বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে মুদ্রানীতি ঘোষণা

বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ ধরে আগামী ছয়মাসের জন্য মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে কেন্দ্রিয় ব্যাংক। অন্যদিকে সরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ১০ দশমিক ৯ শতাংশ ধরা হয়েছে। এর আগের মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ এবং সরকারি খাতে ছিল ৮ দশমিক ৫ শতাংশ।
প্রথমার্ধের মুদ্রানীতি ও আর্থিনীতির সামগ্রিক সফলতার প্রেক্ষাপটে চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতিতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রায় কিছুটা সংশোধন ছাড়া বড় কোন পরিবর্তন আনা হয়নি।
বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে দ্বিতীয়ার্ধের (জানুয়ারি-জুন) মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন গভর্নর ফজলে কবির।
এ সময় ডেপুটি গভর্নর এস এম মনিরুজ্জামান,বাংলাদেশ ব্যাংকের চেইঞ্জ ম্যানেজমেন্ট পরামর্শক আল্লা মালিক কাজমী,বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান আবু হেনা মোহাম্মদ রাজি হাসান, ব্যাংকিং রিফর্ম অ্যাডভাইজার এস. কে. সুর চৌধুরী,অর্থনৈতিক উপদেষ্টা মো.আখতারুজ্জামানসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
গভর্নর ফজলে কবির বলেন,প্রথমার্ধের মুদ্রানীতিও আর্থিকনীতির সামগ্রিক সফলতার কারণে দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতিতে বড় কোন পরিবর্তন আনা হয়নি। তবে প্রথমার্ধের ঋণ প্রবৃদ্ধির গতিধারা বিবেচনায় নিয়ে সরকারি ও বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি আগেকার ৮ দশমিক ৫ শতাংশ এবং ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে কিছুটা সংশোধন করে যথাক্রমে ১০ দশমিক ৯ শতাংশ এবং ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়েছে।
তিনি বলেন,কর্পোরেট খাতের অত্যধিক ব্যাংকনির্ভর মিয়াদি অর্থায়ন ক্রমশ মূলধন বাজারে বন্ড ইস্যু করে অর্থায়নের দিকে মোড় ঘোরাবার চলমান প্রয়াসের পাশাপাশি ক্ষুদ্র ও মাঝারী উদ্যোগের মেয়াদি অর্থায়ন আহরণের সরলতর বিধিবিধান প্রণয়ন ও প্রবর্তন এখন সময়োচিত হবে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশ ইতোমধ্যে এ বিষয়ে বিধিব্যবস্থা প্রচলন করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
নতুন মুদ্রানীতিতে রেপো ও রিভার্স রেপো সুদ হার প্রথমার্ধের ন্যায় ৬ ও ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। আর ব্যাপক মুদ্রা সরবরাহ প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ১২ শতাংশ।
প্রসঙ্গত,মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও কাঙ্খিত প্রবৃদ্ধি অর্জনের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে কেন্দ্রিয় ব্যাংক প্রতিবছর দুইবার মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও প্রকাশ করে থাকে। ছয় মাস অন্তর এই মুদ্রানীতি একটি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে অর্থাৎ জুলাই মাসে এবং অন্যটি জানুয়ারি মাসে। দেশের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় মুদ্রানীতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে পরবর্তী ছয় মাসে অভ্যন্তরীণ ঋণ, মুদ্রা সরবরাহ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ,বৈদেশিক সম্পদ কতটুকু বাড়বে বা কমবে এর একটি পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *