ভিটে মাটি ফেলে আসা রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারকে ফেরত নিতে হবে : পরিকল্পনা মন্ত্রী

ঢাকা : পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, রাখাইনে ভিটে-মাটি ফেলে আসা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠিকে অবশ্যই মিয়ানমারকে পূর্ণাঙ্গ নাগরিক অধিকার দিয়ে ফিরিয়ে নিতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ অত্যন্ত ধৈর্য্য ও সহিষ্ণুতার সাথে রোহিঙ্গা সমস্যা মোকাবেলা করে আসছে। শেখ হাসিনার সফল কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় বিষয়টি আজ বিশ্ব বিবেককে ব্যাপকভাবে নাড়া দিয়েছে। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক নানান প্রতিকূলতা সত্ত্বেও মানবতাবোধ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে।
মন্ত্রী আজ বিকেলে কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনীয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিইবি) আয়োজিত রোহিঙ্গা সমস্যা-বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
মান্নান বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যার ন্যায় জটিল বিষয়টি বাংলাদেশের পক্ষে একা সমাধান দেয়া সম্ভব নয়। মন্ত্রী এ সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বাংলাদেশের পাশে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। শুধুমাত্র ক্ষতিপূরণ দিয়ে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব নয় বলে মন্ত্রী অভিমত ব্যক্ত করেন।
আইডিইবি’র সভাপতি এ কে এম এ হামিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মাঝে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের সভাপতি ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহম্মদ, মোয়াজ্জেম হোসেন রতন এমপি, আইএমও’র প্রতিনিধি জজ জিগারি, ইউএনডিপি’র আবাসিক প্রতিনিধি মিসেস হাইকা, এআইজি মিসেস নাসরিন প্রমুখ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইডিইবি’র সাধারণ সম্পাদক মো. শামসুর রহমান।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সুইনবার্ন ইউনিভার্সিটি, অস্ট্রেলিয়ার বিজনেস এন্ড ল’ ফ্যাকাল্টির প্রফেসর ক্রিস্টিন জব ও আন্তর্জাতিক বিজনেস প্রোগ্রামের পরিচালক ড. মহসীন হাবিব।
কাজী খলীকুজ্জামান আহম্মদ বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যু বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ও পরিবেশগত সমস্যা সৃষ্টি করেছে। এ সমস্যা মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে যে পরিমাণ সাহায্য সহযোগিতা প্রয়োজন ছিল, তা পাওয়া যায়নি।
জজ জিগারি বলেন, রোহিঙ্গাদের স্বদেশে প্রত্যাবাসন ও পুনর্বাসন নয়, তাদের মানসিক ও সামাজিকভাবে যে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে, তা দূর করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মায়ানমার সরকারের উপর চাপ প্রয়োগ করতে হবে।
মূল প্রবন্ধে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির উপর যে অমানুসিক নির্যাতন, নিপীড়ন ও ক্ষয়ক্ষতি করেছে তার একটি ধারণা চিত্র উপস্থাপন করে প্রায় ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষয়ক্ষতির হিসাব তুলে ধরা হয়। এছাড়া মানসিক নিপীড়নের ক্ষতি অপূরণীয় বলে উল্লেখ করা হয়। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠিকে পূর্ণাঙ্গ নাগরিক অধিকার ফিরে দিয়ে স্বদেশ প্রত্যাবাসন ও পুনর্বাসনসহ ক্ষয়ক্ষতি অর্থ আদায়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অধিকতর সোচ্চার হবার আহ্বান জানানো হয়।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *