খেলাপীর কথা উল্লেখ করে তিনি এ ব্যাপারে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। আর অর্থপাচার বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থাসহ পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনতে হবে।