অবৈধ সম্পদের মামলায় মওদুদের বিরুদ্ধে দুই ব্যাংক কর্মকর্তা সাক্ষ্য

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের বিরুদ্ধে সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় দুই ব্যাংক কর্মকর্তার সাক্ষ্য প্রদান শেষ হয়েছে। সাক্ষীরা হলেন- এবি ব্যাংকের ইসলামপুর শাখার ম্যানেজার সাইফুল ইসলাম খান এবং ইস্টার্ণ ব্যাংক মতিঝিল শাখার সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার মতিউর রহমান।

রোববার ঢাকার ছয় নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. শেখ গোলাম মাহবুব উল্লেখিত দুই সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। এদিন সাক্ষী মতিউর রহমানের জবানবন্দী শেষে জেরা সম্পন্ন হলেও অপর সাক্ষী সাইফুল ইসলাম খানের জবানবন্দী শেষে আংশিক জেরা শেষ হয়েছে।

পরে বিচারক আগামী ৪ মার্চ সাক্ষী সাইফুলের অবশিষ্ট জেরা এবং অপর সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেন। এ নিয়ে মামলাটিতে ৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হলো। মামলাটিতে ২০১৭ সালের ২১ জুন আদালত বিএনপির এ নেতার বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন।

মামলাটি তদন্ত শেষে ২০০৮ সালের ১৫ মে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহীম । এ মামলা বাতিলের জন্য মওদুদ আহমেদ উচ্চ আদালতে আবেদন করায় দীর্ঘদিন নিম্ন আদালতে বিচার কার্যক্রম স্থগিত ছিল। ২০০৭ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর দুদক এ মামলা দায়ের করে।

মামলার চার্জশিটে এ আসামির বিরুদ্ধে ৪ কোটি ৫০ লাখ ১৮ হাজার ৫৭৩ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও ৯ কোটি ৪ লাখ ৩৭ হাজার ২৩৩ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ করা হয়েছে।

দুদকের তদন্ত অনুয়ায়ী মওদুদ আহমদের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমান প্রায় ১৮ কোটি টাকার সমপরিমাণ। এর মধ্যে ৯ কোটি ৪ লাখ ৩৭ হাজার ২৩৩ টাকার সম্পদের সঙ্গে তার বৈধ আয়ের কোনো সঙ্গতি নেই। এই সম্পদ অবৈধ ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত।

এছাড়া দুদকে দাখিল করা সম্পদের হিসাবে তিনি ৪ কোটি ৫০ লাখ ১৮ হাজার ৫৭৩ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেন। দুদকের নোটিসের জবাবে তিনি প্রায় ১৩ কোটি টাকার সম্পদের হিসাব দিয়েছিলেন।

মওদুদ আহমদের সম্পদের মধ্যে ওরিয়েন্টাল ব্যাংকের কাওরান বাজার শাখায় ৮০ লাখ টাকা, আইএফআইসি ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় নিজের স্বাক্ষরে ১৯টি বেনামে একাউণ্টে ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা এবং ইস্টার্ন ব্যাংকের দিলকুশা শাখায় ৮টি যৌথ হিসাবে ৬৬ লাখ টাকার এফডিআর আছে। এছাড়া স্টান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংক ও আরব বাংলাদেশ ব্যাংকের নওয়াবপুর শাখাতে তার নামে অর্থ জমা আছে। তার নামে আমেরিকা ও লন্ডনে ২টি বাড়ি আছে। ২০০০ সালের আগে-পরে তিনি এই বাড়ি ২টি নিজের নামে কিনলেও পরবর্তী সময়ে মেয়ের নামে দিয়ে দেন। বাড়ি ২টির মূল্য ১ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলারের সমপরিমান মুদ্রা। টাস্কফোর্স ও দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে মওদুদ এই বাড়ির কথা স্বীকার করেন। গুলশান ২ নম্বরে কয়েক কোটি টাকা মূল্যের ২৬শ ও ৩ হাজার বর্গফুটের ২টি ফ্লাট, ১০ কাঠা জমিতে ৫ তলা বাড়ি আছে। গ্রামের বাড়িতে ৩০ লাখ টাকা মূল্যের একটি বিশাল বাংলো আছে। সাভারে ইপিজেডের উল্টোদিকে ৩ একর ও টংগির পাগারে ১ একর জমি আছে।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *