শতকোটি ডলারের ফ্যাশন স্টার্টআপ বাঙালি মেয়ে!

বাংলাদেশী টাকায় ২৫ লাখ টাকার মতো (৩০ হাজার মার্কিন ডলার) পুঁজি নিয়ে সঙ্গে আরেকজন অংশীদার নিয়ে ব্যবসায় নেমেছিলেন বাঙালি তরুণী অঙ্কিতা বসু। ব্যবসা শুরু করেছিলেন ২৩ বছর বয়সে। এখন তার বয়স ২৭। এরই মধ্যে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকার মালিক (১০০ কোটি মার্কিন ডলার) হয়ে গেছেন!

অবাস্তব মনে হলেও এটাই সত্য। ভারতীয় বংশোদ্ভূত অঙ্কিতা বসু একজন বিশ্লেষক হিসেবে কাজ করতেন ভারতের একটি কোম্পানি সিকুইয়া ইন্ডিয়ায়। ভারতের প্রযুক্তি রাজধানী বেঙ্গালুরুর কোনো এক হাউজ পার্টিতে এক প্রতিবেশীর সঙ্গে আলাপে ওই উদ্যোগের আইডিয়া পান তিনি।

যখন উদ্যোগটির কথা মাথায় আসে, তখন অঙ্কিতার বয়স ২৩ এবং অন্য বন্ধু ধ্রুব কাপুরের বয়স ২৪। ধ্রুব কাপুর তখন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করতেন গেমিং স্টুডিও কিউয়ি ইনকরপোরেশনে। দ্রুতই তারা আবিষ্কার করেন, দুজনের মধ্যেই পারস্পরিক সহযোগিতামূলক দক্ষতা এবং নিজেদের স্টার্টআপ চালুর উচ্চাশা রয়েছে।

চার মাস পর তারা চাকরি ছেড়ে দেন। প্রত্যেকেই নিজেদের সঞ্চয় থেকে ৩০ হাজার ডলার করে দেন। প্রতিষ্ঠিত হয় অনলাইন প্লাটফর্ম জাইলিঙ্গো, যা দক্ষিণ এশিয়ার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের একটি অনলাইন প্লাটফর্ম।

গতকাল সিঙ্গাপুরভিত্তিক কোম্পানিটি জানায়, তারা সিকুইয়া ক্যাপিটাল ও তেমাসেক হোল্ডিংস প্রাইভেট লিমিটেডের মতো বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ২২ কোটি ৬০ লাখ ডলার সংগ্রহ করেছে। সর্বশেষ অর্থায়নের ফলে জাইলিঙ্গোর বাজারমূল্য দাঁড়াবে ৯৭ কোটি ডলার। বিষয়টির সংবেদনশীলতার কারণে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিষয়সংশ্লিষ্ট কয়েকটি সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির বাজারমূল্য এমনটা দাঁড়ালে অঙ্কিতি বসু হবেন এশিয়ায় এত বড় কোম্পানির সবচেয়ে কম বয়সী নারী সিইও। ধ্রুব কাপুর কোম্পানিটির প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন।

বিশ্বব্যাপীই নারী প্রতিষ্ঠাতার সংখ্যা খুব কম। ভেঞ্চার ক্যাপিটাল সহযোগিতাপুষ্ট অন্তত শতকোটি ডলার বা তার চেয়ে বেশি মূল্যের ২৩৯টি কোম্পানির মধ্যে মাত্র ২৩টির প্রতিষ্ঠাতা নারী। গত বছরের মে মাসে পিচবুকের প্রাপ্ত উপাত্তে এ তথ্য উঠে এসেছে। অঙ্কিতি বলেন, আমরা মাত্র ২০ জনের একটি দল, যারা তাদের স্বপ্নের বাস্তব রূপ দেয়া ছাড়া আর কিছু ভাবছে না।

অঙ্কিতিদের ব্যবসা সম্প্রসারণের পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় স্মার্টফোন ব্যবহারের বিস্তৃতি। গুগল ও তেমাসেকের বরাতে জানা গেছে, এ অঞ্চলে ২০১৮ সালে অনলাইন শপিং দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের। আশা করা হচ্ছে, ২০২৫ সাল নাগাদ অনলাইন শপিংয়ের আকার গিয়ে দাঁড়াবে ১০ হাজার কোটি ডলারে।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *